জলবায়ু সম্মেলনে আদিবাসীদের বিক্ষোভের শঙ্কা, সম্মেলনের প্রধান গেটে সেনাবাহিনীর অবস্থান

আদিবাসীদের বিক্ষোভ
আদিবাসীদের বিক্ষোভ | ছবি: এখন টিভি
0

ব্রাজিলের বেলেমে চলছে ৩০তম বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলন। যেখানে অংশ নিচ্ছেন ১৯৪ দেশের প্রতিনিধিরা। এবার সম্মেলনে অ্যামাজনের আদিবাসীদের বিষয় আলোচনাভুক্ত করার কথা থাকলেও তা শেষ পর্যন্ত করা হয়নি। ফলে আদিবাসীদের বিক্ষোভের আশঙ্কায় সম্মেলনের প্রধান গেটে অবস্থান নিয়েছে দেশটির সেনাবাহিনী।

মাথায় অ‍্যামাজনের জীব জন্তুর পালক দিয়ে তৈরি বিশেষ মুকুট আর গায়ে ভিন্ন ধরনের পোশাক। হাতে দ্রোহের প্ল্যাকার্ড আর মুখে ধরিত্রী রক্ষার বিপ্লবী সুরের স্লোগান।

প্রচণ্ড তাপ উপেক্ষা করে কখনও হেঁটে কখনও দৌড়ে সুরে সুরে চলছে জলবায়ু রক্ষায় নাগরিক বিক্ষোভ। নারী পুরুষ, যুবক বৃদ্ধ নির্বিশেষে পরিবেশের ন‍্যায‍্যতা বুঝে নিতে এ আয়োজন।

ব্রাজিলের বেলেমে যখন জলবায়ু সম্মেলনে চলছে তখন পাশেই প্রায় ৫০ হাজার পরিবেশ কর্মীর অংশগ্রহণে শহরের সাও ব্রাস মার্কেট থেকে শুরু হওয়া মিছিলের শেষ প্রান্ত পৌঁছেছে কাভানা ভিলেজে। যার সামনে ছিলো বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা আদিবাসী দল আর পিছনে তরুণরা। তাদের স্পষ্ট অঙ্গীকার, উন্নয়ন চাই, কিন্তু প্রকৃতি ধ্বংস করে নয়।

গ্লাসগোর ২৬তম জলবায়ু সম্মেলনের পর এবারই প্রথম সম্মেলনের আয়োজক শহরে বড় ধরনের এমন বিক্ষোভ। বেলেম যেন জলবায়ু কর্মীদের পুরোনো ক্ষোভে বারুদ জুগিয়েছে।

আরও পড়ুন:

আদিবাসীদের এই রোড শো থেকে অ্যামাজনে তেল গ্যাস অনুসন্ধান ও আদিবাসী ভূমিতে করপোরেট আগ্রাসন বন্ধের দাবি জানানো হয়।

দেশি বিদেশি পরিবেশকর্মীরা বলছেন, জাতিসংঘ ও জলবায়ু সম্মেলন আয়োজকরা পরিবেশ রক্ষা ও ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোকে ক্ষতিপূরণ দেয়ার দিকে মনোযোগ না দিয়ে বরং সচেতন পরিবেশ কর্মীদের মোকাবেলার দিকে বেশি মনোযোগী। যা আদিবাসীদের আরো ক্ষেপিয়ে তুলেছে।

জলবায়ু বিশেষজ্ঞ শরীফ জামিল বলেন, ‘জলবায়ু সম্মেলন আসলে জলবায়ু মোকাবিলার জন্য কাজ করছে না। এটা কাজ করছে যার এটার সঙ্গে প্রতিবাদে জড়িত তাদেরকে কীভাবে প্রতিহত করা যায়।’

জলবায়ু বিজ্ঞানীরা বলছেন, কপ কর্তৃপক্ষ জলবায়ু পরিবর্তন রোধ করতে গিয়ে পথ হারিয়ে ফেলেছে। তাই তারা লস এ‍্যান্ড ড‍্যামেজের আওতায় ক্ষতিপূরণের দিকে নজর না দিয়ে উল্টো পরিবেশকর্মীদের মোকাবিলা করতে প্রবেশ পথে সেনাবাহিনী মোতায়েনে বেশি ব‍্যস্ত।

বাংলাদেশ সরকারের প্রতিনিধিরাও একমত পোষণ করে বলছেন, কপ তার উদ্দেশ‍্য থেকে সরে গেলেও এই আয়োজনই বিপর্যস্ত দেশগুলোর একমাত্র ও শেষ ভরসা।

পরিবেশ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক জিয়াউল হক বলেন, ‘বর্তমানে যে বৈশ্বিক প্রেক্ষাপট সেটা আমাদের পরিবেশের জন্য অনুকূল পরিবেশ না। আমেরিকা সরে গেছে এখন যারা যারা মেজর দেশ রয়েছে তারাও সরে যেতে চাচ্ছে।’

গবেষণায় দেখা গেছে, বর্তমান গড় তাপমাত্রার গতি চলতে থাকলে খুব শিগগিরই ১ দশমিক ৫ তাপমাত্রা অতিক্রম করবে পৃথিবী। যার সবচেয়ে বেশী নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশে।

সেজু