প্রযুক্তি সংবাদ
তথ্য-প্রযুক্তি
0

প্রযুক্তিজ্ঞানে পিছিয়ে থাকাই স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার বড় চ্যালেঞ্জ

যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বিশ্বে কর্মব্যবস্থাপনায় ব্যাপ পরিবর্তন এসেছে। এক সময়ের টাইপিং মেশিনের পরিবর্তে অফিস-আদালতে ব্যবহার হচ্ছে কম্পিউটার। তবে দেশে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারে ৯২ ভাগ মানুষ দক্ষ নয়। সেক্ষেত্রে ২০৪১ সালে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়া বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে।

বগুড়ায় জাতীয় কম্পিউটার প্রশিক্ষণ ও গবেষণা একাডেমি (নেকটার) তথ্য প্রযুক্তিতে দক্ষ করে গড়ে তোলার কাজ করছে। তবে সেখানেও কিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে। পরিসর বৃদ্ধি ও আধুনিক সাইবার সিকিউরিটি, থ্রিডি প্রিন্টিং ল্যাব জরুরি বলে মনে করেন প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তা।

রাজশাহীর তানোর উপজেলার আল মাদ্রাসাতুল ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠান প্রধান মোকছেদ আলী। তার চাকরির বয়স রয়েছে সাত বছর। আধুনিক শিক্ষা ব্যবস্থা, জরুরি ম্যাসেজ ও চিঠিপত্র আদান প্রদানের ক্ষেত্রে প্রযুক্তি গুরুত্ব তিনি অনুধাবন করতে পেরেছেন।

কম্পিউটার প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন মোকছেদ আলী। ছবি: এখন টিভি

পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানতে পেরে নেকটারে এসেছেন কম্পিউটার প্রশিক্ষণ নিতে। মাইক্রোসফট ওয়ার্ড, এক্সেলসহ ৫টি প্রোগ্রাম শিখেছেন তিনি। এখন তিনি মাদ্রাসায় গিয়ে নিজের কাজের পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের শিখাতে চান প্রোগ্রামগুলো।

মোকছেদ আলী বলেন, 'বর্তমানে বাংলাদেশ স্মার্ট বাংলাদেশ হতে যাচ্ছে। এতে অংশগ্রহণ করতে হলে অবশ্যই আমাদের আইসিটি জ্ঞান দরকার। এখান থেকে এগুলো শিখে গিয়ে আমি আমার শিক্ষার্থীদের শেখাতে চাই।'

শুধু তিনিই নন, চট্টগ্রাম, হবিগঞ্জ, টাঙ্গাইল, বরিশালসহ প্রায় ২০ জেলা থেকে বিভিন্ন স্কুল কলেজের শিক্ষক ও সরকারি বেসরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা মাসব্যাপী আইটি প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন এ প্রতিষ্ঠান থেকে।

একজন স্কুল শিক্ষক বলেন, 'বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে হলে আমাদের শিক্ষার্থীদের অবশ্যই স্মার্ট হিসেবে গড়ে উঠতে হবে। আর সেজন্য আমার কম্পিউটার শেখা ও তথ্য প্রযুক্তির জ্ঞান রাখা অত্যন্ত জরুরি।'

আরেকজন কলেজ শিক্ষক বলেন, 'এখানে আসার আগে যে বিষয়গুলো জানতাম তার দক্ষতা আরও বেড়েছে।'

শুধু পেশাজীবীরাই নন। মুক্ত পেশাজীবী হিসেবে গড়ে তুলতে নামমাত্র এক হাজার টাকা ভর্তি ফি নিয়ে শিক্ষিত বেকার তরুণ-তরুণীদের কম্পিউটারে প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে এখানে।

একজন যুবক বলেন, 'পড়াশুনা শেষে অনেকের বসে থাকতে হয়। আমার যেন তা না থাকতে হয় সেজন্য ন্যাশনাল হিউম্যান রিসার্স ডেভেলপমেন্ট ফান্ডের আওতায় নেকটারে গ্রাফিক্স ডিজাইনিং কোর্স করছি।'

কেবল দৈনন্দিন কাজ চালানোর প্রোগ্রাম নয়, সাইবার সিকিউরিটিসহ আধুনিক অনেক প্রোগ্রামে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছে প্রতিষ্ঠানটি। তবে এখানে প্রতিষ্ঠানটির পরিসর ও অত্যাধুনিক ল্যাবের সংকট রয়েছে।

আধুনিকতার সঙ্গে নতুন নতুন যে প্রোগ্রামগুলো আসছে তার সবগুলোই অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে সিলেবাসে। এখন ৩৬টি ট্রেডে শেখানো হচ্ছে বলে জানান প্রশিক্ষণ সমন্বয়ক।

বগুড়া নেকটারের প্রশিক্ষণ সমন্বয়ক মো. জয়নাল আবেদীন বলেন, 'আমরা প্রতিবছর স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রায় এক হাজার ৫০০ শিক্ষককে প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকি। এছাড়াও প্রায় ২ হাজারের ওপরে শিক্ষিত বেকার যুবক-যুবতীদেরও প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকি।'

জাতীয় কম্পিউটার প্রশিক্ষণ ও গবেষণা একাডেমি দেশের একমাত্র প্রতিষ্ঠান, যা কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের অধীন।

১৯৮৪ সালে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে প্রায় ৬৪ হাজার প্রশিক্ষণার্থী এই প্রতিষ্ঠান থেকে প্রথমে সাঁটলিপি টাইপিং, পরে কম্পিউটার ও অত্যাধুনিক প্রোগ্রামে দক্ষ হয়ে উঠেছে। এখানে ৬ মাস, ৩ মাস, এবং ১ মাসের কোর্স রয়েছে।

এমএসআরএস

এই সম্পর্কিত অন্যান্য খবর