নারায়ণগঞ্জে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে যুবককে পিটিয়ে হত্যা

নারায়ণগঞ্জ ৩০০ শয্যা হাসপাতাল
নারায়ণগঞ্জ ৩০০ শয্যা হাসপাতাল | ছবি: এখন টিভি
0

নারায়ণগঞ্জ শহরের খানপুর এলাকায় ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ তুলে এক যুবককে বাসা থেকে তুলে নিয়ে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। গতকাল (সোমবার, ২০ অক্টোবর) রাতে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। নিহতের নাম আবু হানিফ (৩০)। তিনি বাগেরহাটের শরণখোলার আবুল কালামের ছেলে এবং পেশায় নিরাপত্তা প্রহরী ছিলেন।

নারায়ণগঞ্জ ৩০০ শয্যা হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘বিকেল তিনটার দিকে কয়েকজন ব্যক্তি গুরুতর আহত অবস্থায় হানিফকে হাসপাতালে নিয়ে আসেন। তারা হাসপাতালে রেখে চলে যান। রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।’

তার মাথা ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম ছিলো বলেন জানান এ চিকিৎসক।

সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ নাছির আহমদ বলেন, ‘দুপুরে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে এলাকার কয়েকজন যুবক হানিফকে বাসা থেকে তুলে নিয়ে খানপুর জোড়া ট্যাংকি এলাকায় মারধর করে। পরে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।’

নিহতের বড় বোন রাবেয়া বেগম বলেন, ‘দুপুরে ভাই বাসায় বিছানায় শুয়ে ছিল। হঠাৎ কয়েকজন ছেলে বাসায় ঢুকে ভাইরে মারতে শুরু করে। আমরা বাধা দিলেও তারা শোনেনি। পরে শুনলাম, ভাই নাকি কোনো মেয়েকে ধর্ষণ করতে চেয়েছিল। কিন্তু কে সেই মেয়ে, কখন ঘটনা ঘটেছে—কিছুই জানি না। মারধর করে তুলে নিয়ে যায়।’

আরও পড়ুন:

নিহতের ভগ্নিপতি মো. ইব্রাহিম বলেন, ‘আমি ডিউটিতে ছিলাম। দুপুরে ফোনে খবর পাই, এলাকায় কিছু ছেলে ঝামেলা করছে। বাসায় এসে দেখি, কেউ নেই। খানপুরে গিয়ে দেখি ১০ থেকে ১২ জন যুবক হানিফকে ওয়াসা অফিসের সামনে বসিয়ে রেখেছে। তাদের মধ্যে স্থানীয় অভি নামে একজনকে চিনেছি। কিছুক্ষণ পর তারা হানিফকে অটোতে তুলে নিয়ে যায়। পরে হাসপাতালে গিয়ে তাকে পাই।’

নিহতের বাবা আবুল কালাম কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘আমার ছেলে যদি অপরাধ করে থাকে, আইনে বিচার হতো। কিন্তু মানুষ হয়ে মানুষকে এভাবে মেরে ফেলা কীভাবে সম্ভব? আমি এর বিচার চাই।’

পুলিশের তদন্ত চলছে বলে জানিয়েছেন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা।

ওসি নাছির আহমদ বলেন, ‘ধর্ষণচেষ্টার বিষয়ে আগে কোনো অভিযোগ থানায় আসেনি। ঘটনাটি তদন্ত করা হচ্ছে। আসলে ধর্ষণচেষ্টার ঘটনা ঘটেছিল কি না, তা এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি।’

হানিফ খানপুরের একটি ভাড়া বাসায় থাকতেন। তার স্ত্রী ও তিন সন্তান কয়েক দিন আগে গ্রামের বাড়ি গেছেন বলে পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন।

এসএস