অগ্নিদুঘর্টনায় গেল বছরের অক্টোবরে বাংলার সৌরভ ও বাংলার জ্যোতি পরিত্যক্ত হওয়ার পর জাতীয় পতাকাবাহী প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশনের বহর আরো ছোট হয়। বর্তমানে সমুদ্রগামী জাহাজ আছে মাত্র পাঁচটি। এতো কম জাহাজ দিয়ে শিপিং ব্যবসায় টিকে থাকা কঠিন। তাই মুনাফা ধরে রাখতে নতুন জাহাজ কেনা জরুরি হয়ে পড়েছে।
৬ বছর আগে চীনা ঋণে শিপিং কর্পোরেশনের নতুন জাহাজ কেনার উদ্যোগ অবশেষে বাস্তবায়িত হচ্ছে। সম্প্রতি চীনের এক্সিম ব্যাংকের সাথে বাণিজ্য চুক্তি করেছে অর্থনৈতিক সর্ম্পক বিভাগ।
এর আগে ২০২৩ এর অক্টোবরে চায়না ন্যাশনাল মেশিনারি এক্সপোর্ট এন্ড ইমপোর্ট কর্পোরেশন (সিএমসির) সঙ্গে ২ হাজার ৬০০ কোটি টাকা ব্যয়ে চারটি জাহাজ কেনার চুক্তি করে বিএসসি। কথা ছিল এই অর্থে ছয়টি জাহাজ কেনা হবে। কিন্তু প্রক্রিয়াগত জটিলতা ও দরকষাকষিতে আড়াই বছরে ডলার ও নির্মাণ উপকরণের দাম বাড়ায় সেটি সম্ভব হয়নি।
বাণিজ্য চুক্তি হওয়ায় পর এখন অপেক্ষা ঋণ চুক্তি। শিপিং কর্পোরেশনের প্রত্যাশা আগামী ৩ থেকে ৪ মাসের মধ্যে ঋণ চুক্তি সই হবে। এর পর শুরু হবে জাহাজ নির্মাণ।
বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কমোডর মাহমুদুল মালেক বলেন, 'কর্মাশিয়াল চুক্তি হয়ে গিয়েছে। এখন সিডকা যদি আমাদের লোন দেয় তাহলে লোন চুক্তি সাইন হবে। এইটা হয়ে গেলে আমাদের জাহাজ নির্মাণের ফেজ শুরু হবে।'
বর্তমানে ইস্টার্ন রিফাইনারির আমদানি করা ১৩ লাখ টন অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের পুরোটা বিদেশি জাহাজ ভাড়া করে পরিবহন করে বিএসসি। এতে বিপুল অঙ্কের বৈদেশিক মুদ্রা চলে যাচ্ছে বাইরে।
ক্রয়ের প্রক্রিয়ায় থাকা চারটি জাহাজের মধ্যে ১ লাখ ১৪ হাজার টন ধারণ ক্ষমতার দুটি মাদার ট্যাংকার দিয়ে বিপিসির তেল আমদানির টার্গেট শিপিং কর্পোরেশনের আর ৮২ হাজার টন ধারণ ক্ষমতার দুটি বাল্ক কার্গো জাহাজে পরিবহন করবে কয়লাসহ অন্যান্য পণ্য। এতে শুধু বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় নয় লাভবান হবে বিএসসি।
ব্যবস্থাপনা পরিচালক কমোডর মাহমুদুল মালেক বলেন, 'যেটা আমরা বিদেশি ভেসেলে নিয়ে আসি সেটা এখন আমাদের নিজস্ব ভেসেলে আনা হচ্ছে। যার ফলে নিজস্ব অর্থ দেশের মধ্যে থেকে যাবে পাশাপাশি বিএসসি লাভবান হবে।'
অভিযোগ উঠেছে, বাজারদরের চেয়ে বেশি দামে জাহাজ কিনছে বিএসসি। শিপিং সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রক্রিয়া শুরুর পর দ্রুত জাহাজ কিনলে অনেক কম দরে জাহাজ কেনা যেত।
বর্তমান বিএসসির বহরে থাকা ৫টি জাহাজের মধ্যে ৪টি অয়েল ট্যাংকার ও ১টি বাল্ক কার্গো জাহাজ। চীন থেকে কেনা সবগুলো জাহাজের ধারণক্ষমতা ৩৯ হাজার টন।