নয়াদিল্লির ভোরের ঝাপসা চিত্র কুয়াশার জন্য নয়, বরং এর পেছনে দায়ী বিষাক্ত বাতাস। প্রতিবছর দীপাবলির সময় মাত্রাতিরিক্ত আতশবাজি পোড়ানোর জন্য নামতে থাকে ভারতের রাজধানীর বায়ুমান। এবার একিউআই সূচকে নয়াদিল্লির বেশ কিছু অঞ্চলে বায়ুমানের সূচক ছাড়িয়েছে ৪০০। বিষাক্ত এই বায়ু মানব স্বাস্থ্যের জন্য বিপজ্জনক।
শুধু আতশবাজিই নয়, প্রতিবেশি পাঞ্জাব ও হরিয়ানায় ফসলের অবশিষ্টাংশ পোড়ানোর কারণেও দূষিত হচ্ছে নয়াদিল্লির বায়ু। এমন পরিস্থিতিতে কৃত্রিম বৃষ্টির মাধ্যমে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের কথা ভাবছে রাজ্য সরকার। এরইমধ্যে বিষয়টি আমলে নিতে আবেদন করা হয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে।
ক্লাউড সিডিংয়ের মাধ্যমে গেল বছর বায়ু দূষণ কমিয়ে আনার চিন্তা করা হলেও আবহাওয়া অনুকূলে না থাকায় ভেস্তে যায় পরিকল্পনা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারকে সমন্বয় করার আহ্বান সাধারণ নাগরিকদের।
স্থানীয় একজন বলেন, ‘শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে। দিল্লিতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। শ্বাসকষ্টের রোগীরা সবচেয়ে বিপদের মধ্যে রয়েছেন। তাদের ভোগান্তি বাড়ছে।’
একজন ভারতীয় নাগরিক বলেন, ‘দূষণের কারণে চারপাশে ধোঁয়াচ্ছন্ন। হাঁটা চলার সময় শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে। গলায় খুশখুশে ভাব বাড়ছে।’
দিল্লির চেয়েও খারাপ পরিস্থিতি লাহোরে। পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের রাজধানীতে বায়ুমানের সূচক ছাড়িয়েছে ৪০০। চলতি সপ্তাহেই রেকর্ড সর্বোচ্চ ১১০০ ছুঁয়ে ফেলে সূচকের ঘর। তাই বেশ কয়েকদিন ধরেই বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত বায়ুর শহরের তালিকায় শীর্ষে লাহোরের নাম। এমন পরিস্থিতিতে শ্বাসকষ্টের রোগী দিয়ে ভরে উঠছে হাসপাতাল।
স্থানীয় একজন বলেন, ‘বাইরে থেকে খেলা শেষে বাসায় ফেরার পর আমার সন্তান অসুস্থ হয়ে পড়ে। ডাক্তারের কাছে আনার পর জানতে পারলাম ওর শ্বাস প্রক্রিয়ায় সমস্যা তৈরি হয়েছে। প্রাপ্ত বয়স্কদের তুলনায় শিশুরা সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়ছে। ওদের শ্বাস নিতে বেশি সমস্যা হচ্ছে।’
গেল সপ্তাহ থেকে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে লাহোরের সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। ৫০ শতাংশ সরকারি কর্মীদের হোম অফিস করার নির্দেশনা দিয়েছে রাজ্য সরকার। দিল্লির মতো লাহোরেও দূষণ মোকাবিলায় ক্লাউড সিডিংয়ের পরিকল্পনা চলছে।