জাপান-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কের ‘নতুন স্বর্ণযুগ’ ঘোষণা; বিরল খনিজ সরবরাহে দুই দেশের চুক্তি

জাপানের সঙ্গে খনিজ সরবরাহসহ ২ চুক্তি ট্রাম্পের
জাপানের সঙ্গে খনিজ সরবরাহসহ ২ চুক্তি ট্রাম্পের | ছবি: আল জাজিরা
0

জাপান-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কের নতুন স্বর্ণযুগের ঘোষণা দিয়ে জাপানের সঙ্গে বিরল খনিজ পদার্থ সরবরাহসহ দুটি চুক্তি করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। নতুন চুক্তি অনুযায়ী, খনিজ সরবরাহ ও উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে যৌথভাবে কাজ করবে ওয়াশিংটন ও যুক্তরাষ্ট্র। আজ (মঙ্গলবার, ২৮ অক্টোবর) টোকিওতে ট্রাম্পের সঙ্গে অনুষ্ঠিত বৈঠকে বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় ট্রাম্পের উদ্যোগের প্রশংসা করেন তাকাইচি।

চলমান এশিয়া সফরে একের পর এক বাজিমাত করছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বিরল খনিজ পদার্থ সরবরাহে চীনের একতরফা আধিপত্য ঠেকাতে অস্ট্রেলিয়া, মালয়েশিয়া ও থাইল্যান্ডের পর, জাপানের সঙ্গেও বিরল খনিজ সংক্রান্ত চুক্তি সারলেন তিনি।

মঙ্গলবার জাপানের টোকিওতে দেশটির নতুন প্রধানমন্ত্রী সানায়ে তাকাইচির সঙ্গে বৈঠকে বসেন ট্রাম্প। এসময়, যুক্তরাষ্ট্র ও জাপানের মধ্যে বিরল খনিজ সরবরাহ ও উৎপাদন বাড়াতে একটি চুক্তিতে সাক্ষর করেন তারা। চুক্তি অনুযায়ী , দুই দেশ সমন্বিত বিনিয়োগের মাধ্যমে দুর্লভ খনিজ উৎপাদন বাড়াতে রাজি হয়েছে। বিবিসি জানায়, জাপানে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ খনিজ পানির নিচে রয়েছে। যেগুলো খনন করা কষ্টসাধ্য। নতুন চুক্তিতে টোকিওর খনি প্রক্রিয়াকরণ শিল্পে কাজ করবে যুক্তরাষ্ট্র।

এছাড়া নিউ গোল্ডেন এজ নামে আরেকটি চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে টোকিও ও যুক্তরাষ্ট্র। চুক্তিটি উভয় দেশের অর্থনৈতিক নিরাপত্তা জোরদার ও প্রবৃদ্ধি বাড়াতে ভূমিকা রাখবে বলে জানায় বিবিসি। চুক্তি রক্ষায় দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন ট্রাম্প ও তাকাইচি।

ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ‘আমি জাপান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে একটি নতুন স্বর্ণযুগের বাস্তবায়ন করতে চাই। যার মাধ্যমে দুই দেশেই আরও সমৃদ্ধ ও শক্তিশালী হবে।’

আরও পড়ুন:

এসময় ট্রাম্প কথা বলেন জাপানের সামরিক খাত নিয়েও। তিনি জানান, সাম্প্রতিক সময়ে টোকিওর কাছ থেকে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে সামরিক সরঞ্জাম কেনার অর্ডার পেয়েছে ওয়াশিংটন।

বৈঠকে বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় ট্রাম্পের অব্যাহত প্রচেষ্টার প্রশংসা করেন সানায়ে তাকাইচি। উল্লেখ করেন থাইল্যান্ড- কম্বোডিয়া ও হামাস-ইসরাইল যুদ্ধ বন্ধে ট্রাম্পের ভূমিকার। এছাড়া, ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে কাজের পরিধি বাড়ানোর আশ্বাসও দেন তাকাইচি।

সানায়ে তাকাইচি বলেন, ‘জাপানের কূটনীতি, প্রতিরক্ষা, অর্থনীতি, প্রযুক্তি, মানবসম্পদসহ প্রতিটি খাতের উন্নয়নে আমি দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।একটি মুক্ত ইন্দো প্যাসিফিক অর্জনের জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সহযোগিতামূলক সম্পর্ক বাড়াতে চাই।’

মঙ্গলবার জাপানের স্থানীয় সময় বিকেলে টোকিওর একটি মার্কিন নৌঘাঁটি পরিদর্শন করবেন ট্রাম্প ও তাকাইচি। এছাড়া, বুধবার দক্ষিণ কোরিয়া সফরের আগে জাপানের ব্যবসায়ী নেতাদের সঙ্গেও বৈঠকে বসবেন ট্রাম্প।

দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় এসে জাপানের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক বসায় ট্রাম্প। এরপর জুলাইয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একটি বাণিজ্য চুক্তি করেন জাপানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবা। একারণে জাপানের ওপর ১০ শতাংশ শুল্ক কমিয়ে ১৫ শতাংশ নির্ধারণ করে হোয়াইট হাউজ। রয়টার্স বলছে, জাপানের কাছ থেকে এরই মধ্যে ৫৫০ বিলিয়ন ডলারের প্রতিশ্রুতি পেয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এমনকি ট্রাম্পকে সন্তুষ্ট করতে যুক্তরাষ্ট্র থেকে পিকাপ ট্রাক, সয়াবিন ও গ্যাস কেনার প্রতিশ্রুতি দিতে পারেন জাপানের নতুন প্রধানমন্ত্রী সানায়ে তাকাইচি।

এসএস