দুই খোলসবিশিষ্ট জলজ প্রাণী ঝিনুক। আমেরিকা-ইউরোপসহ অনেক দেশেই পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ ও সুস্বাদু খাদ্য হিসেবে সমাদৃত এই জলজ প্রাণি। ঝিনুকে রয়েছে জিঙ্ক, লৌহ, ক্যালসিয়াম, সেলেনিয়ামসহ ভিটামিন 'এ' এবং ভিটামিন বি-টুয়েলভসহ নানা খনিজ উপাদান। খাবারের পাশাপাশি ঝিনুক থেকে মুক্তাসহ পাওয়া যায় চুন। এছাড়া নানা ধরনের সাজসজ্জা ও সৌখিন উপকরণ তৈরিতে ব্যবহৃত হয় ঝিনুক।
নতুন বছরে ফ্রান্সে এবার মন্দার কবলে পড়েছে ঝিনুক ব্যবসা। রেস্তোরাঁ ও বাজারগুলোতে ১০ শতাংশ কমেছে ঝিনুক বিক্রি। ফ্রান্সের দক্ষিণ-পশ্চিম আটলান্টিক উপকূলে ঝিনুকে পাওয়া গেছে এক ধরনের ভাইরাস। যার নামকরণ করা হয়েছে 'নরোভাইরাস'। ছোঁয়াচে এই ভাইরাসে অনেকের মাঝেই সংক্রমণের খবর পাওয়া গেছে। ঝিনুক খেয়ে বমি ও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছেন ভোক্তারা।
গবেষকরা বলছেন, ঝিনুক খেয়ে খাদ্যে বিষক্রিয়ায় হজমের সমস্যায় পড়েছেন অনেকেই। এমন পরিস্থিতিতে ফ্রান্সের দক্ষিণ–পশ্চিমসহ ক্যালভাদোস ও মাঞ্চ অঞ্চলেও পরবর্তী নির্দেশনা না দেয়া পর্যন্ত বন্ধ করে দেয়া হয়েছে ঝিনুক চাষ ও বিক্রি কাযর্ক্রম
স্থানীয়রা বলেন, 'আমরা ঝিুনুক কিনছি না, অনেকের সমস্যা হয়েছে। আমাদের পরিবারের কয়েকজন বড়দিনে ঝিনুক খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ে। ঝিনুক খেয়ে অনেকের সমস্যা হচ্ছে। অনেকেই ঝিনুক কিনা বন্ধ করে দিয়েছেন। এটি শরীরের ক্ষতি করছে।'
এদিকে, ঝিনুক উৎপাদন ও বিপণনে যুক্ত সংগঠনগুলো বলছে, নিষেধাজ্ঞার কারণে অর্থনৈতিক সংকটে পড়বে এই শিল্প। চাষিদের অভিযোগ, পানি দূষণের কারণে ছড়িয়েছে এই ভাইরাস। সমস্যা সমাধানে দ্রুত পানি পরিশোধনের পাশাপাশি স্থানীয় চাষিদের ক্ষতিপূরণ দেয়ার আশ্বাস দিয়েছে ফরাসি সরকার।
যুক্তরাষ্ট্র, চীন, জাপানের পর ঝিনুক উৎপাদনে বিশ্বের পঞ্চম স্থানে রয়েছে ফ্রান্স। দেশটির বিভিন্ন উপকূলে দুই হাজার মাইলের বেশি এলাকায় বাণিজ্যিকভাবে চাষ হয় ঝিনুক।