কয়েক মাসের দীর্ঘ প্রচারাভিযান। তারপর ৪৭তম মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শুরুর আগে সকল আলোচনা থিতু হলো, ঠিক যেখান থেকে আলোচনা শুরু হয়েছিল।
ডেমোক্র্যাট প্রেসিডেন্টপ্রার্থী কামালা হ্যারিস আর রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের সিগনেচার ইস্যু হিসেবে শুরু থেকেই পরিচিত দু'টি বিষয়- গর্ভপাত আর অভিবাসন।
প্রেসিডেন্ট হিসেবে যোগ্য প্রার্থীকে বাছাইয়ে গেলো ক'দিনে ভোটারদের সকল আলোচনা ছিল এ দু'টি বিষয়কে ঘিরেই। অনেকেই ভোটাধিকার প্রয়োগের ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কোন বিষয়টি, সে সিদ্ধান্ত নিতে ব্যবহার করেছেন মা-বাবা হিসেবে, প্রতিবেশী কিংবা বন্ধু হিসেবে নিজেদের ব্যক্তিগত দৃষ্টিভঙ্গি।
একজন বলেন, ‘আমার কাছে এটি ব্যক্তিগত ইস্যু। কারণ আমি প্রাচুর্যে বড় হইনি। মা-বাবা বিচ্ছিন্ন পরিবারে বড় হয়েছি। তাই জানি যে সংগ্রাম কী। এই জীবন আর কারো জন্য চাই না আমি। এই দেশের জন্যও না।’
আরেক ভোটার বলেন, ‘অল্প ক'জনের দৃষ্টিভঙ্গির ভিত্তিতে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছানোর উপায় নেই। কিন্তু অন্তত এটুকু জানা যায় যে প্রার্থীদের শেষ দিনগুলোর প্রচার মার্কিন ভোটারদের চিন্তায় কতটা প্রভাব ফেলেছে।’
ট্রাম্প সমর্থকদের কাছে গুরুত্ব পেয়েছে অবৈধ অভিবাসনে লাগাম টানার বিষয়টি, যেটি প্রেসিডেন্ট হিসেবে ট্রাম্পের বিগত আমলেও ছিল জোর আলোচনায়।
কারণ ২০১৬ সালের নির্বাচনে রিপাবলিকানদের ভোট দেয়ার এক নম্বর কারণ হিসেবে উঠে এসেছিল ট্রাম্পের অভিবাসন বিরোধিতা। এছাড়া দুর্বল অর্থনীতি, উচ্চ মূল্যস্ফীতি, জীবনযাত্রার উচ্চ ব্যয় ইত্যাদি বিষয়েও গুরুত্ব দিয়েছেন ট্রাম্প সমর্থকরা।
সবকিছুর দাম কীভাবে বাড়ছে! বাড়িভাড়া এখন আকাশছোঁয়া। বাইডেন প্রশাসনের আমলে কঠিন জীবন পার করছে, এমন অনেক মানুষকে আমি ব্যক্তিগতভাবে চিনি। খুব আশা করছি যেন ট্রাম্প ভালো কিছু করতে পারেন।
অন্যদিকে বর্তমান ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং ডেমোক্র্যাট প্রেসিডেন্টপ্রার্থী কামালার সমর্থকরা গুরুত্ব দিচ্ছেন নারীদের গর্ভপাতের অধিকার রক্ষার প্রতিশ্রুতিতে।
বর্তমান প্রশাসনের নেতৃত্বে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং নিম্নমুখী বেকারত্বে সন্তুষ্ট তারা। এছাড়া জাতিবিদ্বেষী ও আক্রমণাত্মক মন্তব্যে ট্রাম্পের দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়াও কামালাকে সমর্থনের অন্যতম কারণ।
নারীদের নিজেদের শরীরের সিদ্ধান্ত নেয়ার অধিকার শুধু তাদেরই। কোনো আইন দিয়ে একে আটকানো আমি পছন্দ করছি না। তাই নির্বাচনের এ মৌসুম নিয়ে আমি উদ্বিগ্ন।
নির্বাচনপূর্বপ্রায় সব জরিপে অর্থনীতি, অভিবাসন আর সীমান্ত সংকট ইস্যুতে ট্রাম্প এগিয়ে থাকলেও সামগ্রিকভাবে প্রেসিডেন্ট পদে জয়ের সম্ভাবনায় এগিয়ে কামালাই।