গুলশানের শোরুমে ফিল্মি স্টাইলে চুরি, ঢাকায় বছরে আড়াই হাজার মামলা

ডিএপি হেডকোয়ার্টার্স ও গুলশানের একটি পোশাকের শোরুমে চুরির দৃশ্য
ডিএপি হেডকোয়ার্টার্স ও গুলশানের একটি পোশাকের শোরুমে চুরির দৃশ্য | ছবি: এখন টিভি
0

কূটনীতিক পাড়া খ্যাত গুলশানের একটি পোশাকের শোরুমে ফিল্মি কায়দায় ঘটেছে চুরির ঘটনা। গেল ১২ সেপ্টেম্বর ঘটে এমন ঘটনা। গেল বছরে জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত ঢাকা মহানগরীতে চুরির ঘটনায় মামলা হয়েছে প্রায় আড়াই হাজার। তবে পুলিশ বলছে, আগের তুলনায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। অপরাধ নিয়ন্ত্রণে ব্যক্তির দক্ষতা ও যোগ্যতা অনুযায়ী কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করার পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের।

১২ সেপ্টেম্বর, ভোর ৫টা, গুলশান-১ এর প্রধান সড়ক। সাদা প্রাইভেট কার থেকে নামলেন তিন যুবক। গাড়ি থেকে নেমেই একটি পোশাকের শোরুমের তালা ভাঙার চেষ্টা চালায় একজন। অন্য দু’জন খেয়াল রাখে চারপাশে।

সিসিটিভির ক্যামেরায় ধরা পরা ডাকাতির চিত্র, যা হার মানায় সিনেমার দৃশ্যকেও। ফুটেজে আরও দেখা যায়, মুহূর্তেই শোরুমে ঢুকে ফিল্মি কায়দায় হাতিয়ে নেয়া হয় কয়েক লাখ টাকা। গুলশানের মতো নিরাপত্তাবেষ্টিত এলাকায় এ ধরনের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেন ভুক্তভোগীরা।

ভুক্তভোগীরা জানান, তারা সিসিটিভি ফুটেজে দেখেছেন খুবই সহজভাবে তারা ডাকাতি করেছে। অভিজাত এলাকায় তারা এমন ঘটনা নিয়ে বেশ উদ্বেগ বলে জানান তারা।

ঢাকা মহানগর পুলিশের তথ্য মতে, গত বছরের জানুয়ারি থেকে এ বছরের জুলাই পর্যন্ত রাজধানীতে চুরির ঘটনায় ডিএমপির আটটি বিভাগে মোট ২ হাজার ৪০০ মামলা রজু করা হয়েছে।

পুলিশ বলছে, রাজধানীতে চুরি ও ছিনতাইয়ের মতো ঘটনায় জড়িতদের আইনের আওতায় আনা হচ্ছে। আগের তুলনায় পরিস্থিতি এখন অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে।

ডিএমপি উপ কমিশনার তালেবুর রহমান বলেন, ‘গত আগস্ট মাসে কিছু ডাকাতির ঘটনা রেকর্ড হয়। এসময় ১৩২টি চুরির ঘটনা রেকর্ড হয়। যেসব ঘটনা ঘটছে আমরা চেষ্টা করছি তদন্ত করে ঘটনায় জড়িতদের আইনের আওতায় নিয়ে আসার।’

বৈধ কর্মসংস্থান কমে যাওয়া ও বেকারত্বের হার ক্রমান্বয়ে বাড়ার ফলে চুরি ছিনতাইয়ের মতো ঘটনা ঘটছে বলে জানান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ড. তৌহিদুল হক। অপরাধ নিয়ন্ত্রণে ব্যক্তির দক্ষতা ও যোগ্যতা অনুযায়ী কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করার পরামর্শ তার।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট সহযোগী অধ্যাপক তোহিদুল হক বলেন, ‘এখন চুরি ডাকাতি ছিনতাই করার জন্য আলাদা আলাদা চক্রই তৈরি হয়েছে। তাদের কাছে দেশি বিদেশি অস্ত্র রয়েছে। রাষ্ট্র তার সকল নাগরিকের জন্য তার যোগ্যতা, দক্ষতা, সক্ষমতা, ইচ্ছা অনুযায়ী ব্যবস্থা করতে পারছে না। যতক্ষণ পর্যন্ত রাষ্ট্র বৈধ ব্যবস্থা তৈরি করতে পারবে না ততোক্ষণ পর্যন্ত একটি অংশ অপরাধমুখী হবে।’

পুলিশি কার্যক্রম বাড়ানোর পাশাপাশি সামাজিকভাবে সমন্বিত প্রতিরোধ গড়ে তুললে এ ধরনের ঘটনা অনেকটাই কমে আসবে বলে মনে তিনি।

এফএস