পূর্ণ রাজ্যের মর্যাদার দাবিতে বুধবারের বিক্ষোভ সহিংসতায় ৪ জনের প্রাণহানির পর; ভারতের কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল লাদাখে এখনও থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। দুশ্চিন্তায় সময় কাটছে মোদি প্রশাসনের। যার কারণে ২৪ সেপ্টেম্বর বিকেলে লেহ ও কারগিলে জারি করা কারফিউ এখনও অব্যাহত। শহরগুলোর গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে জোরদার করা হয়েছে টহল ও নজরদারি।
লাদাখকে রাজ্য করার জোর দাবিতে সোচ্চার ‘লাদাখ অ্যাপেক্স বডি’ এবং ‘কারগিল ডেমোক্র্যাটিক অ্যালায়েন্স’ নামে দু’টি সংগঠন। তবে আন্দোলনের নেতৃত্ব দেয়া অন্যতম পরিচিত মুখ হওয়ায় মোদি প্রশাসনের নিশানায় ম্যাগসেসে পুরস্কারপ্রাপ্ত লাদাখের শিক্ষাবিদ ও পরিবেশকর্মী সোনম ওয়াংচুক। তাকে নিয়েই নির্মিত হয়েছিলো আমির খানের ‘থ্রি ইডিয়েটস’ সিনেমা। বিক্ষোভে উস্কানি দেয়ার অভিযোগে শুক্রবার এই সমাজকর্মীকে গ্রেপ্তারও করেছে পুলিশ।
আরও পড়ুন:
লাদাখে বর্তমান উত্তপ্ত পরিস্থিতির জন্য ওয়াংচুককেই দায়ী করছে নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন বিজেপি সরকার। এর জন্য গ্রেপ্তার ছাড়াও ওয়াংচুকের স্টুডেন্টস এডুকেশনাল অ্যান্ড কালচারাল মুভমেন্ট অব লাদাখের নিবন্ধনও বাতিল করা হয়েছে। এমনকি তার প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অবৈধ বৈদেশিক অনুদান সংক্রান্ত একটি অভিযোগের তদন্তও শুরু করেছে ভারতের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা তদন্ত সংস্থা- সিবিআই। ফলে বিদেশ থেকে আর কোনো তহবিল গ্রহণ করতে পারবে না ওয়াংচুকের দাতব্য প্রতিষ্ঠান।
এ অবস্থায় যাতে আন্দোলন পরিস্থিতি আরও বেসামাল না হয়; সেজন্য লাদাখে ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। গ্রেপ্তার হাওয়ার আগে ওয়াংচুক গণমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন, রাজ্য মর্যাদার দাবিতে হওয়া আন্দোলনে বড় অংশই তরুণ প্রজন্ম।
দীর্ঘ দিন অনশনের পরও মোদি প্রশাসন আলোচনার জন্য দিন ধার্য করেছিলো ৬ অক্টোবর। ফলে বুধবার অনশন ও বিক্ষোভকারীদের ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে যায়। তাদের দমাতে পুলিশ গুলি চালালে পরিস্থিতি সহিংসতায় রূপ নিয়েছিলো বলেও দাবি করেছেন ওয়াংচুক।
২০১৯ সালে বিজেপি সরকার লাদাখকে জম্মু ও কাশ্মীর থেকে আলাদা করে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল ঘোষণা করে। তখন থেকেই বৌদ্ধ অধ্যুষিত লেহ ও মুসলিম অধ্যুষিত কারগিল উভয় সম্প্রদায়ের মানুষ রাজ্য মর্যাদার দাবিতে আন্দোলন করে আসছে। যার নেতৃত্বে ছিলেন সোনম ওয়াংচুক। এরপর ২০২৩ সাল থেকে লাদাখের নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে আসছে ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। কিন্তু কোনো সুরাহা হয়নি।





