জাতির বেদনাবিধুর দিন আজ—৩ নভেম্বর, জেলহত্যা দিবস

সৈয়দ নজরুল ইসলাম, প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ, ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলী এবং এ এইচ এম কামারুজ্জামান
সৈয়দ নজরুল ইসলাম, প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ, ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলী এবং এ এইচ এম কামারুজ্জামান | ছবি: সংগৃহীত
1

আজ ৩ নভেম্বর, জেলহত্যা দিবস। এ দিনটির সঙ্গে জড়িয়ে আছে জাতির এক বেদনার ইতিহাস। ১৯৭৫ সালের এ দিনে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে রাতের আঁধারে বন্দি অবস্থায় হত্যা করা হয় মুক্তিযুদ্ধকালীন মুজিবনগর সরকারের অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম, প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ, মন্ত্রিসভার সদস্য ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলী এবং এ এইচ এম কামারুজ্জামানকে।

এই চার নেতাকে হত্যার পরদিন তৎকালীন উপ-কারা মহাপরিদর্শক (ডিআইজি প্রিজন) কাজী আবদুল আউয়াল লালবাগ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। ২০০৪ সালের ২০ অক্টোবর ঢাকা মহানগর দায়রা জজ মো. মতিউর রহমান এ মামলার রায় ঘোষণা করেন।

এ মামলায় আদালতের রায়ে ৮ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। এছাড়া মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয় তিনজনকে। যদিও আসামিদের মধ্যে ১০ জনই এখনও ধরাছোঁয়ার বাইরে। কেবল ১ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছে।

যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামিদের মধ্যে ক্যাপ্টেন (বরখাস্ত) আবদুল মাজেদ দীর্ঘদিন পলাতক ছিলেন। ২০২০ সালের এপ্রিলে তিনি ধরা পড়েন এবং ওই মাসেই তার ফাঁসি কার্যকর হয়।

আরও পড়ুন:

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করার পর; তার ঘনিষ্ঠ চার নেতাকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়। ক্ষমতার দখলের ষড়যন্ত্র ও রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে রাতের আঁধারে সংঘটিত এই হত্যাকাণ্ডকে পরবর্তীকালে ‘জেলহত্যা মামলা’ নামে খ্যাতি লাভ করে। ৩ নভেম্বর কেন্দ্রীয় কারাগারে নির্মম এ হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়। শেখ মুজিবের অবর্তমানে এ চার নেতা মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্ব দিয়ে বাংলাদেশকে স্বাধীন করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন।

মুজিবনগর সরকারের অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি ছিলেন সৈয়দ নজরুল ইসলাম, প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমেদ, অর্থমন্ত্রী ক্যাপ্টেন মনসুর আলী এবং এএইচএম কামারুজ্জামান ছিলেন খাদ্য ও ত্রাণমন্ত্রী।

উল্লেখ্য, ২১ বছর এ মামলার তদন্ত কার্যক্রম থেমে ছিল, যা ১৯৯৬ সালের জুন মাসে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসলে পুনরায় শুরু হয়। এর ৮ বছর পর ২০০৪ সালের ২০ অক্টোবর ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালত মামলার রায় ঘোষণা করেন।

আজকের এই দিনটি শুধু অতীতের ক্ষতচিহ্ন নয়, বরং ইতিহাসকে মনে করিয়ে দেয় যে, জাতি কখনও এই বেদনাবিধুর অধ্যায়কে ভুলতে পারে না।

এসএইচ