কাক ডাকা ভোর। গাছ থেকে খেজুরের রস নামাতে ব্যস্ত গাছিরা। রস নামানোর পরই শুরু হয় গুড় তৈরির প্রক্রিয়া। রাসায়নিক কোনও দ্রব্য ব্যবহার ছাড়াই তৈরি করা হয় এসব গুড়। আর প্রতি কেজি বিক্রি হয় ৬শ থেকে ৭শ টাকায়।
গুন, মান ও স্বাদে অতুলনীয় হওয়ায় ফরিদপুরের খেজুর গুড় ও পাটালির খ্যাতি দেশজুড়ে। তাইতো সকাল থেকেই গুড় কিনতে ভিড় করেন স্থানীয়সহ অন্য এলাকার ক্রেতারাও। জেলার চাহিদা মিটিয়ে এই গুড় যায় দেশের বিভিন্ন স্থানে। তবে উৎপাদন কম হওয়ায় ক্রেতাদের চাহিদামতো গুড় দিতে পারেন না গাছিরা।
গত কয়েক বছরে গুড়ের ঐতিহ্য ধরে রাখতে নানা উদ্যোগ নিয়েছেন তরুণ উদ্যোক্তারা। তবে এ ক্ষেত্রে নানা সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছেন তারা। আগের চেয়ে সংখ্যা কমছে খেজুর গাছের, এছাড়া গাছ কাটতে গাছিও পাওয়া যায় না। রাজশাহী ও যশোরসহ বিভিন্ন জেলা থেকে আনতে হয় গাছিদের।
তরুণ উদ্যোক্তা এনামুল হাসান গিয়াস বলেন, ‘আমার ৬০০ গাছ আমি নিজেই ৭ জন গাছিদের দিয়ে আবাদের আওতায় নিয়ে এসেছি। আমি আশা করছি এবার ভালো পরিমাণে গুড় উৎপাদন হবে। এছাড়া প্রতিদিন প্রায় দেড়শ হাড়ি রস আসবে বলে ধারণা করছি।’
সম্প্রতি কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে লাগানো হচ্ছে খেজুর গাছ। এছাড়া গুড় তৈরির সময় উদ্যোক্তারা যাতে কোনও কেমিকেল ব্যবহার না করেন সেজন্য দেয়া হচ্ছে সব ধরনের পরামর্শ।
ফরিদপুর সদরের কৃষি কর্মকর্তা মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘আমাদের ৩৪ টি ব্লকে ১০ হাজার খেজুর গাছ এবং ১০০টি তাল গাছ রোপণ করা হয়েছে। আমরা আশাবাদী ফরিদপুর জেলার খেজুরের গুঁড়ে যে ঐতিহ্য রয়েছে তা বহমান থাকবে। এখান থেকে আমাদের স্থানীয় উদ্যোক্তারা অনেক লাভবান হবেন।’
খেজুর গুড়ের ঐতিহ্য ধরে রাখতে উদ্যোক্তাদের পাশে দাঁড়াবে প্রশাসন এমন প্রত্যাশা স্থানীয়দের। কৃষি অফিসের তথ্যমতে ফরিদপুরে ছোট বড় দেড় লাখেরও বেশি খেজুর গাছ রয়েছে।