প্রাকৃতিক পরিবেশ রক্ষার মাইলফলক এক বিলে সবুজ সংকেত দিয়েছে ইইউ। কর সুবিধা, ন্যায্য মূল্য ও উৎপাদন খরচ কমানোসহ পরিবেশ রক্ষার নামে সরকারের বিভিন্ন নীতির বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করছেন ইউরোপের কৃষকরা। এদিকে বিলটির পক্ষে ৩২৯টি, বিপক্ষে ২৭৫টি ভোট পড়েছে এবং ভোটদানে বিরত ছিলেন ২৪ জন আইনপ্রণেতা।
প্রাকৃতিক পরিবেশ পুনরুদ্ধারের নতুন আইন অনুযায়ী, ২০৩০ সালের মধ্যে ইইউ’র সদস্য দেশগুলোর স্থল ও সমুদ্র অঞ্চলের জীববৈচিত্র্য কমপক্ষে ২০ শতাংশ পুনরুদ্ধার করা হবে। ২০৫০ সালের মধ্যে প্রয়োজনীয় পুরো ইকোসিস্টেম পুনরুদ্ধার করা হবে। এতে ইউরোপের জলবায়ু ও জীববৈচিত্র্য রক্ষার লক্ষ্য অর্জন হবে এবং খাদ্য নিরাপত্তা বাড়াবে।
জীববৈচিত্র্য পুনরুদ্ধার আইনের সংবাদদাতা সিজার লুয়েনা বলেন, এটি একটি ঐতিহাসিক পদক্ষেপ। ইউরোপের সুরক্ষায় এমন পরিবেশ নীতি থাকা জরুরি। যা পুরো ইউরোপের জন্য সত্যিকারের অগ্রগতি। আইনটি ২০৩০ সালের মধ্যেই বাস্তবায়িত হবে বলে আশা তার।
আগামী ৬ বছরের মধ্যে সদস্য রাষ্ট্রগুলোর বন, তৃণভূমি, জলাভূমি, নদী, হ্রদ ও প্রবালের কমপক্ষে ৩০ শতাংশ পুনরুদ্ধার করা হবে। ২৭ হাজারের বেশি এলাকাকে সংরক্ষিত ঘোষণা করেছে ইইউ। নতুন আইনে এসব এলাকা রক্ষায় অগ্রাধিকার দেয়া হবে। পরে তা সুরক্ষায় সব দেশকে কাজ করতে হবে।
কৃষির বাস্তুতন্ত্র রক্ষায় ইইউ দেশগুলোকে কৃষি ও ফসলি জমিতে কার্বন নিঃসরণ কমিয়ে মাটির গুণাগুণ ঠিক রাখতে জমির মালিক ও কৃষকদের উদ্যোগ নিতে হবে। তবে কৃষিজমির ব্যবহার কমিয়ে পর্যাপ্ত খাদ্য উৎপাদন করলে আইনটি শিথিলের সুযোগ রাখা হয়েছে। বনাঞ্চলের বাস্তুতন্ত্র রক্ষায় অতিরিক্ত ৩০০ কোটি চারা রোপণ এবং ২৫ হাজার কিলোমিটার অঞ্চলের নদীর প্রবাহ বাড়াতে কাজ করা হবে।
বিক্ষোভকারীরা বলছেন, তাদের ওপর আমলাতন্ত্রিক জটিলতা চাপিয়ে দেয়া হচ্ছে। পরিবেশ রক্ষার নামে লালফিতার দৌরাত্ম্য বাড়বে। কৃষকদের দাবি দমাতে মরিয়া ইইউ নেতারা। আইনপ্রণেতারা বলছেন, ইউরোপের প্রাকৃতিক পরিবেশ রক্ষায় এই আইনের বিকল্প নেই। বর্তমানে ইউরোপের ৮১ শতাংশ আবাসভূমি ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে।
বিলটি আইনে পরিণত করতে সদস্য দেশগুলোর চূড়ান্ত অনুমোদন প্রয়োজন। আগামী ২০ দিনের মধ্যে আইনটির সব কার্যক্রম শেষ করতে হবে।