শিকড়
সংস্কৃতি ও বিনোদন
0

শুরু হলো পাহাড়িদের বর্ষবরণ উৎসব বৈসাবি

বান্দরবান

বান্দরবানে চাকমা ও তঞ্চঙ্গ্যা সম্প্রদায়ের সাঙ্গু নদীতে জলবুদ্ধ ও গঙ্গাকে ফুল নিবেদনের মধ্যদিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামের সবচেয়ে বড় সামাজিক উৎসব বিঝু ও বিষু উৎসব শুরু হয়েছে।

শুক্রবার (১২ এপ্রিল) সকালে সাঙ্গু নদীতে জলবুদ্ধ ও গঙ্গাকে এ ফুল নিবেদন করে চাকমা ও তঞ্চঙ্গ্যা সম্প্রদায়ের হাজারো শিশু- নারী পুরুষ।

পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত ১১টি সম্প্রদায়ের মধ্যে শুধু বম, লুসাই, পাংখোয়া তিনটি সম্প্রদায় ব্যতীত অন্য সকল সম্প্রদায় ভিন্ন ভিন্ন নামে এই বৃহৎ সামাজিক উৎসব প্রতিবছর পালন করে থেকে।

বিঝু ও বিষু উপলক্ষে নদীতে ফুল নিবেদন করছেন পাহাড়িরা

চাকমা ও তঞ্চঙ্গ্যা সম্প্রদায় এদিন ফুল দিয়ে নদীতে পূজা করে, ফুল দিয়ে ঘর সাজায়। আগামীকাল থেকে ঘরে ঘরে নানান পদের খাবারের আয়োজন করা হবে। একে অপরের বাড়িতে ঘুরে বেড়ান তারা। আর এজন্য কোনো ধরনের নিমন্ত্রণেরও প্রয়োজন নেই। যদিও বা আধুনিক এ যুগে এখন অনেকে একে অপরকে নিমন্ত্রণ করে থাকে।

১৪এপ্রিল বয়োজে্যষ্ঠদেরকে গোসল করিয়ে তরুন -তরুনীরা আর্শীবাদ চান। এদিনও বাড়িতে বাড়িতে থাকে খাবারের আয়োজন। পাড়াপ্রতিবেশি ও আত্মীয়দের করা হয় নিমন্ত্রণ।

হ্যাপি চাকমা নামের একজন বলেন, 'প্রতিবছর ১২ এপ্রিল পুরাতন বছরকে বিদায় দিয়ে নতুন বছরকে স্বাগত জানানো, গতবছর ভালো ছিলাম, আগামী বছরও ভালো থাকার আর্শীবাদ প্রার্থণা করে জলবুদ্ধ ও মা গঙ্গাকে ফুল দিয়ে পূজা করি। সাঙ্গুনদীতে সকলের মঙ্গল কামনা করি।'

সাঙ্গু নদীতে ফুল নিবেদনের মধ্য দিয়ে পাহাড়ে বৈসাবি উৎসব শুরু

সুচিত্রা তঞ্চঙ্গ্যা বলেন, 'নদীতে ফুল দিয়ে পূজা করা আমাদের ঐতিহ্য, প্রতিবছর ১২ এপ্রিল তিন পার্বত্য জেলায় ১১টি সম্প্রদায় উৎসবমূখর পরিবেশে বিষু উৎসব পালন করে থাকে। জলবুদ্ধকে, "মা " গঙ্গাকে ফুল দিয়ে পূজা করে নিজের, পরিবারের তথা সকলের মঙ্গল কামনা করে নদীতে ফুল নিবেদন করে।'

'এদিকে প্রতিটি ফোঁটাই হোক শান্তির দূত, পৃথিবী হোক শান্তিময় জলধারা' এই স্লোগানে আগামী শনিবার থেকে চারদিনব্যাপী বান্দরবান পাহাড়ি অঞ্চলে শুরু হচ্ছে জলকেলী উৎসব বা মাহাঃ সাংগ্রাই পোয়েঃ। বুধবার স্থানীয় রেস্টুরেন্টে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এসব কথা জানান উৎসব উদযাপন পরিষদের সভাপতি মংমংসিং মারমা ও সাধারণ সম্পাদক উক্যসিং মারমা।

বান্দরবানের সার্বিক প্রেক্ষাপটে এবারের বিঝু, বিষু, সাংগ্রাই, বৈসু একটু ভিন্ন। গত ২ এপ্রিল ও ৩ এপ্রিল রুমা ও থানচিতে কেএনএফ কর্তৃক ব্যাংক ডাকাতি ও অস্ত্রলুটের ঘটনায় সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে যৌথবাহিনীর সাড়াশি অভিযান চলছে পাহাড়জুড়ে। সেজন্য রুমা, থানচি ও রোয়াংছড়ি দুর্গম এলাকাগুলোতে আতংক বিরাজ করছে। বৈসাবি তেমন উৎসবমূখর পরিবেশে উৎসব পালন হচ্ছে না।

এসএসএস

এই সম্পর্কিত অন্যান্য খবর  

No Article Found!