অর্থনীতি
0

এসডিজি বাস্তবায়নে এখনো পিছিয়ে বাংলাদেশ

বেসরকারি তথ্য যুক্তের পক্ষে এনজিও প্রতিনিধিরা

এসডিজি বাস্তবায়নে বিশ্বের অনেক দেশ বেশ এগিয়ে গেলেও পিছিয়ে আছে বাংলাদেশ। টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট বাস্তবায়নে দেশে মূল্যায়ন থাকা প্রয়োজন বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। আর এক্ষেত্রে সরকারি ডেটার পাশাপাশি বেসরকারি ডেটা যুক্ত করার পক্ষে এনজিও প্রতিনিধিরা। রাজধানীতে এসডিজি বাস্তবায়ন নিয়ে নাগরিক প্লাটফর্মের এক আলোচনায় এসব মত উঠে আসে।

টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার কর্মসূচি নিয়ে বাংলাদেশকে ২০২৫ সালের জুলাই মাসে ন্যাশনাল ভলেন্টারি রিভিউ প্রতিবেদন জাতিসংঘে জমা দিতে হবে। যেখানে স্বাস্থ্য, লিঙ্গ সমতা, অর্থনৈতিক উন্নয়ন, পানির নিচের জীবন এবং লক্ষ্য অর্জনে অংশীদারদের সাথে সম্পর্ক এই পাঁচটি বিষয় উল্লেখ থাকবে। বাংলাদেশের সাথে আরো ৩৮ টি দেশও এই প্রতিবেদন জাতিসংঘে জমা দিবে।

কেমন হতে পারে জাতিসংঘে জমা দেয়া সেই প্রতিবেদন অথবা কতটুকুই বা এগিয়েছে, এ নিয়ে সংলাপের আয়োজন করে এসডিজি বাস্তবায়নে নাগরিক প্লাটফর্ম।

যেখানে সরকারি বেসরকারি বিভিন্ন উন্নয়ন সংস্থা, সরকারের প্রতিনিধি, সরকারি বেসরকারি বিভিন্ন অংশীজন এবং বিশেষজ্ঞরা উপস্থিত ছিলেন।

এসময় তারা বিগত সরকারের আমলে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার অগ্রগতি নিয়ে সমালোচনা করেন। বলেন সরকারি সংস্থা এনজিও বুর‍্যোর সাথে বেসরকারি স্টেকহোল্ডারদের কোন সম্পর্কই ছিলো না। ফলে উদ্যোক্তা ও আত্মকর্মসংস্থান তৈরিতে পিছিয়ে পড়েছে বাংলাদেশ।

সংলাপে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রায় সমাজের সকল শ্রেণি পেশার মানুষকে একসাথে নিয়ে কাজ করার আহ্বান জানান বিশেষজ্ঞরা। বলেন, শিশু, তরুণ, দালিত, প্রতিবন্ধী, নারী ও প্রান্তিক অঞ্চলে যারা জলবায়ু পরিবর্তনের শিকার তাদেরকে অগ্রাধিকার দিয়ে কাজ করতে হবে।

সিপিডির সম্মানীয় ফেলো ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আমাদের যে ৬টি কমিটি কাজ করছে, এর সঙ্গে সরকারের যে কাজ এটা সমন্বয় কীভাবে করা হবে সে বিষয়টাও কিন্তু এসেছে।’

বিশ্বে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার মাত্র ১৯ শতাংশ বাস্তবায়ন হয়েছে। যেখানে এসডিজি লক্ষ্যমাত্রা বাস্তবায়নে বাংলাদেশ আরো পিছিয়ে আছে বলে মন্তব্য করেন জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী গোয়েন লুইস। লিঙ্গ সমতা, পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর উন্নয়ন ও তথ্যপ্রবাহ নীতিমালাকে প্রাধান্য দিয়ে কাজ করারও পরামর্শ দেন তিনি।

এদিকে তথ্য উপাত্ত মূল্যায়ন করে সরকারি বেসরকারি স্টেকহোল্ডারদের একসাথে কাজ করার আহ্বান জানান, অর্থনীতিবিদ ও নাগরিক প্লাটফর্মের আহ্বায়ক ও সম্মানীয় ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। বলেন, আগের সরকারের আমলে আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সহযোগীদের সাথে সম্পর্ক খুব একটা ভালো ছিল না, যা ভালো করার এখনই সময়।

সম্মানীয় ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, ‘এটা আমাদের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক। আমাদের ‍উন্নয়ন সহযোগীদের সঙ্গে সম্পর্ক মূল্যায়ন করারও একটা সুযোগ। আগে সেরকমভাবে এ সুযোগ নেয়া হয়নি। আমরা মনে করি এটা করার সুযোগ এসেছে।’

তিনি বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকারকে আহ্বান জানিয়েছি যে, আপনারা একটা বৃহত্তর পরিসরে নতুন প্রেক্ষিতে কেমন করে উন্নয়ন সহযোগীদের সঙ্গে আলোচনার সূত্রপাত করার সুযোগ আছে কী না সেটা দেখার।’

তবে অন্তর্বর্তী সরকার টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে কাজ করে যাচ্ছে বলে জানান প্রধান উপদেষ্টার এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ।

এছাড়াও সংলাপে সরকারকে জবাবদিহিতার স্বচ্ছতা নিশ্চিত করারও পরামর্শ দেন বক্তারা।

এএইচ