পাহাড়ি ছড়া থেকে তোলা হচ্ছে মূল্যবান খনিজ সম্পদ সিলিকা বালু। এমন চিত্র প্রায়ই দেখা যায় হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার বদরগাজীর গিলানী ছড়ায়। দিনরাত এভাবেই চলে সিলিকা বালু লুট। আরও ভয়াবহ অবস্থা উপজেলার পানছড়ি এলাকার। ড্রেজার মেশিন বসিয়ে মাটির গভীর থেকে বছরের পর বছর সিলিকা বালু লুটপাটে ক্ষত-বিক্ষত পুরো এলাকা। সরু ছড়া এখন পরিণত হয়েছে বিশাল খাদে। হুমকির মুখে চা বাগান পল্লীসহ আশপাশের পরিবেশ। লুটেরাদের দৌরাত্ম্যে অসহায় স্থানীয় বাসিন্দারা।
স্থানীয় এলাকাবাসীরা জানান, বালু উত্তোলনের ফলে তাদের বসতবাড়ী ভেঙে যাওয়ার উপক্রম। বালু উত্তোলনে আগের থেকে অনেক গভীর হয়েছে ছড়া।
জেলা প্রশাসনের তথ্যমতে, চলতি বছর হবিগঞ্জ জেলার কোথাও সিলিকা বালু মহাল ইজারা দেয়া হয়নি। তবু চুনারুঘাট, মাধবপুর ও বাহুবলের পাহাড়ি ছড়া ও চা বাগান এলাকায় অবাধে চলছে বালু লুটপাট। স্থানীয়দের দাবি, রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় গড়ে উঠেছে প্রভাবশালী একাধিক সিন্ডিকেট। তাদের নেতৃত্বে বালু লুটের পাশাপাশি মজুদ ও বিক্রি চলছে প্রকাশ্যেই। সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে মুখ খুললেই শুরু হয় নির্যাতন আর হয়রানি।
আরও পড়ুন:
প্রশাসনের হস্তক্ষেপে এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান স্থানীয় বাসিন্দারা।
বালু লুটপাটের সঙ্গে জড়িত বেশ কয়েক জনের নাম উঠে আসে স্থানীয়দের মুখে। অভিযুক্তরা একে অন্যের ওপর দায় চাপালেও প্রকাশ্যে আসেনি সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রকদের নাম। প্রশাসনের দাবি, নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করেও ঠেকানো যাচ্ছেনা অবৈধ বালু উত্তোলন। এজন্য সমন্বিতভাবে বিকল্প উপায় খোঁজা হচ্ছে বলেও জানান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা।
অভিযুক্ত এক ব্যক্তি বলেন, আমি বালু উত্তোলন করছি না। অন্যরা এ কাজে জড়িত রয়েছে আর দোষ আমাকে দেয়া হচ্ছে।
হবিগঞ্জ চুনারুঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘প্রশাসনের পক্ষ থেকে আমরা অভিযান অব্যাহত রেখেছি। একাধিকবার আমরা রাতের বেলাও অভিযান পরিচালনা করেছি। সেইসঙ্গে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হয়েছে। বিভিন্ন মেয়াদে অনেককে কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ডও দেয়া হয়েছে।’
হবিগঞ্জ জেলায় তালিকাভুক্ত ২৩টি সিলিকা বালু মহাল। তবে চলতি বছর একটিরও ইজারা দেয়নি খনিজ সম্পদ উন্নয়ন ব্যুরো। প্রশাসনের পক্ষ থেকেও রয়েছে তৎপরতা। তবুও থামানো যাচ্ছে না বালুখেকোদের। সংশ্লিষ্টদের কার্যকর পদক্ষেপে মূল্যবান এ সিলিকা বালু লুট বন্ধ হবে, এমনটাই প্রত্যাশা স্থানীয়দের।





