মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্কারোপের ঘোষণায় ঝর বইছে বিশ্ব অর্থনীতিতে। এরইমধ্যে বিশ্বের কয়েকটি দেশের শেয়ার বাজারে পড়তে শুরু করেছে এর নেতিবাচক প্রভাব।
মার্কিন শেয়ার মার্কেটে ধসের পর এবার এশিয়ার বাজারও হাঁটছে একই পথে। সোমবার সকাল থেকে এশিয়ার শেয়ার বাজারগুলোর দর নিম্নমুখী। দর পতন হয়েছে জাপানের নিক্কি, হংকং এর হেং সিং শেয়ার মার্কেটেরও।
অন্যদিকে একই পরিস্থিতি ভারতের শেয়ার বাজারেও। দেশটিতে ৫ শতাংশ কমেছে শেয়ারের দর। টাটা মটরসের শেয়ার কমেছে ১০ শতাংশ।
তবে তাইওয়ানের শেয়ার বাজার শুক্রবার বন্ধ থাকায় শনি ও রবিবার কিছুটা চাঙ্গাভাব দেখা গেলেও সোমবার সকাল থেকেই তা আবারও নিম্নমুখী। আইফোনের চিপ মেকার টিএসএমসি ও ফক্সকনের যৌথ শেয়ার কমেছে ১০ শতাংশ। তবে যুক্তরাষ্ট্রের আরোপ করা শুল্ক কমাতে ইতোমধ্যেই মার্কিন পণ্যের ওপর থেকে শুল্ক উঠিয়ে নেয়ার ঘোষণা দিয়েছে তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট লাই চিং।
এমন পরিস্থিতিতে শুল্কারোপের মাধ্যমে বিশ্বকে ওষুধ দিয়েছেন বলে জানান মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এর মাধ্যমে অর্থনৈতিকভাবে যুক্তরাষ্ট্র আরও বেশি শক্তিশালী হয়েছে বলেও দাবি তার।
ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, 'বাজারে কী ঘটছে জানি না। তবে এটা বলতে পারি, যুক্তরাষ্ট্র আরও শক্তিশালী হয়েছে। আমাদের মতো আর কোনো দেশের এত ক্ষমতা নেই। অর্থনৈতিকভাবে বিশ্বের সবচেয়ে প্রভাবশালী দেশ যুক্তরাষ্ট্র। মাঝে মধ্যে ওষুধ দিয়ে অনেক কিছু ঠিক করতে হয়। তাই করেছি আমি।'
ট্রাম্পের এই শুল্কনীতির হাত থেকে বাঁচতে এরই মধ্যে ৫০ টি দেশ ওয়াশিংটনের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে বলে জানিয়েছেন ট্রাম্পের অর্থ উপদেষ্টা কেভিন হ্যাসেট। এসব দেশ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্যিক আলোচনায় আগ্রহী বলেও জানান তিনি।
যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় ইকোনমিক কাউন্সিলের পরিচালক কেভিন হ্যাসেট বলেন, 'যেসব দেশের ওপর শুল্কারোপ করা হয়েছে তাদের মধ্যে অন্তত ৫০টি দেশ প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে বাণিজ্যিক আলোচনায় বসতে চায়। তারা সমঝোতার মাধ্যমে সমাধান চায়। শিগগিরই মার্কিন ভোক্তারা এর ইতিবাচক প্রভাব দেখতে পাবে।'
যদিও ট্রাম্প জানান ইউরোপ ও এশীয় নেতারা তার সঙ্গে বাণিজ্যিক চুক্তির আলোচনায় বসতে চাইলেও এ বিষয়ে তার কোনো আগ্রহ নেই।
ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, 'ইউরোপ ও এশিয়ার নেতারা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনায় বসতে মরিয়া হয়ে আছে। তবে এর কোন সুযোগ নেই। কারণ যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্যিক ঘাটতিতে রয়েছে। তা পূরণ করতে হবে।'
অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, শুল্কারোপের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র আসলে নিজেদের স্বার্থ হাসিল করতে চাইছে। যদিও, এর আগে ট্রাম্পের সঙ্গে ফোনে শুল্ক নিয়ে কথা বলেছেন ভিয়েতনামের প্রেসিডেন্ট টো লাম। সেসময় দেশটিতে মার্কিন পণ্যের ওপর থেকে আমদানি শুল্ক উঠিয়ে নেয়ার শর্তে রাজি হন তিনি।