তোমরা আপন আপন শত্রুদিগকে প্রেম করিও; যাহারা তোমাদিগকে দ্বেষ করে, তাহাদের মঙ্গল করিও; যাহারা তোমাদিগকে শাপ দেয়, তাহাদিগকে আশীর্বাদ করিও; যাহারা তোমাদিগকে নিন্দা করে, তাহাদের জন্য প্রার্থনা করিও। এমন সম্প্রীতির বাণী নিয়ে পৃথিবীতে এসেছিলেন প্রভু যীশু। বর্তমান অস্থির পৃথিবীর জন্য এ বাণী আজ খুবই প্রাসঙ্গিক।
মানবের মাঝে প্রেম, ভ্রাতৃত্ব আর শান্তির বাণী ছড়িয়ে দিতে পৃথিবীতে আবির্ভূত হয়েছিলেন প্রভু যীশু। তার আগমনের এ পুণ্যতিথি উদযাপনে সারাবছর ধরে তার অপেক্ষায় থাকেন ভক্তরা।
বরাবরের মতো এবারও যীশুকে বরণ করার আয়োজনে কোনো কমতি রাখতে চান না খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বীরা। বড়দিন উপলক্ষে এর মধ্যে রঙিন কাগজ, ফুল আর আলোকসজ্জায় সাজানো হয়েছে রাজধানীর চার্চগুলোকে। শেষ হয়েছে অন্যান্য প্রস্তুতিও।
তেজগাঁও চার্চের ফাদার জয়ন্ত এস. গমেজ বলেন, ‘আধ্যাত্মিক প্রস্তুতি, সে সঙ্গে বাইরের যে সাজসজ্জা সেটিও আমাদের প্রস্তুত। পাপ স্বীকার চলছে এখানে। এটি আমাদের আধ্যাত্মিক বড় প্রস্তুতি। প্রায় সবাই এখানে আসনে পাপ স্বীকার করতে।’
বড়দিন উপলক্ষে প্রস্তুতি নিয়েছেন খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বীরাও। রাজধানীর মনিপুরিপাড়ার দম্পতি রসি ও সিলভিয়ার বাসায়। এবার বড়দিন উপলক্ষে ঢাকাতেই থাকবেন এ দম্পতি। পোষ্য বিড়াল কিকোর সঙ্গেই কাটবে তাদের এবারের বড়দিন। ক্রিসমাস ট্রি, রঙ-বেরঙের রিবন, সান্টাক্লজ, কেক আর রঙিন বাতি; সব মিলিয়ে বড়দিনের চমৎকার আয়োজন করেছেন এ দম্পতি।
বার্নার্ড রসি বলেন, ‘গ্রামের যে মজাটা, ওইটা খুবই মিস করি। যেটা আমরা ঢাকা শহরে থাকার কারণে পাচ্ছি না। এর জন্য মনটা একটু খারাপ। কিন্তু ক্রিসমাসে তো মন খারাপ করলে হবে না।’
আরও পড়ুন:
সিলভিয়া বলেন, ‘ছোটবেলায় তো অল্পতেই কুশি হয়ে যেতাম। দেখা যেত বাবা মা যা দিচ্ছে তাতেই খুশি বা কাজিনদের সঙ্গে মজা করছি। বা তাদের পেয়েই কুশি হয়ে যেতাম। ওই জিনিসটাই খুব মিস করি। যত বড় হচ্ছি ওই জিনিসটা হারিয়ে যাচ্ছে।’
এদিকে বড়দিন উপলক্ষে রাজধানীর তারকা হোটেলগুলোতে চলছে নানা অফার। বেড়েছে কেকের প্রি-অর্ডার এবং বিক্রি। এবার বড়দিন উপলক্ষে রাজধানীর দুটি তারকা হোটেলে গতকাল (মঙ্গলবার, ২৩ ডিসেম্বর) পর্যন্ত কেকের প্রি-অর্ডার হয়েছে প্রায় ৮০০ কেজি। যার বাজারমূল্য প্রায় ৪০ লাখ টাকার বেশি।
ঢাকা দ্যা ওয়েস্টিন এবং শেরাটনের ক্লাস্টার পাবলিক রিলেশন ম্যানেজার তুহিনূর সুলতানা বলেন, ‘২৪ তারিখ সন্ধ্যায় সাড়ে ৬টায় আমরা ওয়েস্টিন ঢাকার ক্যারোলটা শুরু করবো। আর শেরাটনে সাড়ে ৭টায় আমরা ক্যারোলটা শুরু করবো। ক্রিসমাস শুরুই হয় কেকের একটা ভাইভস দিয়ে। আমরা চেষ্টা করি প্রতিবছর ক্রিসমাসের জন্য স্পেশাল কিছু কেক করতে। এবারও সেই কেকগুলো করা হয়েছে।’
এবার বড়দিনে রাজধানীর তারকা হোটেলগুলোতে রয়েছে বাই ওয়ান গেট থ্রি অফারসহ বিশেষ ক্রিসমাস কার্নিভাল। এছাড়া শিশুদের জন্যও রয়েছে নানা আয়োজন।
আগামীকাল (বৃহস্পতিবার, ২৪ ডিসেম্বর) বড়দিন। খ্রিস্টধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও মহা ধুমধামে উদযাপিত হবে এ উৎসব। এরই মধ্যে বড় বড় তারকা হোটেলগুলো বড়দিনের সাজে সেজে উঠেছে ক্রিসমাস ট্রি, সান্টাক্লজ, তুষারের ঘর আর কেকের সমারোহে। সব প্রস্তুতি শেষে এখন শুধু ক্রিসমাস ক্যারোলের সুর আনন্দের ঝরনাধারায় চেপে বড়দিনের অপেক্ষা যীশু ভক্তদের মাঝে।




