রাত পেরিয়ে সকাল হলেও পরিবর্তনটা চারপাশ দেখে বোঝার উপায় নেই। আবার চারদিকের পরিবেশ বেশি দূর দেখারও জো নেই। রাতভর গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির মতো ঝরা কুয়াশা বন্ধ হয়নি।
এমন অবস্থা চলছে টানা এক মাস ধরেই। অব্যাহত শীতের দাপটে অতিষ্ঠ এ জেলার মানুষ। তাপমাত্রা ওঠা-নামার খেলায় সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়েছে জেলার খেটে খাওয়া মানুষ। সময়মতো কাজে যেতে পারছেন না বেশিরভাগ মানুষ। খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন ছিন্নমূল মানুষ।
পঞ্চগড়ে ঘুরতে আসা একজন বলেন, 'এখানে অনেক ঠান্ডা, কুয়াশায় কিছু দেখা যায় না। কুষ্টিয়া থেকে পঞ্চগড় ঘুরতে এসেছি, দুই জেলার তাপমাত্রার মধ্যে অনেক পার্থক্য আছে। এখানে এসে মনে হচ্ছে আমি দার্জিলিং চলে আসছি।'
শীতের সকালে ফাঁকা কুড়িগ্রামের রাস্তা। ছবি: এখন টিভি।
এদিকে কুড়িগ্রামে তাপমাত্রার পারদ আরও নিচে নেমে এসেছে। বয়ে যাচ্ছে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ। কুয়াশা আর কনকনে হিমেল হাওয়ার কারণে হাড় কাঁপানো শীতে কাঁপছে জনজীবন। এই জেলায় দ্বিতীয় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৬ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
নওগাঁয় কুয়াশার জন্য কিছু দেখা যায় না। ছবি: এখন টিভি।
ঠান্ডা বাতাস ও কনকনে শীতে বিপর্যস্ত উত্তরের আরেক জেলা নওগাঁর জনজীবনও। বৃহস্পতিবার (২৫ জানুয়ারি) এর তুলনায় শুক্রবার (২৬ জানুয়ারি) ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা কমেছে এই জেলায়। বর্তমানে তাপমাত্রা ৭ দশমিক এক দুই ডিগ্রি সেলসিয়াস। সারাদিন সূর্যের দেখা না মেলায় ব্যাহত হচ্ছে দৈনন্দিন কাজ। খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন অনেকে। অতিরিক্ত শীতে ক্ষতি হচ্ছে ফসলের।
কুয়াশায় কিছু দেখা না গেলেও কর্মের জন্য বের হয়েছে নিম্নআয়ের মানুষ। ছবি: এখন টিভি।
ঘনকুয়াশার চাদরে ঢেকে গেছে রাজশাহীর মাঠ-ঘাট প্রান্তর। কনকনে ঠান্ডা বাতাস ও ঘন কুয়াশায় জবুথবু হয়ে পড়েছে এখানকার মানুষ। তবে সবচেয়ে কষ্টে ছিন্নমূল ও শ্রমজীবীরা। ভোরে দূর-দূরান্ত থেকে কাজের সন্ধানে এসেও মিলছে না কাজ। কমেছে আয়-রোজগার। শুক্রবার এই জেলায় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা এই মৌসুমে জেরায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা।
এদিকে দক্ষিণাঞ্চলে তাপমাত্রা কিছুটা বাড়লেও কমেনি শীতের প্রকোপ। কুয়াশা ও হিমশীতল বাতাসে দিনের বেলাও হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করছে যানবাহন।
টানা কয়েকদিনের শীতে সিরাজগঞ্জের হাসপাতারগুলোতে বাড়তে শুরু করেছে ঠান্ডাজনিত রোগীর সংখ্যা। জ্বর, ঠান্ডা, কাশি ও নিউমোনিয়া ও নিয়ে প্রতিনিয়ত হাসপাতালে আসছেন রোগীরা। যাদের বেশিরভাগই শিশু।