আন্তর্জাতিক বাণিজ্য
0

বিশ্বের সেরা দশ ধনী কেন্দ্রীয় ব্যাংক

একটি দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক সেদেশের বৈদেশিক বাণিজ্যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। রাষ্ট্রের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করা ও আর্থিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখার মতো গুরুত্বপূর্ণ কাজও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের। এতসব কাজের মধ্যে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রধান কাজ হলো মুদ্রা সরবরাহ ও সুদের হার ব্যবস্থাপনা।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সম্পদের পরিমাণ থেকে বোঝা যায় সংশ্লিষ্ট দেশটি কতটা সম্পদশালী এবং বিশ্বে তার প্রভাব কতোখানি। এই সম্পদের মধ্যে রয়েছে বৈদেশিক মুদ্রা, স্বর্ণ ও সরকারি বন্ড। সম্প্রতি বিশ্ব অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে এমন ১০টি ব্যাংকের তালিকা করা হয়েছে।

সেরা ১০ এর শীর্ষে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভ।

ছবি: সংগৃহীত

আর্থিক খাত সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের মাঝে ব্যাংকটি 'ফেড' নামে পরিচিত। ১৯১৩ সালে প্রতিষ্ঠিত ব্যাংকটির মোট সম্পদের আর্থিক মূল্য ৭ লাখ ৫৪ হাজার কোটি ডলার। যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাংকিং ব্যবস্থা নজরদারি ও মুদ্রা সরবরাহ নিয়ন্ত্রণ করে ফেডারেল রিজার্ভ। ব্যাংকটির হাতে থাকা বিশাল সম্পদই যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতির প্রাণভোমরা।

তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে আছে ব্যাংক অব জাপান।

ব্যাংক অব জাপান। ছবি: সংগৃহীত

বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ জাপানের কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ১৯৮২ সালে প্রতিষ্ঠিত ব্যাংকটির সম্পদের আর্থিক মূল্য ৫ লাখ ২১ হাজার কোটি ডলার। বাজারে মুদ্রা সরবরাহ, রিজার্ভ ব্যবস্থাপনা ও মুদ্রানীতি প্রণয়ন ও প্রয়োগ এই ব্যাংকের প্রধান কাজ।

জাপানের পর বিশ্বের ধনী কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তালিকায় তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে এশিয়ার আরেক দেশ চীন।

চীনের কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ছবি: সংগৃহীত

১৯৪৮ সালে প্রতিষ্ঠিত পিপলস ব্যাংক অব চায়নার মোট সম্পদের পরিমাণ ৫ লাখ ১৪ হাজার কোটি ডলার। সাম্প্রতিক দশকগুলোয় পিপলস ব্যাংক অব চায়নার সম্পদ বেড়েছে বিপুলভাবে।

ডয়েশে বুন্ডেস ব্যাংক ইউরোপের সবচেয়ে বড় অর্থনীতির দেশ জার্মানির কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

জার্মানির কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ছবি: সংগৃহীত

ফোর্বসের তালিকা অনুযায়ী, জার্মানি বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ। চতুর্থ স্থানে থাকা ব্যাংকটির সম্পদের পরিমাণ ২ লাখ ৭২ হাজার কোটি ডলার। ১৯৫৭ সালে প্রতিষ্ঠিত ব্যাংকটি ইউরোপের একক মুদ্রা ইউরো চালুর পেছনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।

পঞ্চম স্থানে ইউরোপের আরেক বড় অর্থনীতির দেশ ফ্রান্সের কেন্দ্রীয় ব্যাংক, ব্যাংক অব ফ্রান্স।

ব্যাংক অব ফ্রান্স। ছবি: সংগৃহীত

১৮০০ সালে প্রতিষ্ঠিত বিশ্বের প্রাচীন ব্যাংকগুলোর মধ্যে অন্যতম এই ব্যাংকের সম্পদের পরিমাণ ১ লাখ ৭২ হাজার কোটি ডলার।

তালিকার ষষ্ঠ অবস্থানে ব্যাংক অব ইতালি।

ব্যাংক অব ইতালি। ছবি: সংগৃহীত

১৮৯৩ সালে অবস্থিত ইতালির কেন্দ্রীয় ব্যাংকটির মোট সম্পদের পরিমাণ ১ লাখ ৫৫ হাজার কোটি ডলার। দেশটির জন্য মুদ্রানীতি প্রণয়ন করা ছাড়া ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুদ্রানীতি সংক্রান্ত সিদ্ধান্তেও অংশগ্রহণ করে ব্যাংক অব ইতালি।

ইতালির পরই সপ্তম অবস্থানে আছে স্পেনের কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

স্পেনের কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ছবি: সংগৃহীত

১৭৮২ সালে প্রতিষ্ঠিত প্রাচীন এই ব্যাংকের সম্পদের পরিমাণ ১ লাখ ৩২ হাজার কোটি ডলার। স্পেনের মুদ্রানীতি প্রণয়নের পাশাপাশি ইউরোপের মুদ্রানীতি প্রণয়নের কাজও করে ব্যাংকটি।

ব্যাংক অব ইংল্যান্ড রয়েছে তালিকার অষ্টম স্থানে।

ব্যাংক অব ইংল্যান্ড। ছবি: সংগৃহীত

ইংল্যান্ডের হলেও এটি মূলত যুক্তরাজ্যের কেন্দ্রীয় ব্যাংক। বাজারে মুদ্রা সরবরাহের পাশাপাশি যুক্তরাজ্যের জন্য মুদ্রানীতি প্রণয়ন করে ব্যাংক অব ইংল্যান্ড। এর মোট সম্পদের পরিমাণ ১ লাখ ২৯ হাজার কোটি ডলার।

তালিকায় নবম স্থানে সুইজারল্যান্ডের সুইস ন্যাশনাল ব্যাংক।

সুইস ন্যাশনাল ব্যাংক। ছবি: সংগৃহীত

এটি প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯০৭ সালে। ব্যাংকটিতে যে পরিমাণ সম্পদ রয়েছে তার আর্থিক মূল্য ১ লাখ ৩ হাজার কোটি ডলার । সুইজারল্যান্ডের মুদ্রানীতি প্রণয়ন ও রিজার্ভ ব্যবস্থাপনা সুইস ন্যাশনাল ব্যাংকের প্রধান দায়িত্ব।

সেরা ১০ এর সবশেষে আছে রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়া। ১৯৩৫ সালে প্রতিষ্ঠিত ভারতের এই কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হাতে থাকা সম্পদের পরিমাণ ৮১ হাজার কোটি ডলার।

রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়া। ছবি: সংগৃহীত

অন্যান্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মতো নিজ দেশের জন্য মুদ্রানীতি প্রণয়ন ও বাজারে মুদ্রা সরবরাহের দায়িত্ব রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার। বর্তমানে বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ ভারত। সাম্প্রতিক সময়ে দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সম্পদের পরিমাণও বেড়েছে উল্লেখযোগ্য হারে।

ইএ

এই সম্পর্কিত অন্যান্য খবর