বিদেশে এখন
0

আহত কুকুর-বিড়ালকে আশ্রয়-সেবা দেয়াই যার কাজ

রাস্তা থেকে ৪ শতাধিক আহত কুকুর-বিড়াল কুড়িয়ে এনে নিজ বাড়িতে আশ্রয় দিয়ে মানবিকতার অনন্য নজির তৈরি করেছেন তিউনিশিয়ার নারী হুদা বাউছাদা। স্থায়ী কোন চাকরি না থাকলেও বিভিন্ন জায়গা থেকে আর্থিক সাহায্য সংগ্রহ করে চালাচ্ছেন এসব প্রাণীদের খাবার ও চিকিৎসা খরচ। এর জন্য পরিবার ও স্বজনদের কটু কথা শুনলেও থেমে থাকেননি ৪২ বছর বয়সী এই নারী।

ব্যক্তি জীবনের শখ আহ্লাদ ভুলে প্রাণীর সেবায় উৎসর্গ করেছেন নিজেকে। দিনের পুরোটা সময় কাটাচ্ছেন কয়েকশ' আহত বিড়াল ও কুকুরের সেবায়। এরাই যেন তার বাঁচার অবলম্বন।

নিজের বাড়িতেই প্রায় ৪শ' বিড়াল ও ২২টি কুকুরকে আশ্রয় দিয়েছেন তিনি। প্রায় এক দশকের বেশি সময় ধরে বিভিন্ন জায়গা থেকে এদেরকে আহত অবস্থায় তুলে এনেছেন। চিকিৎসা ও যত্ন পেয়ে এদের বেশিরভাগই এখন সুস্থ।

প্রায় ৪শ' বিড়াল ও ২২টি কুকুরের আশ্রয়। ছবি: সংগৃহীত

হুদা বাউছাদা বলেন, 'ওরা আমাকে মায়ের মতো দেখে। আমিই ওদের মা। সম্পর্কটা ঠিক মায়ের ভালোবাসার মতোই। এমনকি ওরাও আমার কষ্ট সহ্য করতে পারে না।'

তিউনিশিয়ান এই নারীর নেই কোন স্থায়ী আয়ের ব্যবস্থা। এরপরও বিভিন্ন অ্যাসোসিয়েশন, ব্যক্তি সহায়তায় তার পোষা বিড়াল ও কুকুরের খরচ চালিয়ে নিচ্ছেন তিনি।

তিনি বলেন, 'ওরা রাস্তায় যেসব সুবিধা না পেয়ে অসুস্থ হয়েছে, চেষ্টা করছি সর্বোচ্চ দিয়ে সেই চাহিদাগুলো পূরণ করার। সকাল ও রাতের খাবার, গরম কাপড়, পরিষ্কার পানি দিচ্ছি সবসময়। চাকরি নেই আমার। তবুও আমি ওদের সেবা করে যাচ্ছি।'

চিকিৎসা ও যত্ন। ছবি: সংগৃহীত

এরপরও এই প্রাণী প্রেমীর আক্ষেপ-যদি তার কাছে পর্যাপ্ত অর্থ থাকতো আরও উন্নত জীবন দেয়া যেতো অসহায় এসব প্রাণীকে।

তিনি বলেন, 'আমি যতই ওদের সেবা করি, মনে হয় এটা যথেষ্ট নয়। একা এতোগুলো কুকুর-বিড়ালের যত্ন নেয়া কষ্টকর। ক্লান্ত হয়ে যাই। যদি পর্যাপ্ত টাকা থাকতো তাহলে আমাকে সহায়তা করার জন্য লোক রাখা যেত।'

হুদার প্রাণী সেবার এই পথ বেছে নেয়ার সিদ্ধান্ত এতো সহজ ছিলো না। সহ্য করতে হয়েছে পরিবার ও স্বজনদের সমালোচনা। এতকিছুর পরও তিউনিশিয়ার সব বিড়াল রক্ষাই তার জীবনের একমাত্র লক্ষ্য বলে জানান হুদা বাউছাদা।


ইএ