ঠাকুরগাঁওয়ে বিএনপির রাজনৈতিক কর্মীদের জন্য ৮ সেপ্টেম্বরের সকালটা ছিল ভিন্ন আবহের। দলের সম্মেলনে ঘিরে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে বড় মাঠে একদিকে যেমন জড়ো হচ্ছিলেন কাউন্সিলর ও আমন্ত্রিতরা। অন্যদিকে এ সমাগম তাদের জন্য হয়ে উঠেছে যেন মহা মিলনের উপলক্ষ।
ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপির সবশেষ কাউন্সিল হয়েছিল ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে। দিনক্ষণের হিসেবে যা সাত বছর আটমাস আগে। তবে দীর্ঘ সময় ধরে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াই সংগ্রামের ফসল ঘরে তোলার পর বড় কলেবরে এবারের সম্মেলনকে আগামী নির্বাচনের প্রস্তুতি হিসেবে দেখছেন নেতাকর্মীরা।
নেতাকর্মীদের মধ্যে একজন জানান, গত ১৫ বছর আওয়ামী শাসনামলে তারা কখনোই এরকম সম্মেলন করতে পারেননি। তাই এরকম সম্মেলনের আয়োজনে তারা বেশ উচ্ছ্বসিত।
সকাল এগারোটায় সম্মেলন স্থলে আসেন এ আয়োজনের উদ্বোধক, দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। যিনি ঠাকুরগাঁও সদর আসনের দলীয় প্রার্থী। এসময় দলের ভাইস চেয়ারম্যান সামছুজ্জামান দুদু ও রংপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুল হাবিব দুলুকে সঙ্গে নিয়ে সম্মেলনের উদ্বোধন করেন দলের মহাসচিব। উদ্বোধনী বক্তব্যে দেন তারেক রহমানের নেতৃত্বে টেকসই গণতন্ত্র নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি। নেতাকর্মীদের দেন ঐক্যবদ্ধ থাকার অনুশাসন।
এরপর আমন্ত্রিত অতিথিদের বক্তব্যের মাঝেই শুরু হয় কাউন্সিল অধিবেশন। ভোট দেন জেলার পাঁচ উপজেলা ও তিন পৌরসভা থেকে আগত আট'শ জনের অধিক কাউন্সিলর।
সভাপতি পদে ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপির বর্তমান সাধারণ সম্পাদক মির্জা ফয়সল আমিনের কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকায় আগামী দুই বছরের জন্য সভাপতি নির্বাচিত তিনি। গঠনতন্ত্রে ১৫১ সদস্যের কমিটির আকার হলেও মাত্র পাঁচ পদের বিপরীতে মনোনয়ন জমা করেছিলেন কেবল ১১ জন। পরে সাধারণ সম্পাদক পদে চারজন ব্যাতিত সবাই মনোনয়ন প্রত্যাহার করায় সেসব পদে ভোটের প্রয়োজন হয়নি।
বিকেলে বক্তব্য রাখেন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
২০১৭ সালের ৩১ ডিসেম্বর সর্বশেষ ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপির সবশেষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। যেখানে তৈমুর রহমানকে সভাপতি ও মির্জা ফয়সল আমিনকে সাধারণ সম্পাদক করে গঠন করা হয়েছিল ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপির কমিটি।
গঠনতন্ত্রে জেলা বিএনপির কমিটি দুই বছর পরপর গঠন হবার কথা থাকলেও কয়েক দফা তারিখ ঘোষণা করেও সম্মেলন আয়োজন করতে পারেনি ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপি।
তবে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর এমন বড় কলেবরে আয়োজিত সম্মেলন নেতাকর্মীদের যেমন দারুন চাঙা করেছে তেমনি আগামী নির্বাচনের জন্য দলকে ঐক্যবদ্ধ রাখতে ভূমিকা রাখবে বলে আশ করছেন নেতা কর্মীরা। তবে দলীয় শীর্ষ নেতৃত্বের অনুশাসন তৃনমুলে কতটা বাস্তবায়ন করতে পারেন তারা, সেটি এখন দেখার অপেক্ষা।





