প্রতিনিয়তই ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনা বাড়ছে। এতে যুদ্ধ যুদ্ধ খেলায় মারণাস্ত্রের আধিপত্য ছাড়াও অর্থনীতিকে শক্তিশালী করার পথে, কে কার থেকে এগিয়ে থাকবে তা নিয়ে চলছে পাল্টাপাল্টি লড়াই। যেখানে এগিয়ে থাকতে আরও বেশি পাকাপোক্ত হচ্ছে প্রতিদ্বন্দ্বী দেশগুলোর জোট।
ইতোমধ্যেই কানাডা, ফ্রান্স, জাপান, ইতালি, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের জি-সেভেন জোটের চেয়েও নিজেদের অর্থনৈতিক গতি বাড়াতে উঠে পড়ে লেগেছে ব্রিকস। আগে এই জোটে ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন এবং দক্ষিণ আফ্রিকা অন্তর্ভুক্ত থাকলেও চলতি বছরে সৌদি আরব, ইরান, ইথিওপিয়া, মিসর ও সংযুক্ত আরব আমিরাত যোগ হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে সদস্য সংখ্যা পাঁচ থেকে ১০ হয়েছে।
জোটের সদস্য সংখ্যা বাড়াতে না বাড়াতেই ব্রিকস ও জি-সেভেনের মধ্যে অর্থনৈতিক দূরত্ব কোন পর্যায় গিয়ে ঠেকবে, তা নিয়ে গবেষণা শুরু করেছে বিভিন্ন সংস্থা। এরইমধ্যে লন্ডনভিত্তিক বিনিয়োগ পরামর্শ সংস্থা হেনলি অ্যান্ড পার্টনারসের এক প্রতিবেদনে বেশকিছু তথ্য উঠে এসেছে। যেখানে দেখা গেছে, ব্রিকসের সদস্য দেশগুলো বর্তমানে মোট বিনিয়োগযোগ্য অর্থ আছে ৪৫ লাখ কোটি ডলার। অন্যদিকে আরেক গবেষণা সংস্থার পরিসংখ্যান তথ্য বলছে, ২০২৩ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত জি-সেভেন জোটের মোট বিনিয়োগযোগ্য অর্থ ছিলো ১১০ লাখ কোটি ডলার।
এ অবস্থায় জি-সেভেনের বিনিয়োগযোগ্য অর্থের ঘরকে টপকানো ব্রিকসের মূল চ্যালেঞ্জ। এর জন্য ২০৩৪ সালের মধ্যে ৮৫ শতাংশ পর্যন্ত নতুন কোটিপতির সংখ্যা বাড়াতে চায় এই উদীয়মান অর্থনৈতিক জোট। বিপরীতে একই সময়ের মধ্যে ৪৫ শতাংশ পর্যন্ত নতুন কোটিপতির সংখ্যা বাড়াতে চায় জি-সেভেন।
পরিসংখ্যান বলছে, বর্তমানে ব্রিকসের ১০টি দেশের ১৬ লাখ ব্যক্তি আছেন যাদের ব্যক্তিগত বিনিয়োগযোগ্য সম্পদের পরিমাণ ১০ লাখ ডলারের বেশি। এর মধ্যে ৪ হাজার ৭শ' জনের কাছে আছে ১০ কোটি ডলারের বেশি বিনিয়োগযোগ্য সম্পদ। এছাড়া ৫ শতাধিক ব্যক্তি আছেন যাদের সম্পদ ১০০ কোটি ডলারের বেশি।
হেনলি অ্যান্ড পার্টনার্সের প্রতিবেদনে আরও দেখা যায়, ব্রিকসের বিনিয়োগযোগ্য সম্পদ বাড়ানোর ক্ষেত্রে শীর্ষে রয়েছে ভারত। ২০৩৩ সালের মধ্যেই দেশটির মাথাপিছু সম্পদ ১১০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়তে পারে বলে পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে। যেখানে সংযুক্ত আরব আমিরাতের বাড়াতে পারে ৯৫ শতাংশ। আর চীন ও ইথিওপিয়ার ক্ষেত্রে প্রত্যাশার হার যথাক্রমে ৮৫ শতাংশ এবং ৭৫ শতাংশ।
এদিকে নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের প্রধান দিলমা রুসেফ মনে করছেন, ২০২৮ সালের মধ্যেই বৈশ্বিক জিডিপিতে জি-সেভেনকে ছাড়িয়ে যাবে ব্রিকসের সদস্য দেশগুলো।