আমদানি রপ্তানির আড়ালের অর্থপাচার বিশ্বজুড়ে নিয়মিত ঘটনা হলেও, ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের গত টানা তিন মেয়াদে তা লাগাম ছাড়িয়েছে সব হিসেবে নিকেশের। এ ধরনের দুর্নীতিতে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে ব্যাংকসহ আর্থিক খাতকে।
শনিবার সকালে, ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম-ইআরএফ আয়োজিত সেমিনারে ঘুরে ফিরে এসেছে এই অর্থপাচারের প্রসঙ্গ।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘গত দেড় দশকে রাষ্ট্রীয় কাঠামোকে ব্যবহার করে দেশ থেকে পাচার হয় প্রচুর অর্থ। বছরে গড়তে ১২শ' থেকে ১৫শ' কোটি পাচার হয়েছেও বলে দাবি করেন তিনি। এই অর্থ ফেরাতে বিভিন্ন দেশের সাথে আইনি চুক্তি ও সমঝোতার আহ্বান তার।
তিনি বলেন, ‘প্রায় দুই শতাধিক ব্যক্তির বিরুদ্ধে অর্থাৎ উচ্চ পর্যায়ের ব্যক্তি, মন্ত্রী, এমপিদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করেছে দুদক। সেটিকে আমরা ভালোভাবে ইতিবাচকভাবেই দেখতে চাই। কিন্তু যে ব্যক্তিগুলোর সম্পর্কে তারা অনুসন্ধান শুরু করেছে। তাদের সমর্থক সুনির্দিষ্ট তথ্য কিন্তু দীর্ঘদিন দুদকের হাতে ছিল।’
টিআইবি'র নির্বাহী পরিচালক বলেন, ‘দুদক এরইমধ্যে প্রমাণ করেছেন যে, যারা ক্ষমতায় থাকেন বা ক্ষমতার সাথে কোনো না কোনোভাবে সংশ্লিষ্ট তাদের দুর্নীতির ক্ষেতে কোনো পদক্ষেপ নিতে পারেন না বা নিতে চান না, নেয়ার মতো সৎসাহস, দৃঢ়তা নেই। সেটি চাপের মুখেই হোক বা রাজনৈতিক বায়াস্টের কারণে হোক বা যে কারণেই হোক।’
সেমিনারে এমিরেটাস অধ্যাপক আনিসুজ্জামান চৌধুরী বলেন, ‘দেশ থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার করেছেন আওয়ামী লীগের এমপি মন্ত্রীরা। তাদের অর্থ পাচারের মামলা করে, পাচারকৃত অর্থ ফেরত আনতে হবে।’
প্রয়োজনে তাদের সম্পত্তি ক্রোক করার পরামর্শও দেন তিনি।
অনুষ্ঠানে বক্তারা আরও বলেন, এই বিপুল পরিমাণের অর্থ পাচার না হলে এতো পরিমাণ বৈদেশিক ঋণ নেওয়া প্রয়োজন হতো না। পাচারের অর্থ ফেরাতে রোডম্যাপ করার পাশাপাশি আইনি জটিলতা নিরসনের পরামর্শও দেন বক্তারা।