দ্বিতীয় মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্রের মসনদে বসেই ডেনমার্কের স্বায়ত্তশাসিত গ্রিনল্যান্ড দ্বীপ দখলে নিজের ইচ্ছার কথা জানান মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এ লক্ষ্যে মার্চে সস্ত্রীক অঞ্চলটি সফরে যান মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স। গ্রিনল্যান্ডের মানুষ ক্রমাগত ডেনমার্কের অবহেলার শিকার বলে সেসময় অভিযোগ তুলেছিলেন তিনি। এছাড়া, অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে অঞ্চলটির নিরাপত্তা ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্র ভূমিকা রাখতে চায় বলে গ্রিনল্যান্ডের প্রশাসনকে প্রস্তাব দেন ভ্যান্স।
গতকাল সোমবার ফ্লোরিডায় যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তার স্বার্থে ফের গ্রিনল্যান্ড দখলের ঘোষণা দেন ট্রাম্প। এ লক্ষ্যে দ্বীপটিতে যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ প্রতিনিধি হিসেবে লুইজিয়ানার গভর্নর জেফ ল্যান্ড্রিকে নিয়োগও দিয়েছেন তিনি।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ‘ল্যান্ড্রি অসাধারণ মানুষ। তার দারুণ নেতৃত্বের গুণাবলী রয়েছে। গ্রিনল্যান্ডের খনিজ সম্পদের কোনো আসক্তি নেই ওয়াশিংটনের। অঞ্চলটির উপকূলজুড়ে চীন ও রাশিয়ার জাহাজ মোতায়েন রয়েছে। তাই আমরা নিরাপত্তার লক্ষ্যে অঞ্চলটির কর্তৃত্ব চাই।’
তবে ট্রাম্প প্রশাসনের এ পদক্ষেপকে ভালোভাবে নেয়নি ডেনমার্ক। এরইমধ্যে দেশটিতে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূতকে তলব করেছে কোপেনহেগেন।
আরও পড়ুন:
ডেনমার্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী লার্স লোকে রাসমুসেন বলেন, ‘গ্রিনল্যান্ডের বিষয়ে যেকোনো সিদ্ধান্ত নেবে অঞ্চলটির জনগণ। অঞ্চলটির সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘনের এখতিয়ার কারোরই নয়। এরইমধ্যে যুক্তরাষ্ট্র কিছু বিষয়ে সীমা লঙ্ঘন করেছে। এ বিষয়ে আমরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধির কাছে ব্যাখ্যা চাইব।’
গ্রিনল্যান্ড দখলে ট্রাম্পের ইচ্ছার নিন্দা জানিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়নও। সোমবার ব্রাসেলসে এক সংবাদ সম্মেলনে সংস্থাটির মুখপাত্র জানান, গ্রিনল্যান্ডসহ ডেনমার্কের অন্যান্য অঞ্চলের স্বাধীনতা - সার্বভৌমত্ব রক্ষায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ইইউ।
ইউরোপীয় কমিশন মুখপাত্র এল আনুনি বলেন, ‘ডেনমার্কের আঞ্চলিক অখণ্ডতা, স্বাধীনতা- সার্বভৌমত্ব রক্ষা করা ইউরোপীয় ইউনিয়নের জন্য অপরিহার্য। ইইউয়ের এ অবস্থান শুধু যুক্তরাষ্ট্র নয়, সবার জন্য অপরিহার্য।’
প্রায় ৫৭ হাজার মানুষের বাস গ্রিনল্যান্ডে। ১৯৭৯ সাল থেকে অঞ্চলটিতে স্বায়ত্তশাসন চালু রয়েছে। কিন্তু অঞ্চলটির প্রতিরক্ষা ও পররাষ্ট্রনীতির নিয়ন্ত্রণ ডেনমার্কের কাছে। সাম্প্রতিক সময়ে গ্রিনল্যান্ডের জনসংখ্যার একটি বড় অংশ ডেনমার্ক থেকে বেরিয়ে আসতে চায়। তবে তারা অঞ্চলটিতে যুক্তরাষ্ট্রের কর্তৃত্বের দাবিরও বিরোধিতা করে।





