টানা শাটডাউনে বিপর্যস্ত মার্কিন অ্যাভিয়েশন খাত; একদিনে বাতিল ৫ হাজার ফ্লাইট

শাটডাউনের মুখে যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি প্রতিষ্ঠান
শাটডাউনের মুখে যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি প্রতিষ্ঠান | ছবি: সংগৃহীত
0

যুক্তরাষ্ট্রে টানা সরকারি শাটডাউনে বিপর্যস্ত অ্যাভিয়েশন খাত। গতকাল (শুক্রবার, ৭ নভেম্বর) একদিনেই পাঁচ হাজারের বেশি ফ্লাইট বাতিল ও বিলম্বিত করেছে মার্কিন এভিয়েশন বিভাগ। এদিকে শাটডাউনের কারণে বন্ধ থাকা লাখ লাখ ফেডারেল কর্মীর বেতন পুনরায় চালু করার একটি বিল সিনেটে ব্যর্থ হয়েছে। আর শাটডাউন শেষ হওয়া ডেমোক্র্যাটদের ওপর নির্ভর করছে বলে জানিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। পাশাপাশি অচলাবস্থা দূর না হওয়া পর্যন্ত সিনেটরদের ওয়াশিংটন ছেড়ে না যাওয়ার আহ্বানও জানান তিনি।

টানা ৩৮ দিনে গড়িয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল শাটডাউন। বিভিন্ন খাতে ব্যয় কমানো এবং কর্মী ছাঁটাইয়ের পর এবার ভয়াবহ বিপর্যয়ের মুখে মার্কিন অ্যাভিয়েশন খাত।

চার শতাংশ ফ্লাইট চলাচল কমানোর ঘোষণার একদিন পরই পাঁচ হাজারেরও বেশি ফ্লাইট বাতিল ও বিলম্বিত করতে বাধ্য হয়েছে মার্কিন অ্যাভিয়েশন বিভাগ।

বিমানবন্দরগুলো ট্রাফিক নিয়ন্ত্রকের ঘাটতি দেখা দেয়ায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। অতিরিক্ত কাজের চাপে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন অনেকে। আর শাটডাউনের কারণে বিনা বেতনে কাজ করা কর্মীদেরএকাংশ পার্ট টাইম চাকরিতে যোগ দিয়েছে।

ফেডারেল এভিয়েশন অ্যাডমিনিসট্রেশন জানিয়েছে, অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট চলাচল ৪% কমানো শুরু হয়েছে। আগামী সপ্তাহে এই সংখ্যা বেড়ে ১০ শতাংশ পর্যন্ত হতে পারে। আর শাটডাউন অব্যাহত থাকলে বিমান চলাচল ১৫ শতাংশ থেকে ২০ শতাংশ পর্যন্ত কমে আসতে পারে।

বড়দিনের ছুটির আগে এমন বিপর্যয়ে হতাশা ও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে মার্কিনরা। অচলাবস্থা চলতে থাকলে আরও বড় সমস্যা তৈরি হবে বলেও আশঙ্কা তাদের।

স্থানীয়দের মধ্যে একজন বলেন, ‘সরকার ভ্রমণ সীমিত করছে যা সত্যিই অপ্রীতিকর। প্রত্যেকেরই তাদের পথে যেতে, তাদের পথে যেতে পারা উচিত। এই অবস্থা চলতে থাকলে তা একটি বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়াবে।’

আরও পড়ুন:

অন্য একজন বলেন, ‘আমার মনে হয় পরিস্থিতি আরও খারাপ হচ্ছে। কন্ট্রোলাররা বেতন পাচ্ছে না। তারা ছুটি নিতে শুরু করেছে। এর ফলে ভ্রমণের ওপর প্রভাব পড়তে শুরু করেছে।’

এদিকে শাটডাউনের কারণে যেসকল ফেডারেল কর্মীর বেতন আটকে আছে তাদের বেতন পুনরায় চালু করতে সিনেটে একটি বিল উত্থাপন করে করে ডেমোক্র্যাটরা। তবে রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাটদের মতবিরোধের কারণে শেষ পর্যন্ত বিলটি পাশে ব্যর্থ হয়।

মিনেসোটার ডেমোক্রেটিক সিনেটর অ্যামি ক্লোবুচার বলেন, ‘যা ঘটছে তাতে সবাই ভীত। আমাদের কাছে সময় আছে। আমরা ছুটির দিনে কাজ করতে প্রস্তুত। আশা করি আমাদের সহকর্মীরাও তাই করবেন। আসুন আলোচনার টেবিলে বসি। আমি আশা করি প্রেসিডেন্ট এসে আমাদের সাথে দেখা করবেন।’

নেব্রাক্সার রিপাবলিকান সিনেটর পিট রিকেটস বলেন, ‘ডেমোক্র্যাটরা কি বধির। তারা যাদের এই অবস্থায় ফেলেছে, তাদের কথা শুনতে পাচ্ছেন না। এটা তাদের শাটডাউন, তাদের বাইডেন বাজেট। তারা ভোট দিচ্ছে না।’

ফেডারেল শাটডাউনের জন্য বরাবরই ডেমোক্র্যাটদের দায়ী করে আসছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এবার অচলাবস্থা কবে দূর হবে সেটাও তাদের ওপরই নির্ভর করছে বলে জানান ট্রাম্প।

ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ‘আমি জানি না, এটা ডেমোক্র্যাটদের ব্যাপার। আমরা ভোট দিয়েছি। রিপাবলিকানরা ১৪ বার শাটডাউন তুলে নেয়ার পক্ষে ভোট দিয়েছে আর রিপাবলিকানরা ১৪ বার বিপক্ষে ভোট দিয়েছে। তাদের এটি অনুমোদন করা উচিত কিন্তু তারা তা নাও করতে পারে।’

আর ডেমোক্র্যাটরা শাটডাউন তুলে নেয়ার সিদ্ধান্ত না নেয়া পর্যন্ত, সিনেটরদের ওয়াশিংটনে অবস্থান করার আহ্বানও জানান। নিজের মালিকানাধীন সামাজিক মাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালের এক পোস্টে ট্রাম্প বলেন, শাটডাউনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত না হওয়া পর্যন্ত শহর ছেড়ে যাওয়া উচিত না।

এসএস