এশিয়া
বিদেশে এখন
0

যুদ্ধবিরতিতে জাতিসংঘের হস্তক্ষেপ কামনা ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্টের

গাজার খান ইউনিসে ইসরাইলি হামলায় আরও ২৮ জনের প্রাণহানি হয়েছে। হামলা হয়েছে জাবালিয়ায় শরণার্থী শিবির হিসেবে ব্যবহৃত অন্তত ১০টি আবাসিক ভবনে। এতে নারী ও শিশুসহ অন্তত দেড় শতাধিক ফিলিস্তিনি হতাহত হয়েছে বলে আশঙ্কা করছে গাজার সিভিল ডিফেন্স কর্তৃপক্ষ। হামলা হয়েছে বেইত লেহিয়ার একটি হাসপাতালেও। এছাড়া ইসরাইলি আগ্রাসন অব্যাহত আছে লেবাননের বৈরুতে। বৃহস্পতিবার রাতভর হামলায় বৈরুতের দক্ষিণাঞ্চলে আরও ১৯ জন নিহত হয়েছে। এদিকে ব্রিকস সম্মেলনে অংশ নিয়ে গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকরে জাতিসংঘের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস।

সামান্য রুটির টুকরোর জন্য মানুষের এই হাহাকারই বলে দেয় কতটা ভয়াবহ পরিণতির দিকে এগোচ্ছে মধ্যপ্রাচ্য পরিস্থিতি। বৃহস্পতিবার গাজার দেইর আল বালাহ শহরের একটি রুটি তৈরির কারখানার বাইরে এভাবেই ভিড় করেন অসহায় ফিলিস্তিনিরা। তাদের অধিকাংশই পালিয়ে এসেছেন জাবালিয়া থেকে।

ফিলিস্তিনিদের মধ্যে একজন জানান, সকাল ৬টা থেকে রুটির জন্য দাঁড়িয়ে আছি। আমার পরিবারে মোট ১৪ জন সদস্য। হ্যাঁ আপনি ঠিকই শুনেছেন, আমরা ১৪ জনের একটি পরিবার। যদিও এক টুকরো রুটি সংগ্রহ করতে পারিনি। যুদ্ধে আমাদের মৃত্যু না হলেও, খাবারের অভাবে আমরা মারা যাব।

গাজায় চলমান আগ্রাসনের মধ্যেই ব্রিকস সম্মেলনে অংশ নিয়েছেন ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস। অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি কার্যকরে জাতিসংঘের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি। আর গাজা, লেবানন, ইউক্রেন ও সিরিয়ায় শান্তি প্রতিষ্ঠায় বিশ্ব নেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস।

ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস বলেন, 'আমরা জাতিসংঘ ও মধ্যস্থতাকারীদের সাথে নিয়ে আন্তর্জাতিক শান্তি সম্মেলনের পরিকল্পনা করছি। এ বিষয়ে ব্রিকসের সদস্য রাষ্ট্রের সহায়তা কামনা করি। আন্তর্জাতিক পরিসরে শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিতে আপনাদের গুরুত্ব অপরিসীম।'

জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, 'জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাবনা অনুসারে যত দ্রুত সম্ভব লেবাননে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে হবে। আন্তর্জাতিক আইন ও জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে গৃহীত প্রস্তাব অনুসারে ইউক্রেনেও শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে হবে।'

যুদ্ধক্ষেত্রে আগ্রাসী ভূমিকা রাখলেও নিজ দেশে চাপের মুখ ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহু। বৃহস্পতিবার, জেরুজালেমে বিক্ষোভ করেছেন ইসরাইলি জিম্মি পরিবারের সদস্যরা। এদিন, নেতানিয়াহুর বাসভবনের সামনে জড়ো হয়েও স্লোগান দিতে দেখা যায় কয়েকশ বিক্ষোভকারীকে।

এমন পরিস্থিতিতে আবারও যুদ্ধবিরতির আলোচনায় বসতে সম্মত হয়েছো ইসরাইল। রোববার কাতারের দোহায় বিশেষ প্রতিনিধিদল পাঠানোর কথাও জানায় তেল আবিব।

এদিকে উত্তপ্ত লেবানন পরিস্থিতি। বৃহস্পতিবার রাতভর দেশটির রাজধানী বৈরুতের দক্ষিণাঞ্চলে বিমান হামলা চালায় ইসরাইল। এতে বেশ কয়েকজনের প্রাণহানির খবর পাওয়া গেছে। এছাড়াও, লেবানন- ইসরাইল সংঘাতের সবশেষ তথ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে নিহত হয়েছে অন্তত ৩ সংবাদকর্মী।

বৈরুতের বিভিন্ন এলাকায় অন্তত ১২টি আলাদা বিমান হামলা চালিয়ে হিজবুল্লাহর রাদওয়ান ফোর্সের কমান্ডার আব্বাস আদনান মাসলামকে হত্যার দাবি করেছে নেতানিয়াহু বাহিনী। যদিও, এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি ইরান সমর্থিত সশস্ত্র এ গোষ্ঠীটি।