রপ্তানি কর নিয়ে জটিলতা। তাই কেন্দ্রীয় সরকারের ছাড়পত্র মিললেও ভারতের দক্ষিণ দিনাজপুর থেকে বাংলাদেশে পেঁয়াজ আসার ব্যবস্থা থমকে গেছে।
বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে দিনাজপুর-হিলিতে রয়েছে ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট, যেখান থেকে চলে দুই দেশের নাগরিকদের বৈধ পারাপার। একই চেকপোস্ট দিয়ে চলে বাংলাদেশ-ভারতের আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যও। দিনে অন্তত ২৬০টি পণ্যবাহী গাড়ি সীমান্ত পার করে। বাংলাদেশ থেকে হাতেগোনা কয়েকটি সামগ্রী ভারতে গেলেও ভারত থেকে বাংলাদেশে আসে পাথর, পেঁয়াজ, মরিচ, চিনি, মাছ, জিরা, ফলমূল, মশলা, কাপড়সহ যাবতীয় সামগ্রী।
অভ্যন্তরীণ বাজার স্থিতিশীল রাখতে ভারত সরকার পেঁয়াজ রপ্তানি নিষেধাজ্ঞার জেরে গেলো ডিসেম্বর থেকেই হিলি সীমান্ত দিয়ে বন্ধ ছিল পেঁয়াজ রপ্তানি। গেলো শনিবার (৪ মে) ভারতের কেন্দ্রীয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বিজ্ঞপ্তি জারি করে পেঁয়াজ রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে। পরদিন দুই দেশের ব্যবসায়ীদের মধ্যে চুক্তি হওয়ার কথা থাকলেও শুল্ক বিভাগের বিজ্ঞপ্তির নিয়মে থমকে যায় বাংলাদেশে পেঁয়াজ রপ্তানির প্রক্রিয়া। আদৌও এবার পেঁয়াজ রফতানি হবে কি-না, তা নিয়েও সংশয় দেখা দিয়েছে।
ভারত হিলি বন্দর শুল্ক দপ্তরের কর্মকর্তা পান্নালাল বণিক বলেন, 'অনেক দিন পর পেঁয়াজ রপ্তানি শুরু করলো কেন্দ্রীয় সরকার। এর উপর ৪০ শতাংশ শুল্ক বসানো হয়েছে। তাতে বাংলাদেশিরা পণ্যটা নিত চাচ্ছে না।'
প্রায় পাঁচ মাস পর রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা শিথিলে উপযুক্ত দাম পাওয়ার আশায় ছিলের দক্ষিণ দিনাজপুরসহ পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন প্রান্তের পেঁয়াজচাষীদের। সংশ্লিষ্টরা জানান, চাহিদা বেশি থাকলে শুধু হিলি চেকপোস্ট দিয়েই দিনে ৪০ লরি পেঁয়াজ বাংলাদেশে পাঠিয়ে থাকেন ভারতীয় ব্যবসায়ীরা। চাহিদা স্বাভাবিক থাকলেও প্রতিদিন অন্তত ২৫ ট্রাক পেঁয়াজ ঢোকে বাংলাদেশে। কিন্তু বাড়তি শুল্ক আরোপের জেরে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের এক সপ্তাহেও সীমান্ত পার হতে পারেনি পেঁয়াজবাহী কোনো ট্রাক। হিলির পাশাপাশি বেনাপোল-পেট্রাপোল সীমান্তেও একই পরিস্থিতি।
ভারতের রপ্তানিকারকরা বলছেন, পোর্টালে বুকিংয়ের সময় ট্রাকপ্রতি ভারতীয় মুদ্রায় ১০ হাজার রুপি এবং কেন্দ্রীয় সরকারের ধার্য করা ন্যূনতম রপ্তানি মূল্য প্রতি মেট্রিক টন ৫৫০ ডলারের চুক্তিতে পেঁয়াজ রপ্তানির প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল। কিন্তু সোমবার (৬ মে) থেকে বাংলাদেশে রপ্তানির পেঁয়াজ সীমান্তে পৌঁছাতে শুরু করলে অতিরিক্ত ৪০ শতাংশ এক্সপোর্ট ডিউটি বা রপ্তানি শুল্ক আরোপের কথা জানতে পারেন ব্যবসায়ীরা।
সব খরচের পর বাংলাদেশের বাজারে ভারতীয় পেঁয়াজের দাম অনেকটা বেড়ে গেলে চাহিদা ও বিক্রি কমে যাবে বলে ক্ষতির শঙ্কায় শুল্ক দিয়ে পেঁয়াজ ছাড়ানোর বদলে বরং সীমান্ত দিয়েই গাড়ি ফেরত পাঠিয়ে দিচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। এমন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশে পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ থেকে যাবে বলে ক্ষতির শঙ্কায় ভারতের ব্যবসায়ীরা।