পাড়া-মহল্লা কিংবা রাজপথ। আবার সরব গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী এক আকাঙ্ক্ষিত নির্বাচনের।
চায়ের কাপে ঝড় নির্বাচন নিয়ে নানা শঙ্কা, সমীকরণে। যেখানে নিয়মিত সরকারে থাকা দুই উপদেষ্টার ভোটে অংশ নেবার গুঞ্জন! আসলেই কি শেষ মুহূর্তে সরকার ছেড়ে ভোটের মাঠে নামছে ঐ দুই উপদেষ্টা?
আসিফ মাহমুদ ও মাহফুজ আলমের রাজনৈতিক ঠিকানা নিশ্চিত না হলেও বিভিন্ন ইঙ্গিত জানান দিচ্ছে নির্বাচনে অংশ নিতে পারেন এই দুইজন।
বিশেষ করে ৯ নভেম্বর নিজ এলাকা কুমিল্লার মুরাদ নগর পরিবর্তন করে ঢাকা ১০ আসনের ভোটার হন আসিফ মাহমুদ। সেইসঙ্গে ইঙ্গিত দেন ত্রয়োদশ জাতীয় নির্বাচনে অংশ নেয়ার ব্যাপারেও। এরবাইরেও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ছাড়াও বিভিন্ন জায়গায় ঢাকা ১০ আসনে নির্বাচন করতে পারেন এমন বার্তা দিতে দেখা যায়।
গণমাধ্যমে বেশ কয়েকবার জাতীয় নির্বাচনে অংশ নেয়ার ব্যাপারে ইঙ্গিত দিলেও বার্তা দেননি পদত্যাগে বিষয়। ফলে প্রশ্ন উঠছে ভোটের লড়াইয়ে অংশ নেবেন, নাকি সরকারে থেকে যাবেন?
একই সুযোগ সুবিধা নিয়ে আসিফ মাহমুদের বাংলোর ঠিক উল্টো পাশেই থাকেন উপদেষ্টা মাহফুজ আলম। তবে তিনি স্পষ্ট করে কিছু না বললেও লক্ষ্মীপুর এক আসনে থেকে নির্বাচন করতে পারেন বলে জানিয়েছেন তার ভাই। রাজনীতির মাঠে আলাপ রয়েছে বিএনপির সঙ্গে সমঝোতা করে নির্বাচনে অংশ নিতে পারেন তারা।
আরও পড়ুন:
এমনকি ঢাকা ১০ ও লক্ষ্মীপুর ১ আসনে প্রাথমিক কোনো প্রার্থীও দেয়নি বিএনপি। যদিও এরআগে নিরপেক্ষ সরকারের থেকে কোনো উপদেষ্টার নির্বাচনে অংশ নেয়ার নজির নেই। ফলে প্রশ্ন উঠছে সরকারের থেকে নির্বাচন করা কতোটা বৈধ? আর আরপিও বিধানই বা কী বলছে?
নির্বাচন বিশেষজ্ঞ ড. আব্দুল আলীম বলেন, ‘কোনো উপদেষ্টা যদি সরকারে থেকে নির্বাচন করতে চান তাহলে কতদিন আগে পদত্যাগ করতে হবে। এই কথা কোথাও লেখা নেই। কাজেই এটা আমাদের আইনের দুর্বলতা। যেহেতু আইনের দুর্বলতা সেক্ষেত্রে তফসিলের একদিন আগেও পদত্যাগ করে নির্বাচন করে সেক্ষেত্রে কেউ এটাকে বেআইনি বলতে পারবে না।’
নির্বাচন বিশেষজ্ঞ জেসমিন টুলী বলেন, ‘লাভজনক পদে থেকে নির্বাচন করা যাবে না। এছাড়া সরকারে থেকে অতি সুবিধাভোগীদের বিষয়ে বিধিনিষেধ রয়েছে নির্বাচনে আসার।’
এখনও সরকারের উপদেষ্টা পরিষদে থাকায় আসিফ মাহমুদ ও মাহফুজ আলমকে নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন কয়েকটি রাজনৈতিক দল। গণ প্রতিনিধিত্ব আইন ও আরপিও বিধানে সরকারে থেকে নির্বাচনে অংশ নেয়ার ব্যাপারে কোনো বাধা নেই।
তবে সরকারে থেকে নির্বাচনে অংশ নেয়ার ব্যাপারে তাদের নৈতিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুললেন নির্বাচন বিশেষজ্ঞরা। সেসঙ্গে তাদের অংশগ্রহণ নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে পারে বলেও শঙ্কা প্রকাশ করেন তারা।
নির্বাচন বিশেষজ্ঞ জেসমিন টুলী বলেন, ‘যেহেতু তত্ত্বাবধায়ক না কিন্তু এটার মতোই অন্তর্বর্তী সরকার। সেহেতু এখানে স্বপদে থেকে তারা নির্বাচন করেন তাহলে নির্বাচন নিয়ে কথা উঠবে।’
নির্বাচন বিশেষজ্ঞ ড. আব্দুল আলীম বলেন, ‘যদি কোনো উপদেষ্টা নির্বাচন করতে চাই তাহলে তার পদটা নির্বাচনের তিন মাস আগেই ছেড়ে দেয়া উচিত নৈতিক জায়গা থেকে।’
নির্বাচনে অংশ নেয়া ও উপদেষ্টা পরিষদ থেকে পদত্যাগে ব্যাপারে এই দুই উপদেষ্টার সঙ্গে কয়েকবার যোগাযোগ করা হলেও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।




