‘অপরের জন্য বাঁচো, সবার কল্যাণে আত্মত্যাগে উদ্বুদ্ধ হও’ এই বাণী নিয়ে পৃথিবীতে এসেছিলেন যিশু।
ঈশ্বরপুত্র যিশুকে বরণে কোনো কমতি রাখতে চান না খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বীরা। বড়দিন উপলক্ষে রঙিন কাপড় আর আলোকসজ্জায় সাজানো হয়েছে রাজধানীর চার্চগুলোকে। প্রস্তুত করা হয়েছে গোয়ালঘর। শেষ হয়েছে অন্যান্য প্রস্তুতিও।
তেজগাঁও চার্চের ফাদার জয়ন্ত এস. গমেজ বলেন, ‘তিনি জগৎকে শান্তি দিতে জন্ম নিয়েছেন। যাতে বিশ্বের মানুষের মাঝে হানাহানি বন্ধ হয়। আমরা পরস্পরকে গ্রহণ করি।’
শুধু চার্চ নয়, বড়দিন উপলক্ষে চার্চের সামনের দোকানগুলোতেও সাজসাজ বর। জমে উঠেছে বেচাকেনা। তবে গতবছরের চেয়ে এবার বিক্রি কিছুটা কম।
বাসিন্দাদের একজন বলেন, ‘জিনিসপত্রের অনেক দাম। একটু বাহির থেকে আনতে হয়। সবার জন্যই সমস্যা।’
দোকানিদের একজন বলেন, ‘দশ তারিখ থেকে ২০ তারিখের মধ্যে খুব ভালো বেচা কেনা হয়।’
এতো গেলো বাইরের খবর। বড়দিনে রাজধানীবাসী তাদের অন্দরমহল কতটা সাজিয়েছে তা দেখতে গিয়েছিলাম বার্নার্ড রসির বাসায়।
স্ত্রী সিলভিয়া তখনো বড়দিনের শপিং এ ব্যস্ত থাকায় বন্ধুকে নিয়েই ঘর সাজানোর কাজটি সেরে ফেলেছেন তিনি। ক্রিসমাস ট্রি, রঙবেরঙের রিবন, সান্তা ক্লজ, কেক আর টুনি বাতি; সবমিলিয়ে বড়দিনের চমৎকার আয়োজন করেছেন রসি।
বার্নার্ড রসি রায় বলেন, ‘আয়োজনে থাকে সকাল বেলায় ঘুম থেকে উঠবো একটু গির্জায় যাবো। ফ্রেন্ডের সার্কেলের সাথে আড্ডা দিবো। ঈশ্বরের কাছে একটা জিনিসই চাই আমার আপন মানুষরা বহুদিন যেন আমার চোখের সামনে বেচে থাকে।’
বড়দিন উপলক্ষে এবারেও রাজধানীর তারকা হোটেলগুলোতে রয়েছে নানা আয়োজন। ঢাকার ২টি তারকা হোটেল গতকাল পর্যন্ত বড়দিনের কেকের প্রি-অর্ডার পেয়েছে ৯০০ কেজির বেশি। যার বাজার মূল্য প্রায় ৫০ লাখ টাকা। তবে ২৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত এই অর্ডার ১৫০০ কেজি ছাড়িয়ে যাওয়ার আশা করছে হোটেল কর্তৃপক্ষ।
ইউনিক হোটেল অ্যান্ড রিসোর্টস পিএলসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘বড়দিন উপলক্ষে কেকের অর্ডার প্রায় ৫০০ কেজির মতো এসেছে। আমরা অলরেডি অনেক বুকিং পেয়েছি।’
রাজধানীর তারকা হোটেলগুলোতে বড়দিন উপলক্ষ্যে রয়েছে 'বাই ওয়ান গেট ওয়ান' অফারসহ বিশেষ ক্রিসমাস কার্নিভ্যাল। এছাড়া শিশুদের জন্যও রয়েছে নানা আয়োজন।
প্রেম আর ভ্রাতৃত্ব। এই মূলমন্ত্র পৃথিবীতে ছড়িয়ে দিতেই প্রভু যিশুর জন্ম হয়েছিল। খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীরা বিশ্বাস করেন, যিশু ঈশ্বরের সঙ্গে তাঁদের পুনর্মিলন ঘটাবেন, আর সারা বিশ্বে ছড়িয়ে দিবেন শান্তির বার্তা। তাইতো তারা সারাবছর ধরে অপেক্ষায় থাকেন ঈশ্বর পুত্রের আগমনি দিনের।