বিশ্বজুড়ে ক্যান্সারের ধরণ আছে ২০০টির বেশি। এদের মধ্যে অন্যতম মরণব্যাধি স্তন ক্যান্সার। স্তনের অনিয়ন্ত্রিত ও অস্বাভাবিক কোষ বিভাজনের মাধ্যমে তৈরি হয় টিউমার, পরবর্তীতে যা পরিণত হয় ক্যান্সারে।
প্রাথমিকভাবে স্তন ক্যান্সার নির্ণয়ের জন্য ব্যবহার করা হয় ম্যামোগ্রাম।ব্যয়বহুল ও সময়ক্ষেপণকারী এই এক্সরের কারণে অনেক রোগীই বঞ্চিত হন চিকিৎসা থেকে। তবে ম্যামোগ্রামের বদলে শুধু আঙ্গুলের ছাপের মাধ্যমেই শনাক্ত করা যাবে স্তন ক্যান্সার।
যুক্তরাজ্যের শেফিল্ড হ্যালাম বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক উদ্ভাবন করেছেন এ পদ্ধতি। আঙুলে লেগে থাকা ঘামে লুকিয়ে থাকে প্রোটিন। আর এ প্রোটিনের অণুগুলোর আকৃতি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে বিশ্লেষণ করে শনাক্ত করা যাবে স্তন ক্যান্সার।
শেফিল্ড হ্যালাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সিমোনা ফ্র্যান্সিস বলেন, 'ধাতব পাতের মধ্যে রোগীর আঙুল ঘষার ফলে আমরা ঘামের একটি পাতলা স্তর পাই। এরমধ্যে বিভিন্ন ধরনের অণু থাকে। তবে আমরা কাজ করি শুধু প্রোটিন নিয়ে।'
প্রায় ১৫ বছর ধরে ফরেনসিক নিয়ে কাজ করছেন দলটির প্রধান গবেষক সিমোনা ফ্রান্সিস। মাত্র কয়েকবছর আগেই তিনি চিন্তা করেন আঙুলের ছাপের মতো ফরেনসিক বিষয়কে ব্যবহার করবেন রোগ নির্ণয়ের জন্য। তবে শুধু স্তন ক্যান্সারই নয়, ঘামের অণু বিশ্লেষণের মাধ্যমে শনাক্ত করা সম্ভব অপরাধীকেও।
সিমোনা ফ্র্যান্সিস আরও বলেন, 'এই পদ্ধতিকে ক্রিমিনাল প্রোফাইলিংয়ের আরেকটি মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করা যায়। আঙুলের মধ্যে ঘামের যে অণুগুলো থাকে, তার মাধ্যমে আপনি কোনো ব্যক্তির আচরণ বের করতে পারবেন। তথ্যের মাধ্যমে সন্দেহভাজনদের তালিকা ছোট করা সম্ভব।'
প্রথম স্টেজের স্তন ক্যান্সার সহজে নিরাময়যোগ্য হলেও দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্টেজের ক্ষেত্রে আশ্রয় নিতে হয় রেডিয়েশন থেরাপি কিংবা অস্ত্রোপচারের। অন্যদিকে শেষ স্টেজে পৌঁছালে মৃত্যুর আশঙ্কা ৭৫ শতাংশ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য বলছে, স্তন ক্যান্সারে প্রতিবছর মারা যান ৬ লাখ ৮৫ হাজার মানুষ।
সিমোনা ফ্রান্সিসের আশা, তাদের গবেষণা পদ্ধতিকে চিকিৎসা ব্যবস্থায় সংযুক্ত করা গেলে বাঁচবে সময়, সাশ্রয় হবে অর্থ, কমে আসবে মৃত্যুর হার।