জাতীয় নির্বাচনের পরই আশার আলো দেখাচ্ছে দেশের শেয়ার বাজার। তবে ফ্লোর প্রাইসের চক্করে সেই আলোর সুফল পাচ্ছে না অধিকাংশ বিনিয়োগকারী। তাদের কথা মাথায় রেখেই এবার পুঁজিবাজারের ফ্লোর প্রাইস তুলে নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।
লাভ-লোকসানের পুঁজিবাজারের অনেক চড়াই-উৎরাই দেখেছেন ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারী রনি। শেয়ারবাজারে লাভ যেমন করেছেন, গুজবের ফাঁদে পড়ে লোকসানও গুণতে হয়েছে অনেক সময়। তবে জাতীয় নির্বাচনের পর সূচকের উত্থান ও লেনদেন বৃদ্ধি কিছুটা আশার আলো দেখাচ্ছে তাকে।
রনি বলেন, ‘আশায় ছিলাম নির্বাচনের পর শেয়ার মার্কেট ভালো হবে। আমরা এখনও সেই আশা নিয়েই আছি।’
ফ্লোর প্রাইসে আটকে নিরব দর্শক হয়ে উর্দ্ধগতির শেয়ারবাজারে আফসোস করছেন অনেক ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারী। চাইলে লোকসান গুণেও প্রয়োজনে টাকা ক্যাশ করতে পারছেন না বিনিয়োগকারীরা। তারা বলেন, ‘একেবারে না হলেও ধাপে ধাপে ফ্লোর প্রাইস তুলে দেয়া খুবই জরুরি।’
বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, ২০২২ সালে ডিএসইতে দৈনিক গড় লেনদেন ছিল ৯৬০ কোটি টাকা। ২০২৩ সালে গড় লেনদেন গিয়ে দাঁড়ায় ৫৭৮ কোটি টাকায়। আগের বছরের তুলনায় ২০২৩ সালে গড় লেনদেন কমেছে ৪২ শতাংশ।
লেনদেনের হিসেব করে দেখা যায়, বাজার মূলধনের প্রায় ৬০ শতাংশ ২০২৩ সালে ফ্লোর প্রাইসে আটকে ছিলো। ফ্লোর প্রাইস বাজারের স্বাভাবিক গতি বাধাগ্রস্থ করছে বলে মত বাজার বিশ্লেষকদের।
পুঁজিবাজার বিশ্লেষক আবু আহমেদ বলেন, ‘ফ্লোর প্রাইসের বিষয়ে আমি প্রথম থেকে বলে আসছি। আর স্টকে প্রাইস নির্ধারণ করে দেয়াও সিকিউরিটিজ এক্সচেঞ্জ কমিশনের কাজ নয়।’
ব্যাংক ও ইনস্টিটিউশনের প্রায় ১৬ হাজার কোটি টাকা আটকে আছে ফ্লোর প্রাইসের চক্করে। পাশাপাশি বড় বিনিয়োগকারীদের প্রায় ৬ হাজার কোটি টাকা ফ্লোরের ফাঁদে। তবুও নতুন সরকার গঠনের পর বাজারে সূচক ও লেনদেন বেড়েছে। ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে স্বাভাবিক গতিতে বাজার চলতে দেয়ার পরামর্শ সংশ্লিষ্টদের।
ডিবিএ’র সাবেক সভাপতি আহমদ রশিদ লালী বলেন, ‘অবশ্যই ফ্লোর প্রাইস তুলে দেয়াটাই সঠিক সিদ্ধান্ত হবে। আর এটি তুলে দিলে মার্কেট উন্মুক্ত হবে।’
দেশের শেয়ার বাজারের প্রধান অন্তরায় গুজব, বলছে বিএসইসি। কেউ কেউ গুজব ছড়িয়ে ফায়দা তুলতে চায়। তাই ভালো কোম্পানি দেখে শেয়ার কেনার পরামর্শ দিচ্ছেন তারা।
ফ্লোর প্রাইস তুলে দেয়া নিয়ে যাতে কেউ ফায়দা তুলতে না পারে তাই দেখেশুনে এটি তুলে দেয়ার কথা জানান বিএসইসি’র কমিশনার ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ।