বিদেশে এখন
0

একদিনে ইউক্রেনের ১৩৯টি এলাকায় রাশিয়ার হামলা

যুদ্ধবিমান, ড্রোন, ক্ষেপণাস্ত্র ও ট্যাংক দিয়ে একদিনে ইউক্রেনের ১৩৯টি এলাকায় হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। পূর্ব ইউক্রেনে দখল করে নিয়েছে রাশিয়ার আরও তিনটি গ্রাম। এক রাতে রাশিয়ার অর্ধশতাধিক ড্রোন ভূপাতিত করার দাবি করেছে ইউক্রেনের সেনাবাহিনী। এদিকে, উত্তর কোরীয় দুই সেনাকে আটকের পর নিজ দেশে ফেরত পাঠাতে রাজি ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট। বিনিময়ে ফেরত চান রাশিয়ায় বন্দি ইউক্রেনীয় সেনাদের।

যুদ্ধের হাজার দিন পেরোনোরও প্রায় দু'মাস চলছে। কিন্তু রক্তপাত, প্রাণহানি আর ধ্বংসযজ্ঞের শেষ কোথায়, তা এখনও অজানা।

ইউক্রেনের উত্তর-পশ্চিমে কুরাখোভ দখলের দিন না পেরোতেই ১০ মাইল দূরে ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে রাশিয়া নিয়ন্ত্রিত দোনেৎস্ক অঞ্চলের দুই গ্রাম দখলের কথা রোববার (১২ জানুয়ারি) জানায় রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। এর মধ্যে ইয়ানতার্নে গ্রাম ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধে কিয়েভের গুরুত্বপূর্ণ ঘাঁটি ছিল। এর আগে দোনেৎস্কের একটি সুপারমার্কেটে একটি ক্ষেপণাস্ত্র হামলা হয়। বেসামরিক স্থাপনায় এ হামলার জন্য ইউক্রেনকে দায়ি করেছে রাশিয়া। যুক্তরাষ্ট্রের সরবরাহকৃত হিমার্স ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে হামলাটি চালানো হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

বাসিন্দাদের একজন বলেন, ‘আমি আমার অর্থ লেনদেনের জায়গায় দাঁড়িয়েছিলাম। কাজ করছিলাম। আশপাশে লোকজন ছিল। কেউ কিছু বুঝে উঠতে পারেনি। হঠাৎই ভীষণ আওয়াজ। আর তারপরের অবস্থা তো বুঝতেই পারছেন।’

আরেকজন বলেন, ‘আর কী আশা করতে পারি? এসব যত দ্রুত শেষ হয়, ততোই মঙ্গল। আমরা যেন ততোদিন বেঁচে থাকতে পারি।’

কয়েক মাসের চেষ্টার পর যুদ্ধের সামনের সারির এলাকা- ওস্কিল নদীর পশ্চিম তীর পেরিয়ে উত্তরপূর্বাঞ্চলের খারকিভে কালিনোভ গ্রামেরও নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে রুশ সেনারা। ২৪ ঘণ্টায় যুদ্ধবিমান, ড্রোন, ক্ষেপণাস্ত্র ও ট্যাংক দিয়ে ইউক্রেনের মোট ১৩৯টি এলাকায় হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। হামলার লক্ষ্য ছিল ইউক্রেনের বিভিন্ন সামরিক বিমানঘাঁটি, সেনা কর্মকর্তা ও সাঁজোয়া যান। রাতভর রাশিয়ার ৯৪টি ড্রোনের মধ্যে ৬০টি ড্রোন ভূপাতিত করার কথা জানিয়েছে ইউক্রেনের সেনাবাহিনী।

এদিকে, রাশিয়ার কুরস্ক অঞ্চল থেকে উত্তর কোরিয়ার দুই সেনাকে আটকের পর তাদের ভিডিও প্রকাশ করেছে ইউক্রেন। অন্তত চার মাস ধরে রাশিয়ার হয়ে মিত্র উত্তর কোরিয়ার ১০ হাজারের বেশি সেনা যুদ্ধ করছে বলে কিয়েভ ও পশ্চিমা মিত্ররা দাবি করলেও শত্রুপক্ষের হাতে উত্তর কোরীয় সেনা জীবিত আটকের ঘটনা এটাই প্রথম। আটককৃত দুই সেনার বয়স ২৫ ও ১৯ বছর এবং তারা দুজন যথাক্রমে ২০১৬ ও ২০২১ সাল থেকে উত্তর কোরীয় সেনাবাহিনীতে কাজ করছেন।

বন্দিবিনিময়ের শর্তে উত্তর কোরীয় দুই সেনাকে দেশে ফেরত পাঠানোর প্রস্তাব দিয়েছে ইউক্রেন। যদিও একজন সেনা ইউক্রেনেই থেকে যাওয়ার ইচ্ছা জানিয়েছেন বলে দাবি করা হয়েছে। উত্তর কোরিয়ার সর্বোচ্চ নেতা কিম জন উনের উদ্দেশে বার্তা, রাশিয়ায় বন্দি ইউক্রেনের সেনাদের মুক্তির ব্যবস্থা করতে পারলে কিমের সেনাদেরও ফেরত পাঠাবেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট।

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কি বলেন, ‘ইউক্রেনের নিরাপত্তা কর্মকর্তারা উত্তর কোরীয় দুই বন্দি সেনার সঙ্গে কথা বলছে। একজন সেনা ইউক্রেনেই থেকে যেতে চান। অন্যজন নিজ দেশে ফিরতে চান। যদি কিম জং উন তার এই নাগরিকদের বিন্দুমাত্র মনে করতে পারেন এবং রাশিয়ায় আটক আমাদের সেনাদের জন্য বন্দিবিনিময়ের ব্যবস্থা করতে পারেন, তাহলে এই দুজনকে আমরা ফেরত পাঠাবো।’

এ বিষয়ে এখনও কোনো মন্তব্য করেনি কিম জং উন প্রশাসন। আন্তর্জাতিক আইন মেনে উত্তর কোরীয় সেনাদের হেফাজতে রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছে কিয়েভ। খতিয়ে দেখা হচ্ছে, ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে তাদের ভূমিকা।

ইএ