চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের গোয়াছি বাগান এলাকায় এই এক একর জায়গায় গড়ে উঠবে চট্টগ্রামের প্রথম ১৫০ শয্যার কাঙ্ক্ষিত বার্ন ইউনিট। দীর্ঘ যুগের প্রতীক্ষা আর চড়াই উতরাই পেরিয়ে এই কাজ শুরু হলেও সম্প্রতি প্রশ্ন উঠেছে প্রকল্পে পাহাড় কাটা নিয়ে। যেখানে পরিবেশ ছাড়পত্র ছাড়াই পাহাড়ের সবুজ সম্মুখভাগ কেটে করা হয়েছে এমন প্রাণহীন, বিবর্ণ।
প্রশ্ন ওঠায় পরিবেশ উপদেষ্টার নির্দেশে আপাতত কাজ বন্ধ রেখেছে কর্তৃপক্ষ। তাদের দাবি, পরিবেশ ছাড়পত্র পেলে আবারও শুরু হবে কাজ। তবে পুরো প্রক্রিয়াটিকে পাহাড় কাটা নয় বরং পাহাড় ও মূল ভবন সুরক্ষার কর্মকাণ্ড হিসেবে দাবি করছে কর্তৃপক্ষ। বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে তারা জানান, পাহাড়ের সামনের অংশ কাটার বিষয়টি মূলত পাহাড়কে ড্রেসিং করে ঢালু করার একটি ধাপ। পাহাড়ের মাটি খুব নরম হওয়ায় এখানে ব্যবহার করা হবে আধুনিক স্লোপ পদ্ধতি। যেখানে করা হবে সবুজায়ন ও রাখা হবে আধুনিক নিষ্কাশন ব্যবস্থা।
চট্টগ্রাম গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী কামরুল হাসান বলেন, ‘ বিভিন্ন সময় পাহাড় কেটে রাস্তা তৈরি করা হয় বা বড় ড্রেন করা হয় এখানে কিন্তু সেটা করা হচ্ছে না এখানে যা করা হচ্ছে তাকে সয়েল নেইলিং বলে থাকি আমরা। ’
চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ তসলিম উদ্দীন বলেন, ‘ পাহাড় রক্ষার জন্য এই স্লোপগুলো করা হচ্ছে ওখানে আরসিসি কলাম দিবে এরপর প্লান্টেশন করা হবে। এতে পুরো জিনিসটা সবুজায়ন করা হবে। এতে ওখানে থেকে মাটি বের হয়ে আসবে না।’
চীনা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের দাবি, পরিবেশকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে এই প্রকল্প করা হচ্ছে। তারা পাহাড় সুরক্ষায় যেই পদ্ধতি ব্যবহার করছে তাকে কার্যকর বলছে পরিবেশবাদী সংগঠনগুলো। তবে পরিবেশ ছাড়পত্র ছাড়াই এমন কাজ শুরুর বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন তাদের।
বার্ন ইউনিট প্রকল্পের প্রধান প্রকৌশলী মেই ইউ চিয়াং বলেন, ‘ঢালাই দিয়ে আবার মাটি দিয়ে ঘাস দেয়া হবে, যাতে পাহাড় ধসে না পড়ে। এছাড়া এখানে ড্রেনেজ সিস্টেম থাকবে যাতে পানি ঠিক মতো যেতে পারে।’
বেলার ফিল্ড অফিসার ফারমিন এলাহি বলেন, ‘যেকোনো প্রকল্পের কাজ শুরু করার আগে ইআইএ করতে হয়, তাদের ইআইএ নেই শুনে আমরা কিছুটা হতাশ হয়েছি। চামেক কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে এমনটা আশা করা যায় না।’
গত বছরের মে তে একনেকে অনুমোদন পাওয়া ৬ তলার এই বার্ন ইউনিটে থাকবে ১০ টি আই সি ইউ, ২৫ টি এইচ ডি ইউ ও ১২৫ শয্যার সুবিধাসহ নানা অত্যাধুনিক সেবা। ঠিকঠাকমতো কাজ এগুলো আগামী দুই বছরের মধ্যে চালু করা যাবে এই কাঙ্ক্ষিত বার্ন ইউনিট।