খালে ভাসছে মেহগনি, চাম্বল, রেইনট্রিসহ দেশীয় প্রজাতির গাছ। ট্রলারের সাথে বেঁধে নদীতে ভাসিয়ে আনা হচ্ছে গাছের গুঁড়ি। কেউ বিক্রির জন্য আনছেন কেউবা কিনে নিয়ে যাচ্ছেন ট্রলার বোঝাই করে। সন্ধ্যা নদীর তীর ঘেঁষে নেছারাবাদ উপজেলার ভাসমান চরগুলোয় শত বছর ধরে চলছে কাঠের ব্যবসা।
দেশজুড়ে এই মোকামের পরিচিত থাকায় বিভিন্ন স্থানের ব্যবসায়ীরা এই ভাসমান হাটে কাঠ কেনা-বেচা করেন। ছোট-বড় ট্রাক, লঞ্চ, ট্রলার ও কার্গোযোগে কাঠ যায় বিভিন্ন স্থানে। কিন্তু এখানে রয়েছে নানা প্রতিকূলতা।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, সড়ক ব্যবস্থার উন্নয়ন আর খালটি ভালোভাবে খনন করা গেলে কাঠ উঠানো ও নামানোয় সুবিধা হয়। এছাড়া দূর দুরান্ত থেকে আসা ক্রেতাদের থাকা, খাওয়ার ব্যবস্থা করা গেলে বাড়বে ক্রেতা সমাগম।
নেছারাবাদে কাঠের এই ব্যবসায়ের সাথে প্রত্যক্ষ-পরোক্ষভাবে ভাবে জড়িত ১০ হাজারের বেশি মানুষ। মৌসুমে এখানকার শ্রমিকদের জনপ্রতি মাসিক আয় গড়ে ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা।
ঐতিহ্যে ও ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসারে ইতিমধ্যে কাঠ মহাল হিসেবে ঘোষণাও করা হয়েছে। এছাড়া খাল খনন, সরকারি সুযোগ-সুবিধাসহ ব্যবসায়ীদের নিরাপত্তায় উপজেলা প্রশাসন নজর রাখছে বলে জানান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা।
পিরোজপুরের নেসারাবাদ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মনিরুজ্জামান বলেন, ‘জেলা প্রশাসনের তত্ত্ববধানে সরকার এটি ইজারা দিয়ে থাকে। এখান থেকে সরকারি রাজস্ব আয় হচ্ছে। সুযোগ সুবিধা থেকে শুরু করে খাল খননসহ সব বিষয়ে আমরা তাদের পাশে আছি। তারা যেন ভালোভাবে ব্যবসা করতে পারে এবং আরো লোকের যাতে কর্মসংস্থান হয় সেদিকে আমাদের লক্ষ্য আছে।’
পিরোজপুরের নেসারাবাদে কাঠের এই ব্যবসাকে কেন্দ্র করে শতাধিক আড়ত গড়ে উঠেছে। প্রকারভেদে প্রতি সিএফটি কাঠ ৩০০ টাকা থেকে ১২০০ টাকা। আড়তগুলোতে মৌসুমে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৪ কোটি টাকার লেনদেন হয়।