গতকাল (সোমবার, ১০ নভেম্বর) আদালত কেনটাকির সাবেক কাউন্টি কর্মকর্তা কিম ডেভিসের করা আপিল খারিজ করে দেয়। ডেভিস ২০১৫ সালে ধর্মীয় কারণে সমলিঙ্গের দম্পতিদের বিয়ের লাইসেন্স দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিলেন। ফলে তিনি আদালত অবমাননার দায়ে কারাভোগ করেন এবং পরে ক্ষতিপূরণসহ প্রায় তিন লাখ ৬০ হাজার ডলার জরিমানার মুখে পড়েন।
সর্বোচ্চ আদালত রায়ের কোনো ব্যাখ্যা না দিলেও এ সিদ্ধান্তে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক অধিকার কর্মীরা স্বস্তি প্রকাশ করেছেন।
হিউম্যান রাইটস ক্যাম্পেইনের সভাপতি কেলি রবিনসন বলেন, ‘আজ ভালোবাসা আবার জয়ী হয়েছে। সরকারি কর্মকর্তাদের দায়িত্ব সব নাগরিকের অধিকার রক্ষা করা, এমনকি এলজিবিটিকিউ জনগোষ্ঠীরও।’
অন্যদিকে ডেভিসের আইনজীবী ও রক্ষণশীল সংগঠন লিবার্টি কাউন্সেলের প্রতিষ্ঠাতা ম্যাট স্টেভার বলেন, ‘ওবারগেফেল রায়টি শুরু থেকেই ভুল ছিল। একদিন না একদিন এটি বাতিল হবেই।’
২০১৫ সালের সেই ঐতিহাসিক রায়ে বিচারপতি অ্যান্থনি কেনেডি বলেছিলেন, ‘বিবাহের চেয়ে গভীর কোনো বন্ধন নেই, কারণ এটি ভালোবাসা, আত্মত্যাগ ও পরিবারের আদর্শকে ধারণ করে।’
ওই রায়ের পর যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে উদযাপন শুরু হয়েছিল। সেদিন রাতে হোয়াইট হাউসও রংধনু রঙে আলোকিত হয়েছিল। পরবর্তীতে প্রায় ছয় লাখ সমলিঙ্গের দম্পতি বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন।
আরও পড়ুন:
রক্ষণশীলদের ধারণা ছিল, আদালতের বর্তমান গঠন, যেখানে ৬–৩ অনুপাতে রক্ষণশীল বিচারপতি সংখ্যাগরিষ্ঠ, তাতে এ রায় পুনর্বিবেচিত হতে পারে। তবে সাম্প্রতিক সপ্তাহে বেশ কিছু বিচারপতি ইঙ্গিত দিয়েছেন, ওবারগেফেল পুনরায় খোলার কোনো আগ্রহ আপাতত নেই।
বিচারপতি অ্যামি কোনি ব্যারেট সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘মানুষের জীবনে সমলিঙ্গ বিবাহের ওপর বাস্তব নির্ভরতা তৈরি হয়েছে, যা অগ্রাহ্য করা যায় না।’
বিচারপতি স্যামুয়েল আলিটোও এক ভাষণে বলেন, ‘যদিও তিনি রায়টির সমালোচক, তবে এটি আদালতের স্বীকৃত নজির হিসেবে সম্মান পাওয়ার যোগ্য।’
তবে এলজিবিটিকিউ অধিকারকর্মীরা সতর্ক করে বলেছেন, ট্রান্সজেন্ডার সম্পর্কিত বিষয়গুলোতে আদালতের সাম্প্রতিক সিদ্ধান্ত উদ্বেগজনক।
ওবারগেফেল মামলার প্রধান আইনজীবী মেরি বনাওটো বলেন, ‘এ রায়ের ফলে যুক্তরাষ্ট্রের লাখ লাখ পরিবার স্বস্তির নিশ্বাস ফেলতে পারছে। বিবাহ সমতা শুধু ভালোবাসার স্বীকৃতি নয়, এটি সমাজ ও পরিবারের সুরক্ষার প্রতীক।’
সর্বোচ্চ আদালতের এ সিদ্ধান্তে নতুন কোনো আইনি নজির তৈরি হয়নি, তবে এটি স্পষ্ট ইঙ্গিত দিয়েছে, অন্তত এখনই সমলিঙ্গের বিবাহ অধিকার বাতিলের কোনো সম্ভাবনা নেই।





