প্রায় তিনশো বছর ধরে আধ্যাত্মিক সাধক পীর বলুহ দেওয়ানের স্মৃতিতে যশোরের চৌগাছার হাজরাখানা গ্রামে আয়োজন হয়ে আসছে বলুহ মেলা। প্রতিবারের মতো এবারও মাইকেল মধুসূদন দত্তের স্মৃতিবিজরিত কপোতাক্ষ নদের তীরে বসেছে ঐতিহ্যবাহী এই মেলা।
বাংলা ভাদ্র মাসের শেষ সপ্তাহ এলেই তার রওজা শরীফ ঘিরে আয়োজন হয় বলুহ মেলা। এ উপলক্ষে স্থানীয়রা জামাই ও মেয়েকে দাওয়াত করে আনেন, যা এই অঞ্চলের রীতিতে পরিণত হয়েছে।
মেলায় ঘুরতে আসা দর্শনার্থীরা জানান, এ এলাকার মানুষ ঈদ বা বড় ধর্মীয় উৎসবে মেয়ে-জামাইকে দাওয়াত না করলেও এ মেলার সময় দাওয়াত করতে ভোলেন না তারা। এছাড়া মেলায় এসে ঘুরে ঘুরে দেখছেন, কেনাকাটা করছেন ও পরিবারকে নিয়ে বিভিন্ন খাবার খাচ্ছেন বলেও জানান তারা।
মেলায় নানা পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসেছেন দোকানিরা। দামে সাশ্রয়ী হওয়ায় কেনাবেচাও বেশ জমজমাট। শিশুদের বিনোদনের খোরাক যোগাচ্ছে নাগোরদোলাসহ বিভিন্ন খেলনা।
এ মেলার ব্যবসায়ীরা জানান, প্রতি বছরই এ ঐতিহ্যবাহী মেলা হয়ে থাকে এবং তারাও এ মেলায় ব্যবসা করেন। মেয়েদের প্রসাধনীসহ সংসারের প্রায় সব প্রয়োজনীয় জিনিসই এ মেলায় পাওয়া যায় বলেও জানান তারা।
আরও পড়ুন:
মেলার অন্যতম আকর্ষণ নানা ধরনের আসবাবপত্রের দোকান। স্বজনদের উপহার হিসেবে এসব ফার্নিচার দেয়ার রীতিও রয়েছে স্থানীয়দের মধ্যে।
ব্যবসায়ীদের মধ্য একজন জানান, এ মেলায় ব্যবসা খুব ভালো হয়। কোনো পণ্য ফিরিয়ে নিয়ে যেতে হয় না। তাছাড়া মেলার নিরাপত্তা ব্যবস্থাও ভালো।
অন্যান্য বছরের তুলনায় মেলায় এ বছর দর্শনার্থীদের ভীড় বেশি। দর্শনার্থীদের নিরাপত্তার দায়িত্ব গোটা গ্রামবাসীর বলেও জানায় আয়োজক কমিটি।
বলু মেলা আয়োজক কমিটির সাধারণ সম্পাদক বাবুল আক্তার বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আমাদের যতটুকু সহযোগিতা করা দরকার, সেটুকু করছে। আমাদের ভলান্টিয়ার আছে, আমরা চেষ্টা করছি। প্রায় ৪৫ জন ভলান্টিয়ার ও মূল কমিটির ১৮ জন সবাই কাজ করছে।’
মেলায় ছোট-বড় প্রায় ২ হাজার স্টল রয়েছে। এসব স্টলে প্রতিদিন বেচাকেনা হচ্ছে কোটি টাকার ওপরে। সব ধর্মের মানুষই আসে এ মেলায়। ১০ দিনব্যাপী ভক্ত দর্শনার্থীদের এ মিলনমেলা শেষ হবে আগামী ১৮ সেপ্টেম্বর।





