২০২১ সালে ২৬ মার্চ স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হয় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে। এ ঘোষণার পরেই সারাদেশে শুরু হয় বিক্ষোভ।
সেসময় বিভিন্ন এলাকা সংঘাতের খবর আসতে থাকে। মোদিবিরোধী আন্দোলনে নিহত হয় ১৭ বছরের কিশোর আসাতুল্লাহ রাতিন। এ ঘটনায় শেখ হাসিনাসহ ১৬ জনকে আসামি করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালের প্রসিকিউটর অফিসে এসে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন তার বাবা শফিকুল ইসলাম।
নিহত আসাতুল্লাহ রাতিনের বাবা বলেন, 'ছেলে ফোন করে বলে আব্বু আমি রাতিন। আমি বললাম তোমার পাশে যে আছে তাকে দাও। দেয়ার পর সে বললো আপনার ছেলের জন্য দ্রুত কুমিল্লা মেডিকেলে চলে আসেন। আমি অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে ভোর ৫টার সময় উপস্থিত হই। গিয়ে দেখি জরুরি বিভাগের সামনে রক্ত ভেজা অবস্থায় ফ্লোরে পড়ে আছে।'
এসময় জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব আখতার হোসেন জানান, সরকারি হিসেবে নিহতের সংখ্যা ১৭ জন দেখানো হলেও বাস্তবে এ সংখ্যা অনেক বেশি।
আখতার হোসেন বলেন, '২০২১ সালে যখন বাংলাদেশের সমস্ত মানুষ, ডান-বাম সমস্ত মানুষ যখন ভারতের আগ্রাসনের প্রতিবাদে, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর আগমনের প্রতিবাদে সারাদেশে আন্দোলন সংগ্রাম করছিলেন সেই সময়ে এই নিরস্ত্র মানুষগুলোর উপরে নির্বিচারে গুলিবর্ষণ করা হয়। সরকারি হিসেবমতে ১৭ জনকে গুলি করে হত্যা করা হয়।'
এদিন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের নতুন ভবন উদ্বোধন করেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ। এসময় উপস্থিত ছিলেন ট্রাইব্যুনালের বিচারপতিসহ অ্যাটর্নি জেনারেল, চিফ প্রসিকিউটর ও অনেকে।
প্রসিকিউটর আবদুল্লাহ আল নোমান বলেন, 'আন্তর্জাতিক অপরাধের বিচারের ক্ষেত্রে যেসমস্ত ন্যায়সংগত আচরণ করা দরকার ছিল এগুলো সম্পর্কে এক ধরনের ট্যাবু তৈরি করেছিল সে জায়গা থেকে বের হয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের এই যে নতুন ভবন একটা আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে বিচার এবং ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে যাচ্ছে।'
প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ বলেন, 'এ জাতি অনেক আশা নিয়ে আকাঙ্ক্ষা নিয়ে এই আইসিটির দিকে তাকিয়ে আছে। এ দেশের একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে আমিও সেই আশা, আকাঙ্খা নিয়ে তাকিয়ে আছি।'
আগামীকাল (বুধবার, ৮ জানুয়ারি) থেকে ট্রাইব্যুনালের নতুন ভবনে বিচারকাজ শুরু হবে।