পথেঘাটে-রাস্তায় লাখো মানুষের চলাফেরা। ক্লান্তি দূর করতে টং দোকানে এক কাপ চায়ের সাথে বিস্কুট কিংবা কেক খাওয়া অনেকের অভ্যাস। তবে এসব খাবার স্বাস্থ্যসম্মত কি না, তা নিয়ে রয়েছে প্রশ্ন। কীভাবে কোন পরিবেশে এগুলো তৈরি হচ্ছে। বাজারজাতই বা করা হচ্ছে কীভাবে?
খুলনার কয়লাঘাট কাগজীবাড়ি এলাকা। এখানে অন্তত ১২টি কারখানায় প্রতিদিন তৈরি হচ্ছে নানা ধরনের বিস্কুট, কেক, রুটি আর ক্রিম রোল। শহিদুল বেকারি এরকমই একটি কারখানা। কারখানায় ঢুকেই চোখে পড়ে নোংরা পরিবেশ, মেঝেতে ছড়ানো ময়লা, আর পুরনো পোড়া তেল। এমন অবস্থার কথা জানতে চাইলে কর্মীদের আসে নানা অযুহাত।
শুধু তেল নয়, স্বাস্থ্যবিধি মানারও কোনো বালাই নেই। খোলা হাতে, শরীরে কোন সুরক্ষা ব্যবস্থা ছাড়াই বানানো হচ্ছে এসব পণ্য। আর কাঁচামাল? সেটাও মানহীন। তৈরি করা খাবার ঘণ্টার পর ঘণ্টা পড়ে থাকে খোলা জায়গায়। ।
আইন অনুযায়ী, একটি বেকারি কারখানা চালাতে বিএসটিআই অনুমোদন, সেনেটারি লাইসেন্স, ট্রেড লাইসেন্সসহ নানা ছাড়পত্র প্রয়োজন। যদিও খুলনায় বেশিরভাগ কারখানাই এসব ছাড়াই চালু রয়েছে। ২০২৪ সালে খুলনায় ৮৭টি প্রতিষ্ঠান আবেদন করলেও অনুমোদন পেয়েছে ৭৩টি। তবে অনুমোদনের বাইরে বেকারি কারখানা রয়েছে শতাধিক।
খুলনা বিএসটিআই সহকারী পরিচালক মনির হোসেন বলেন, ‘কারখানাগুলো স্বাস্থ্যগত ও পরিবেশগত অবস্থা দেখে এবং প্রোডাকশন সঙ্গে জড়িত যেসব মেশিনারিজ আছে সেগুলো যাচাই-বাছাই করে বেকারি পণ্যে লাইসেন্স দিয়ে থাকি। যদি কোনো প্রতিষ্ঠান লাইসেন্স ছাড়া মানহীন পণ্য উৎপাদন ও বিক্রি করে আমাদের জানানো হলে আমরা তখন আইনগত ব্যবস্থা নেব। ’
অভিযোগ রয়েছে, কিছু অসাধু কর্মকর্তা অনিয়মের মাধ্যমে সেনিটাইজেশন লাইসেন্স দিয়ে দিচ্ছেন অনেক কারখানাকে। এছাড়া তদারকি করার জনবল সংকটের কথাও জানান এই কর্মকর্তা।
খুলনা সিভিল সার্জন ডা. এস এম কামাল হোসেন বলেন, ‘উপজেলা পর্যায়ে আমাদের একটা সেনিটেশন অফিসার আছে তারা নিয়মিতভাবে এটা পরিদর্শন করবে এবং তাদের সুপারভিশন আমাদের জানাবে।’
অস্বাস্থ্যকর এসব বেকারি পণ্য খেয়ে সহজেই নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ। তাই এসব পণ্যের কারখানাগুলো তদারকির পাশাপাশি সকলকে সচেতন হওয়ার আহ্বান বিশেষজ্ঞদের।