২০১৭ সালে জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতে ভর্তুকির পরিমাণ ছিল ৪ হাজার কোটি টাকা। যা ২০২৪ শেষে ৩২ হাজার কোটিতে দাঁড়াবে। ২০২৫ সালে এই পরিমাণ হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে ৪০ হাজার কোটি টাকা।
দেশের অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলায় ২০২২ সালে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের-আইএমএফ এর কাছে ঋণ চেয়ে আবেদন করে বাংলাদেশ। সেসময় ঋণের দেয়া শর্তে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে ভর্তুকির পরিমাণ কমাতে বলে সংস্থাটি।
এরই ধারাবাহিকতায় গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দাম বাড়িয়ে ভর্তুকির চাপ কমায় সরকার। এতে সবশেষ প্রতি বছর চারবার বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল আওয়ামী সরকার।
তবে ভর্তুকি তুলে নিলে যেসব চ্যালেঞ্জ রয়েছে তার মধ্যে প্রধান হচ্ছে দাম বেড়ে সাধারণ মানুষের ওপর চাপ তৈরি হওয়া। অথচ বিপিসিসহ কোম্পানিগুলো দাম না কমিয়ে মুনাফা ঠিক রাখায় দাম বৃদ্ধির বোঝা পড়ছে ভোক্তার ওপর। তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিশেষজ্ঞরা।
আজ সিপিডি আয়োজিত বাজারভিত্তিক জ্বালানি দাম নির্ধারণে সম্ভাবনা ও সংস্কার নিয়ে আলোচনায় উঠে আসে এই চিত্র।
এ সময় হাজার হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিয়েও তেলের দাম কেন কমছে না, সে প্রশ্ন তুলে কেন তেলের দাম এত বাড়লো তার সঠিক ব্যাখ্যা চেয়েছে পেট্রোল পাম্প ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন।
বিগত আওয়ামী সরকারের আমলে একের পর এক আইনের মাধ্যমে ব্যবসায়ী গোষ্ঠীকে যে সুবিধা দেয়া হয়েছে সেটা এ খাতের বড় ক্ষতি করেছে। সেই সাথে বিপিসি দাম নির্ধারণের পদ্ধতি ত্রুটিপূর্ণ বলেও উঠে আসে আলোচনায়।
ক্যাবের জ্বালানি উপদেষ্টা ড. এম শামসুল আলম বলেন, ‘বিগত সরকার ব্যবসায়ীদের সরকার ছিল। তারা তাদের স্বার্থ রক্ষা করতে গিয়ে নানা ধরনের আইনকানুন পলিসি করেছে।’
তবে এসব অভিযোগ মানতে নারাজ বিপিসির চেয়ারম্যান। তার দাবি, ৫০ হাজার কোটি টাকা লেনদেনের মধ্যে ৩ থেকে ৪ হাজার কোটি টাকা মুনাফা অনেক কম। তবে আগামী বছরের জানুয়ারি থেকে জুনে যে তেল আমদানি হবে সেখানে দাম কমানোর সুযোগ তৈরি হয়েছে বলে আশ্বস্ত করেন তিনি। ।
বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান আমিন উল আহসান বলেন, ‘আমি মনে করে যে, আগে যে পদ্ধতিতে ছিলাম তার থেকে ক্লিয়ার পদ্ধতিতে কিছুটা আসতে পেরেছি।’
বিগত সময়ে যারা অতিরিক্ত মুনাফা করেছে তাদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানান আলোচকরা। সেই সাথে ব্যবসায় প্রতিযোগিতা বাড়িয়ে সাধারণ মানুষের জন্য এ খাতের দাম সহনীয় পর্যায়ে আনার পরামর্শ তাদের।