এবার গাজা শহরের জাতিসংঘের আশ্রয়কেন্দ্রগুলোকে লক্ষ্য করে এভাবেই হামলা চালাচ্ছে ইসরাইলি দখলদাররা। উদ্দেশ্য পুরো শহর নিজেদের কব্জায় নেয়া।
স্থানীয়রা বলেন, ‘বিশ্ববাসীর কাছে একটাই প্রশ্ন, কোথায় যাবো আমরা? যথেষ্ট হয়েছে। এবার থামা দরকার। বালিশ, কম্বল সবকিছু নষ্ট হয়ে গেছে। সন্তানদের কোথায় ঘুমাতে দেবো? যাই ঘটুক না কেন এখান থেকে কোথাও যাবো না। গাড়ি ভাড়া করে যাওয়ার মতো এক পয়সাও নেই হাতে।’
শুধু জাতিসংঘের আশ্রয়কেন্দ্রগুলো নয়, আইডিএফের বোমা বর্ষণে এরইমধ্যে মৃত্যুপুরীতে পরিণত করছে পুরো গাজা উপত্যকাকে।
গাজার বাসিন্দারা বলেন, ‘এখানে ইসরাইল হামলা চালাবে বলে গত রাতে এ এলাকা ছেড়ে চলে যেতে বলে আমাদের। এক কিলোমিটার দূরে চলে যাই। এরপর এসে দেখি এই পরিস্থিতি। মনে হচ্ছে আগ্নেয়গিরি বয়ে গেছে এখান দিয়ে। গাড়ির অবস্থা দেখেছেন। সব জায়গায় শুধুই ধ্বংসস্তূপ।’
তবে প্রাণ বাঁচাতে কেউ কেউ বাধ্য হচ্ছেন গাজা শহর ছেড়ে দক্ষিণে চলে যেতে। যদিও তাদের সেই গন্তব্য নিয়েও রয়েছে নিরাপত্তাহীনতার প্রশ্ন।
বাসিন্দারা বলেন, ‘কোন অপরাধে আমাদের এভাবে জীবন যাপন করতে হচ্ছে? খাবার নেই, আশ্রয়স্থল নেই, কোন ধরণের ওষুধ নেই। নেই বিন্দুমাত্র স্বাধীনতা। পুরো গাজা উপত্যকার কোথাও নিরাপদ জায়গা নেই। রাফাহ থেকে যিকিম কোথাও নিরাপদ না। সব জায়গায় ইসরাইলিরা বোমা ফেলছে।’
হামাস নেতাদের টার্গেট করে কাতারে ইসরাইলি হামলার নিন্দা জানিয়েছে যুক্তরাজ্য, জার্মানি ও ফ্রান্স। এমনকি কাতারের এ হামলাকে ভালোভাবে দেখছে না যুক্তরাষ্ট্রও। এ বিষয়ে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও জানান, ইসরাইলের এধরণের কর্মকাণ্ডে যুক্তরাষ্ট্র বেশ অখুশি। তবে এতে কাতারের সঙ্গে মার্কিন সম্পর্কে কোন ভাটা পড়বে না।
আরও পড়ুন:
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও বলেন, ‘কাতারে ইসরাইলি হামলা কোনভাবেই কাম্য নয়। ট্রাম্প বিষয়টিতে বেশ নাখোশ। সামনে কী করা যায় সে বিষয়ে আলোচনা চলছে।’
ইসরাইলি এ হামলার প্রতিবাদে এরইমধ্যে রবি ও সোম দুই দিনের সম্মেলনের ডাক দিয়েছে কাতার। যেখানে উপস্থিত থাকবেন আরব ও মুসলিম দেশগুলো।
ফিলিস্তিনিদের এ দুর্দশার দিনে পরিবেশবিদ গ্রেটা থুনবার্গের নেতৃত্বে তাদের পাশে দাঁড়িয়েছে ফ্রিডম ফ্রোটিলা। এরইমধ্যে ৪৪ টি ত্রাণ ভর্তি জাহাজ নিয়ে তিউনেশিয়া উপকূল থেকে আবারও যাত্রা শুরু করেছে গাজার উদ্দেশ্যে।
এদিকে গাজায় গণহত্যা বন্ধে ইসরাইলবিরোধী বিক্ষোভ হয়েছে জার্মানির বার্লিনে। যেখানে জড়ো হয়েছেন কয়েক হাজার মানুষ। সেসময় ইসরাইলকে অস্ত্র সরবারহ বন্ধে জার্মান সরকারকে আহ্বান জানান বিক্ষোভকারীরা।
বিক্ষোভকারীরা বলেন, ‘৭ অক্টোবর হামলা নিয়ে কিছু বলছি না। সেটা ভুল ছিলো। তবে এর জেরে ইসরাইলি সেনারা গাজায় যা করছে একে আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী গণহত্যা বলে। মানুষ যে ধর্মেরই হোক না কেন তাদের মৃত্যু কোনভাবেই কাম্য নয়। শান্তির জন্য কাজ করতে হবে। কূটনৈতিক উপায়ে যুদ্ধ বন্ধ হওয়া দরকার।’
এদিকে বন্দিদের মুক্তির দাবিতে তেল আবিবে বিক্ষোভ করছে ইহুদিরা। জিম্মিদের ছাড়াতে নেতানিয়াহুই একমাত্র বাধা বলে দাবি তাদের। এছাড়াও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রতারণার ফাঁদে পড়েই জিম্মিদের এখনও মুক্ত করতে পারছেন না তিনি। এমন অভিযোগ জিম্মির স্বজনদের।





