রিভলবার বা সাবমেশিন বন্দুকের বুলেট, শক্তিশালী সাইবার ট্রাককে ভেদ করার মতো শক্তি নেই কোনো বন্দুকের কাছেই। বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৬৭ লাখ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে সাইবার ট্রাকের বেইজ ভ্যারিয়েন্ট। আগের ঘোষণার চেয়ে ৫০ শতাংশ বেশি দাম নিলেও টেসলার বুলেটপ্রুফ গাড়িটি কিনতে উৎসাহের কমতি নেই গ্রাহকদের মাঝে।
২০১৯ সালে সর্বপ্রথম সাইবার ট্রাক বাজারে আনার ঘোষণা দেন ইলন মাস্ক। গাড়িটির সাইন্সফিকশন ধরণের গড়ন, কাগজে কলমে স্পেসিফিকেশন ও ভঙ্গুরহীন আর্মর গ্লাসের কথা শুনে চোখ কপালে উঠে যায় অনেকেরই।
তবে সে অনুষ্ঠানেই গাড়ির কাঁচে লোহার বল ছুঁড়ে মারলে নিমিষেই তাতে ধরে ফাটল। বিব্রতকর পরিস্থিতির সম্মুখীন হন টেসলার সিইও। এরপরই কয়েক দফায় পেছানো হয় সাইবার ট্রাকের উৎপাদন।
গেল নভেম্বরের শেষদিন শুরু হয় সাইবার ট্রাকের বিক্রি। তবে এবার আর ভেঙ্গে যায়নি গাড়ির কাঁচ। স্পেসিফিকেশন অনুযায়ী বৈদ্যুতিক গাড়িটিতে রয়েছে ৬০০ হর্স পাওয়ারের ইঞ্জিন। ফলে ঘণ্টায় শূন্য থেকে ৬০ কিলোমিটার গতি উঠতে সময় নিবে মাত্র ২ দশমিক ৬ সেকেন্ড।
প্রদর্শনী অনুষ্ঠানে সাইবার ট্রাক।
ইলন মাস্কের ভাষ্যমতে, গতির ক্ষেত্রে সুপারকার ল্যাম্বরগিনি আর শক্তির দিক থেকে গাড়িটি হবে ফ্রেইটলাইনার ট্রাকের মতো। প্রায় সাড়ে ৬ হাজার কেজি ওজনের বস্তু টানার সক্ষমতার পাশাপাশি গাড়িটিতে ওঠানো যাবে প্রায় ১ হাজার ৬০০ কেজির মালামাল।
সম্পূর্ণ গাড়িটিতেই ব্যবহার করা হয়েছে এক্সো-স্কেলিটন স্টেইনলেস স্টিল। টেসলার সিস্টার কোম্পানি স্পেস এক্সের রকেট স্টারশিপেও ব্যবহার করা হয়েছে এই স্টিলের পাতটি। ফলে ভাঙ্গা রাস্তা থেকে শুরু করে পাথুরে জমিতেও ক্ষতি হবে না এ ট্রাকের। এমনকি শক্তপোক্ত গাড়িটিতে পরিবর্তন আসবে না হাতুড়ির আঘাতেও।
বৈদ্যুতিক গাড়ির ক্ষেত্রে বিপত্তির নাম বারবার চার্জ করা। তবে এক্ষেত্রেও ব্যতিক্রম সাইবার ট্রাক। গাড়িটিতে ব্যবহার করা হয়েছে ১০০ কিলোওয়াটের ব্যাটারি। ফলে একবার সম্পূর্ণ চার্জে সাইবার ট্রাক ছুটতে পারবে প্রায় ৫০০ কিলোমিটার দূরত্ব।
এছাড়াও মার্বেল পাথরের মতো দেখতে ব্ল্যাঙ্ক ড্যাশবোর্ড, রেসিং কারের স্টেরিং উইল ও ১৭ ইঞ্চির ডিসপ্লে সাইবার ট্রাককে করেছে সবার থেকে আলাদা।
টেসলার প্রধান ডিজাইনার ফ্র্যাঞ্জ ভন হোলঝাওসেন বলেন, 'আপনি পছন্দ করুন কিংবা ঘৃণা করুন, সাইবার ট্রাককে নিয়ে আপনি কথা বলবেনই। একইসঙ্গে টেসলার অন্যান্য গাড়িগুলোর বিষয়েও আপনি জানতে চাইবেন। এটি না হলেও অন্যান্য গাড়িগুলো আপনার জন্য হতে পারে। সাইবার ট্রাক নিয়ে চর্চা না হলে আপনি হয়তো অন্য গাড়িগুলোর বিষয়ে জানতে পারতেন না।'
৪ বছর কিংবা সাড়ে ৮০ হাজার কিলোমিটার পর্যন্ত সাইবার ট্রাকের ওয়ারেন্টি দিবে টেসলা। অন্যদিকে ব্যাটারির ক্ষেত্রে পাওয়া যাবে আড়াইলাখ কিলোমিটার অথবা ৮ বছরের ওয়ারেন্টি।