স্নিগ্ধ সকালের কুয়াশা ভেজা ধানের শিষে মুক্তা দানার মতো শিশিরবিন্দু। দূর্বাঘাসের ওপর প্রতিটি শিশির কণা, বিলে ফুটে থাকা শাপলা যেন মনে করিয়ে দেয় হেমন্তের কথা। কৃষকের পাঁকা ধানের মৌ মৌ গন্ধ মনে নির্মল প্রশান্তি যোগানোর পাশাপাশি জানান দেয় সকালের হিম শীত, যেন আর আসতে বাকি নেই।
কুয়াশার চাদর ভেদ করে গ্রামের বুড়োদের ছুটোছুটি। হিম সকালে বাড়ির উঠানো ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা শিউলি, আর বেলি ফুলের গন্ধ নির্মল করছে গ্রামের বাতাসকে। পথের ধারে পাখির কিচির শব্দ হেমন্তের সকালে ছড়ায় একরাশ স্নিগ্ধতা। তবে গ্রাম-বাংলার প্রকৃতিতে শীত আসি আসি করলেও শহর জীবনে উষ্ণতার পরশ রয়েই গেছে।
স্থানীয় একজন বলেন, ‘এই হেমন্ত আসলেই আমরা জানতে পারি যে আর কিছুদিন পরই নবান্ন আসছে। আর সেই সাথে এই নতুন ধানের যে চাল এই নতুন ধানের যে পিঠা এগুলো প্রতিটি বাড়িতে আয়োজন হবে।
হেমন্তের শুরুতে উত্তর জনপদে শুরু হয় খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহের প্রস্তুতি। তাই তো প্রফুল্ল মনে গাছি এক গাছ থেকে আরেক গাছে বেয়ে উঠে। বুক চেতিয়ে থাকা খেজুর গাছের শরীরে বাটাল চালায় আপন মনে। কারণ প্রস্তুতি শেষ হলেই, রস থেকে গুড় বিক্রি করে ঘরে আনবেন নগদ টাকা।
একজন গাছি বলেন, ‘খেজুরের গাছ এই সময় পরিষ্কার করি। তারপর শীত পড়লে রসের যে কার্যকলাপ সেটা করি।’
ষড়ঋতুর দেশে ঋতু পরিবর্তনের সাথে সাথে ঘটে গ্রামীণ অর্থনীতির ধরনও। কৃষকের ঘরে নতুন ধান, গুড় বিক্রিসহ গতিশীল হতে থাকে ব্যবসা বাণিজ্যের। তাই তো ঋতু পরিবর্তন গ্রামীণ অর্থনীতির জন্য হয়ে উঠে আশীর্বাদ। সৃষ্টি হয় নতুন নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ।