প্রাচীন পদ্ধতিতে হাড়জোড়ের চিকিৎসায় সাড়া ফেলেছেন যে ব্যক্তি

হাড়ের চিকিৎসা দিচ্ছেন নূর মোহাম্মদ
হাড়ের চিকিৎসা দিচ্ছেন নূর মোহাম্মদ | ছবি: এখন টিভি
0

ডাক্তারের বদলে ভাঙা হাড়ের চিকিৎসায় শতাব্দী প্রাচীন পদ্ধতি ব্যবহার করে সাড়া ফেলে দিয়েছেন ভারতের কাশ্মীরের এক বাসিন্দা। তার দাবি, যুগ যুগ ধরে ঝাড়ফুঁক ও খালি হাতে চিকিৎসা দিয়ে আসছেন তিনি। এক্সরে নয়, হাত দিয়ে স্পর্শ করেই বুঝতে পারেন হাড়ের কোন অংশ ভেঙেছে। ডাক্তাররা স্বাস্থ্যঝুঁকির কথা বললেও, তার কাছে ভিড় করছেন শত শত মানুষ।

ভারতের জম্মু-কাশ্মীরের শ্রীনগরে বসবাস ৬০ বছর বয়সী নূর মোহাম্মদের। যিনি কাশ্মীরে হাড়ের চিকিৎসার জন্য সুপরিচিত। আধুনিক যন্ত্রপাতি বা চিকিৎসা ব্যবস্থা ছাড়াই খালি হাতে রোগীদের সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। এ চিকিৎসা পদ্ধতিতে জড়িয়েছে তার পরিবারে সদস্যরাও। তিন যুগেরও বেশি সময় কাশ্মীরের শ্রীনগরের এ চিকিৎসাসেবা দিয়ে আসছে মোহাম্মদের পরিবার।

রোগীদের কাছ থেকে নেয়া হচ্ছে নামমাত্র ফি। রোগীরা তাদের সামর্থ্যের অনুযায়ী ফি দিয়ে থাকেন। শতাব্দী প্রাচীন হাড় জোড়া লাগানোর জন্য ঝাড়ফুঁক ও খালি হাতে হাড় ভাঙা, মোচকানো বা ফ্র্যাকচারের চিকিৎসা দিচ্ছেন।

তার দাবি, এক্সরে ছাড়াই হাতের স্পর্শেই তিনি বুঝতে পারেন কোথায় ভেঙেছে হাড়। ভাঙা স্থানে ম্যাসাজ করে কাপড় বা টেপ দিয়ে ব্যান্ডেজ লাগিয়ে দেন তিনি। এরপর দোয়া পড়ে ফু দেন। এতেই মুক্তি মেলে রোগীদের।

কবিরাজ নূর মোহাম্মদ বলেন, ‘এ পেশায়, আধ্যাত্মিকতা থাকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। প্রথমে আধ্যাত্মিকতা, তারপর প্রজ্ঞা’

৭৫ বছর বয়সী গোলাম মোহাম্মদ মীরের এক সড়ক দুর্ঘটনায় তার পা ভেঙে যায়। হাসপাতালে চিকিৎসা করেও সুফল পাচ্ছিলেন না তিনি। এরপরই আসেন নূর মোহাম্মদের কাছে। এখন তিনি হাঁটাচলা করতে পারছেন।

আরও পড়ুন:

দুর্ঘটনার শিকার গোলাম মোহাম্মদ মীর বলেন, ‘এখানে চার মাস চিকিৎসার পর, ক্র্যাচে ভর দিয়ে হাঁটতে পারছি। আগের চেয়ে অনেক সুস্থ আছি।’

তবে চিকিৎসকরা বলছেন, এ ধরনের চিকিৎসাসেবায় ঝুঁকি আছে। অনেক সময় ব্যাপক জটিলতা দেখা দিতে পারে রোগীদের।

কাশ্মীর হাড় ও জয়েন্ট হাসপাতালের অর্থোপেডিক বিভাগের প্রধান ডা. আলতাফ কাউসা বলেন, ‘যারা হাড় ভাঙা বা আঘাত নিয়ে ভুগছেন, সব রোগীদের যথাযথ চিকিৎসা নেয়া উচিত। এমন কোনো ব্যক্তির কাছে যাওয়া উচিত নয়, যার হাড় সম্পর্কে প্রাথমিক জ্ঞান নেই। এমনকি হাড়ের চিকিৎসা পদ্ধতি সম্পর্কে প্রাথমিক জ্ঞান নেই। এতে রোগীর অবস্থা আরও খারাপ হতে পারে।’

তবে ঝুঁকি থাকলেও নূর মোহাম্মদের কাছে চিকিৎসা নিতে প্রতিদিন ভিড় জমান শতাধিক রোগী। কোমর বা মেরুদণ্ডে বড় ধরনের ফ্র্যাকচার দেখা দিলে তারাও ডাক্তার ও হাসপাতালে যাওয়ার পরামর্শ দেন রোগীদের।

এফএস