ওশেনিয়া
বিদেশে এখন
0

শিশুদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার নিষিদ্ধে আইন পাস অস্ট্রেলিয়ায়

১৬ বছরের কম বয়সী শিশুদের জন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার নিষিদ্ধে আইন পাস করলো অস্ট্রেলিয়া। বিশ্বে প্রথমবারের মতো প্রণীত আইনটি অমান্য করলে প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোকে গুণতে হবে দুই কোটি ৫৭ লাখ ডলার পর্যন্ত জরিমানা। অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রীর আশা, আইনটি কার্যকরের ফলে সামাজিকীকরণে অভ্যস্ত হবে শিশুরা। যদিও ভিপিএনের মতো টুল ব্যবহারে বিকল্প প্রক্রিয়ায় সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারের শঙ্কা থেকেই যাচ্ছে। একইরকম আইন প্রণয়ন করার আহ্বান জানিয়েছেন ভেনিজুয়েলার প্রেসিডেন্ট।

নানা জল্পনা কল্পনা শেষে অস্ট্রেলিয়ায় পাস হলো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম নিয়ন্ত্রণ বিল। এর আওতায় বিশ্বে প্রথমবারের মতো ১৬ বছরের কম বয়সী শিশুদের জন্য নিষিদ্ধ করা হলো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার।

উচ্চকক্ষ সিনেট ও নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদে পাসের পর বিলটি পরিণত হয়েছে আইনে। যা কার্যকর হবে ১২ মাস পর। এর মাঝে জানুয়ারি থেকে চলবে আইনের পরীক্ষামূলক প্রয়োগ। ১৬ বছরের কম বয়সী শিশুদের অ্যাকাউন্ট বন্ধ করতে না পারলে প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোকে গুণতে হবে দুই কোটি ৫৭ লাখ ডলার পর্যন্ত জরিমানা। তবে জরিমানার আওতার বাইরে থাকবে শিশুরা। অস্ট্রেলিয়ান প্রধানমন্ত্রীর আশা, আইনটি কার্যকরের ফলে সামাজিকীকরণে অভ্যস্ত হবে শিশুরা।

অস্ট্রেলিয়া প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজ বলেন, 'নেট বল, ক্রিকেট সেশন কিংবা টেনিস অথবা অ্যাথলেটিক্সে শিশুদের অংশগ্রহণ বাড়বে। বিকালে স্কুল থেকে ফেরার সময় কিংবা সকালে স্কুলে পাঠানোর পথে বাবা-মা সন্তানের সঙ্গে এ বিষয়ে গল্প করবে।'

তবে আইনটি নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে অস্ট্রেলিয়ান জনগণের মধ্যে। কেউ বলছেন, অভিভাবকের বদলে সরকারকে শিশুদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব প্রদান অনভিপ্রেত। আবার কঠোর আইন প্রণয়নের জন্য অনেকেই ধন্যবাদ দিচ্ছেন আলবানিজ প্রশাসনকে।

স্থানীয় একজন বলেন, 'শিশুদের জন্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উপযুক্ত নয়। অনেক সময় তাদের সামনে প্রাপ্তবয়স্কদের কনটেন্ট চলে আসছে। তাই আমার মতে শিশুদের সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রবেশাধিকার নিয়ন্ত্রণ জরুরি।'

শিশুদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হবে? সে বিষয়ে আইনে পরিষ্কার করা হয়নি। ট্রায়াল এনফোর্সমেন্ট পিরিয়ডে বয়স নির্ণয় প্রযুক্তির সহায়তা নেয়ার পরিকল্পনা করছে সরকার। যদিও ভিপিএনের মতো টুলের সহায়তায় বিধিনিষেধ এড়ানো সম্ভব। শঙ্কা রয়েছে এই আইনের মাধ্যমে ব্যক্তিগত তথ্য যেতে পারে সরকারের নিয়ন্ত্রণে।

এদিকে অস্ট্রেলিয়ার মতো আইন পাস করতে কংগ্রেসকে আহ্বান জানিয়েছেন ভেনিজুয়েলার প্রেসিডেন্ট। এক পডকাস্টে অংশ নিয়ে ভেনিজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো জানান, শিশুদের সুরক্ষিত করার এটিই মোক্ষম সুযোগ।

তিনি বলেন, 'বিশেষ আইনের আওতায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে নিয়ন্ত্রণের আওতায় আনা উচিত। ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলিকে আহ্বান জানাচ্ছি, দ্রুতই জনগণের সঙ্গে ঐক্যমত গড়ে তুলুন। শিশুদের সুরক্ষিত করতে অস্ট্রেলিয়ার মতো আইন প্রণয়ন করুন।'

গেল বছর ১৫ বছরের কমবয়সী শিশুদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা দেয় ফ্রান্স। যদিও সেখানে অভিভাবকদের অনুমতি নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারের নিয়ম যুক্ত করা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে ইউটাহ অঙ্গরাজ্যে অনূর্ধ্ব ১৪ বছরের শিশুদের জন্য একই আইন প্রণয়ন করা হলেও একে অসাংবিধানিক রায় দেন আদালত। অস্ট্রেলিয়ার পদচিহ্ন অনুসরণের চিন্তা করছে যুক্তরাজ্য ও নরওয়ে।

এসএস