পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে গেলো ১৬ বছরে দৃশ্যমান উন্নয়ন দেখাতেই দেশের ৮ বিমানবন্দরে নেয়া হয়েছিলো ১৫টি প্রকল্প। যার বাজেট ধরা হয়েছিলো প্রায় ৩২ হাজার কোটি টাকা।
ধীরে ধীরে সেই প্রকল্প গুলোর গোমড় ফাঁস হতে চলেছে। এসব প্রকল্পের মধ্যে সবচেয়ে বড় শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনাল। ইতোমধ্যেই এই টার্মিনাল নির্মাণে ৪ হাজার কোটি টাকা লুটপাটের অভিযোগে অনুসন্ধানে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন।
এছাড়াও শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের রাডার কেনায় ২০০ কোটি, কক্সবাজার বিমানবন্দরের টার্মিনাল ও রানওয়ে নির্মাণ প্রকল্পে ১৫০ কোটি ও সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের একটি প্রকল্পে ২১২ কোটি টাকাসহ মোট ৮১২ কোটি টাকা দুর্নীতির ৪টি মামলা করেছে দুদক।
এমন অবস্থায় শেখ হাসিনা সরকারের আমলে অপরিকল্পিত ও অবৈধভাবে নেয়া বিভিন্ন প্রকল্প বাতিলের উদ্যোগ নিয়েছে বেবিচক। উন্নয়নমূলক কাজে অর্থ মন্ত্রণালয়ের বাধ্যবাধকতা, ডিপিডি না মানা ও ফিজেবিলিটি স্টাডি করার প্রমাণ না পাওয়ায় এগুলো বাতিল করেছে বেবিচক। যার বাজেট প্রায় ৩০০ কোটি টাকা।
বেসরকারি বিমান চলাচল কর্তৃুপক্ষের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মঞ্জুর কবীর ভূঁইয়া বলেন, ‘কিছু কিছু কাজ অনেক আগে নেয়া হয়েছিল। বর্তমান পরিপ্রেক্ষিতে আমার মনে হয়েছে কাজগুলো না করলেও চলবে। যে কারণে অপারশেনাল কাজগুলোকে গুরুত্ব দিচ্ছি। সেই সঙ্গে আমাদের অপারেশন সক্ষমতা বাড়ানোর চেষ্টা করে যাচ্ছি।’
উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর মধ্যে আছে থার্ড টার্মিনালের দক্ষিণ পাশে স্টেকহোল্ডারদের জন্য অফিস ভবন, চট্টগ্রাম শাহ আমানত বিমানবন্দরে ৬ তলা আবাসিক ভবন, সিলেট ওসমানী বিমানবন্দরে সেন্ট্রাল স্টোর, কক্সবাজার বিমানবন্দরে ডি টাইপ কোয়ার্টার, বাগেরহাট খানজাহান আলী বিমানবন্দরে অফিস ভবন ও রেস্ট হাউজসহ মোট ১৬ টি প্রকল্প।
অ্যাভিয়েশন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ছোট ছোট প্রকল্পে পাশাপাশি গেলো ১৫ বছরে নেয়া বড় প্রকল্পগুলোকেও পুনর্মূল্যায়ন করা দরকার।
অ্যাভিয়েশন বিশেষজ্ঞ উইং কমান্ডার (অবসরপ্রাপ্ত) এটিএম নজরুল ইসলাম বলেন, ৩০০ কোটি টাকার প্রকল্প বন্ধ করা হচ্ছে বা হয়েছে এটা বড় কথা না। বরংচ পুরোটা আবার পর্যালোচনা করা উচিত। আমি কোনটা করবো আর কোনটা করবো না। যাত্রীদের আরামের বিষয়টি আমাদের দেখতে হবে। কিন্তু এর আগে আমার মনে হয়েছে এটা করা জরুরি ছিল যে আমি এয়ারপোর্ট কতক্ষণ ব্যবহার করবো কীভাবে ব্যবহার করবো এবং রানওয়ে সার্ভিস কেমন হবে।’
তিনি বলেন, ‘এখন যেহেতু সময় বা প্রেক্ষাপট পরিবর্তিত হয়েছে যদি তারা মনে করেন রিভিউ করতেই পারেন।’