আগামী ৫ নভেম্বরের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে কে ক্ষমতায় আসছেন তা নিয়ে চলছে নানা ব্যাখ্যা ও বিশ্লেষণ। তবে একদম নিশ্চিত করে বলা সম্ভব না হলেও, বিভিন্ন জরিপের ফলাফলে কিছুটা আভাস পাওয়া যায়। ডেমোক্র্যাট প্রার্থী কামালা হ্যারিস ও রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যে চলছে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই। গত কয়েক দশকের মধ্যে এবারই সবচেয়ে বেশি প্রতিযোগিতা দেখা যাচ্ছে।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল–জাজিরার এক প্রতিবেদন বলছে, বিজয়ী প্রার্থী সম্পর্কে ধারণা দিতে পারে মার্কিন শেয়ারবাজারের পরিস্থিতি। যুক্তরাষ্ট্রের ৫০০টি বড় তালিকাভুক্ত কোম্পানির শেয়ারের লেনদেন এবং মূল্য পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে একটি জরিপ চালায় এসঅ্যান্ডপি ৫০০ সূচক। ১৯২৮ সাল থেকে তারা এ কাজটি করে আসছে। এই সূচক বিশ্লেষণে গত ২৪টি নির্বাচনের মধ্যে ২০টির ফলাফল সম্পর্কে সঠিক ভবিষ্যদ্বাণী করেছে আর্থিক এই সেবা কোম্পানি।
ভোটের তিন মাস আগে থেকে শেয়ারবাজারে ঊর্ধ্বগতি থাকলে হোয়াইট হাউস ক্ষমতাসীনদের দখলেই থাকে। গত ১৫টি নির্বাচনের ১২টিতেই এ ঘটনা ঘটেছে। অন্যদিকে বাজার নেতিবাচক থাকলে ক্ষমতাসীনদের পরাজয় হয়। যা ৯টির মধ্যে ৮টি নির্বাচনে এমন চিত্র দেখা গেছে। বিশ্লেষকদের মতে, নির্বাচনী ফলাফল নিয়ে পূর্বাভাস দেয়ার এই মডেলটি যথেষ্ট গ্রহণযোগ্য।
আগস্ট মাসের শুরুর দিকের তুলনায় এখন পর্যন্ত এসঅ্যান্ডপি ৫০০ সূচক ১১ দশমিক ৮ শতাংশ বেড়েছে। সামনে নাটকীয় কিছু না ঘটলে এবং শেয়ারবাজারে বড় ধরনের ধস না নামলে হোয়াইট হাউসের ক্ষমতায় কামালা হ্যারিসই এগিয়ে থাকবেন।
তবে কামালার জন্য দুঃসংবাদ হচ্ছে, শেয়ারবাজারের শক্ত অবস্থান মানেই অর্থনীতি ভালো- এমনটি বিশ্বাস করেন না ভোটাররা। প্রায় ৬১ শতাংশ মার্কিন নাগরিকের শেয়ারে বিনিয়োগ আছে। যদিও ভোটারদের একটা বড় অংশের শেয়ারবাজারে সরাসরি কোনো অংশগ্রহণ নেই। এনওআরসি গবেষণা প্রতিষ্ঠানের জরিপ বলছে, নিবন্ধিত ভোটারদের ৬২ শতাংশের ধারণা মার্কিন অর্থনীতি এখন খারাপ অবস্থায়। যাদের বেশিরভাগই রিপাবলিকান বা দলনিরপেক্ষ।
জিডিপি প্রবৃদ্ধি ও নিম্ন বেকারত্বের হার থাকলেও মূল্যস্ফীতির কারণে জনগণের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। এছাড়াও, মজুরি বাড়লেও জীবনযাত্রার ব্যয় মেটানোর জন্য তা যথেষ্ট না। করোনা মহামারির পর মজুরি ও মূল্যস্ফীতির যে ব্যবধান, তা ২০২৫ সালেও সমতায় আসবে না বলেই মত সংশ্লিষ্টদের।
বিশেষজ্ঞদের মতে, শেয়ারবাজারের এমন পরিসংখ্যান ও ভবিষ্যদ্বাণী নিয়ে তেমন আশাবাদী হওয়ারও কিছু নেই। কারণ নির্বাচন ও রাজনীতি ধরাবাঁধা ধ্যানধারণা মেনে চলে না। ২০১৬ সালে ট্রাম্প বিজয়ী হয়ে অনেক পুরোনো নজির ভেঙে দিয়েছিলেন। এছাড়া, সবশেষ নির্বাচনের তিন মাস আগে সূচক বেড়েছিল ২ দশমিক ৩ শতাংশ। তখন ট্রাম্প প্রশাসন থাকলেও শেষ পর্যন্ত ক্ষমতায় আসেন ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জো বাইডেন।