বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে এক হাত হারিয়ে আরেক হাতও দেশের জন্য দিতে চাওয়া আতিকুল ফিরে পাচ্ছেন হাত। কিন্তু সেটা আর্টিফিসিয়াল, রোবটিক্স হাত।
রোবটিক্স হাতটি দিয়ে অন্তত সামান্য হলেও সহযোগিতা পাবেন যাপিত জীবনে। কিন্তু হাত হারিয়ে তার যতটা না দুঃখ, তার চেয়েও বেশি দুঃখ গুলিতে বন্ধুদের হারিয়ে।
আতিকুল বলেন, ‘আমি এমনও দেখছি গুলিবিদ্ধ হয়ে আমার ভাইদের মাথার মস্তকও আলাদা হতে।’
যশোরে আন্দোলনে আহত ব্যক্তিদের রক্ত দিতে গিয়ে বাড়ি ফেরার সময় নাঈম হাসানও হারিয়েছেন হাত। এক কোপেই ছাত্রলীগ কর্মীরা শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেয় নাঈমের হাত। বাবাকে তাই সঙ্গে নিয়েই এসেছেন হাত বিতরণ অনুষ্ঠানে।
নাঈম বলেন, ‘যখন আন্দোলন থেকে ফিরছিলাম তখন আমার উপরে হামলা করা হয়। হামলার সময় তাদের হাতে দা, ছুরি ছিল। আমার হাতে কোপ লাগায় হাতটা কেটে পড়ে যায়।’
সারাদেশের বিভিন্ন জায়গায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হাত হারানো ৫ ব্যক্তিকে দেয়া হয় রোবটিক্স হাত। লেভেল ২ ও ৩ এর এসব হাত কোনটি ব্রেইনের মেসেজের মাধ্যমে আবার কোনটি কাজ করবে অটোমেটেড সুইচের মাধ্যমে। এতে কিছুটা হলেও জীবন্ত এসব শহীদদের জীবনকে আরো কিছুটা সহজ করবে।
আইসিটি ডিভিশনের সহযোগিতায় রোবোলাইফ টেকনোলজিসের দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি এসব হাতের অর্থায়ন করে ব্যবিলন গ্রুপ। রোবোলাইফ বলছে, অন্তত চারটি দেশে রপ্তানির পাশাপাশি দেশেও ৬০ জনকে তারা হাত প্রতিস্থাপন করে সফলতা পেয়েছেন। তাই এবার আন্দোলনে আহতদেরও সরবরাহ করলেন রোবটিক্স হাত।
রোবোলাইফ টেকনোলজির প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জয় বড়ুয়া লাবলু বলেন, আমরা খোঁজ খবর নেয়ার পরে আন্দোলনে হাত হারানো ৫ জনকে হাতগুলো দিয়েছি। এখানে দুই ধরনের হাত দেয়া হয়েছে ব্রেইন ও অটোমেটিক কন্ট্রোলের হাত।’
হাত বিতরণ শেষে আইসিটি ডিভিশনের সচিব জানান, সহানুভূতি দেখানো ছাড়াও হাত হারানো এসব ব্যক্তিদের জন্য আমরা কিছু করতে চাই, সেই পদক্ষেপের অংশ হিসেবেই আমরা রোবটিক্স হাতগুলো বিতরণ করছি।
আইসিটি বিভাগের সচিব শীষ হায়দার চৌধুরী বলেন, রোবোলাইফের হাতের সফলতা আমরা দেখলাম। খুবই ভালো। জন্মগতভাবে হাত পেয়ে যারা হারিয়েছে তাদের এই হাত কিছুটা হলেও সুবিধা দিবে। অনুভূতিটা আগের মতো না পেলেও তারা ভিউটা দেখতে পাবে যে হাত আছে।’
৩০ হাজার টাকা থেকে শুরু করে প্রায় ২ লাখের মধ্যে এসব হাত পাওয়া যায়।