পাড়ার মোড়ে সিগারেট বিক্রির দোকান। সারাদেশে এমন হাজার হাজার দোকানসহ পথেঘাটে বিক্রি হচ্ছে বিদেশি নানা ব্র্যান্ডের সিগারেট। কিন্তু এসব সিগারেট আসল না নকল তা কি কেউ যাচাই করে?
যার সুযোগ নিচ্ছে অসাধু চক্র। চট্টগ্রামে টানা ২ দিনের অভিযানে চোখ ছানাবড়া কাস্টমস ও ভ্যাট কর্মকর্তাদের। সন্ধান মিললো দেশি-বিদেশি নকল সিগারেট তৈরির চারটি গুদাম ও কারখানা। নগরীর হালিশহরের নয়াবাজার, বউবাজার, রামপুরাসহ বিভিন্ন পাড়ার ছোট অলিগলিতে বিশাল বিশাল গুদাম। যেখানে মিললো সিগারেট তৈরির মেশিন, লেবেল ও প্যাকেটসহ লাখ লাখ উপকরণ।
স্থানীয়রা জানান, তারা এন্টারপ্রাইজ নামে এ প্রতিষ্ঠানটির মালিক চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সাবেক কাউন্সিলর আবদুর সবুর লিটন। ৫ আগস্টের পর থেকে তিনি পলাতক। তবে এসব গুদামে দীর্ঘদিন সিগারেট তৈরি হলেও তা ছিল অনেকটাই লোকচক্ষুর অন্তরালে।
স্থানীয়দের একজন বলেন, ‘এখানে যে এইটা অবৈধ জিনিস তা আমরা জানতাম না। তবে গোডাউন এইটা ছিল তা জানতাম কিন্তু প্রবেশ করতে পারতাম না।’
অভিযানে এসে কাস্টমস গোয়েন্দা ও ভ্যাট কর্মকর্তারা জানান, এ প্রতিষ্ঠানের সিগারেট তৈরির অনুমোদন নেই। তারা মূলত বাজারে অপরিচিত কিছু ব্র্যান্ড ও নামকরা বিদেশি ব্র্যান্ডের নকল সিগারেট বাজারে ছড়িয়ে দিতো। এছাড়াও সিগারেটের প্যাকেটের গায়ে সরকারি রাজস্বের কাগজ, যা ব্যান্ডরোল নামে পরিচিত সেটিও পাওয়া যায় প্রায় ৩ কোটি ৩৭ লাখ টাকার। চারটি গুদামে মোট কী পরিমাণ সিগারেট তৈরির উপকরণ মিলেছে তা গণনা চলছে। সব মিলিয়ে শত শত কোটি টাকা ভ্যাট ফাঁকি দেয়া হয়েছে বলে ধারণা করছেন তারা।
কাস্টমস এক্সাইজ অ্যান্ড ভ্যাটের অতিরিক্ত কমিশনার তফসির উদ্দিন ভুঁইয়া বলেন, ‘যেকোনো প্রতিষ্ঠানে কার্যক্রমের সময় ভ্যাট আইনে গোডাউনের নিবন্ধন নিতে হয়। কিন্তু এরা নিবন্ধন না করেই কার্যক্রম চালাচ্ছিল যা অবৈধ।’
চট্টগ্রাম নগরীসহ আশপাশের জেলা-উপজেলায় এমন আরো নকল সিগারেট তৈরির গুদাম থাকতে পারে বলে ধারণা গোয়েন্দাদের। এতে প্রতিবছর সরকার বিপুল রাজস্ব হারাচ্ছে মনে করছেন তারা।
চট্টগ্রামের কাস্টমস শুল্ক গোয়েন্দা বিভাগের যুগ্ম কমিশনার সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘তিনটা গোডাউনে আমাদের যৌথ অভিযানে সিগারেটের অবৈধ উপকরণ জব্দ করা হয়েছে।’
দেশে এ ধরনের গুদাম, কারখানার বাইরে বিভিন্ন সময় চট্টগ্রাম বন্দর ও বিমানবন্দর ব্যবহার করেও মিথ্যা ঘোষণায় বিপুল পরিমাণ সিগারেট এনে থাকে কিছু অসাধু চক্র।