কোভিডের ধাক্কার পরপরই রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাত মার্কিন অর্থনীতিতে বড় ধরনের আঘাত হানে। মহামারি ও যুদ্ধের কারণে বিশ্বজুড়ে নিত্যপণ্যের দাম অপ্রত্যাশিতভাবে বাড়তে শুরু করায় বড় ধরনের বাজেট ঘাটতিতে পড়ে পশ্চিমা কয়েকটি দেশ। অর্থনীতি বিষয়ক গবেষণা সংস্থা ইউএসডিএ-এর পর্যবেক্ষণ অনুসারে, ২০২৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রে সাধারণের খাদ্যপণ্যের দাম ২ দশমিক ২ শতাংশ হারে বেড়েছে। আগামী বছর এসব খাদ্যের দাম আরও ২ শতাংশ বাড়বে এমন আশঙ্কা সংস্থাটির।
এই পরিসংখ্যানই বলে দেয়, আসন্ন মার্কিন নির্বাচনে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে ভাবতে হবে রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাট প্রার্থীকে। সিএনএন ও এনবিসি নিউজকে দেয়া আলাদা দু'টি সাক্ষাৎকারে স্পষ্টভাষায় সেই আভাস দিয়েছেন ডেমোক্র্যাট প্রার্থী কামালা হ্যারিস। এনবিসি নিউজকে কামালা বলেন, এ এদেশের মানুষ যেমন ফিলিস্তিনিদের ওপর নির্যাতন বন্ধের দাবি জানিয়েছে, ঠিক একইভাবে তারা চায় নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের দাম নাগালের মধ্যে থাকুক।
এর আগেও, নানা সাক্ষাৎকার ও প্রচারণা সভায় কামালা বলেছিলেন, যারা বড় বড় ইকনোমিক পলিসির দোহাই দিয়ে ফেডারেল ঋণের পরিমাণ বাড়াতে চায় তাদেরকে কেউ প্রেসিডেন্ট হিসেবে দেখতে চায় না। গেল বুধবার এনবিসি নিউজকে দেয়া সাক্ষাৎকারে আবারও একই বিষয়ে কথা বলেন এই ডেমোক্র্যাট প্রার্থী। কামালা মন্তব্য করেন, জীবনযাত্রার ব্যয় কমাতে পারবে এমন একজন নেতাকেই মার্কিনরা প্রেসিডেন্ট হিসেবে দেখতে চায়।
ডেমোক্র্যাট প্রার্থী কামালা হ্যারিস বলেন, ‘আপনাদের একটি জিনিস বলত চাই। আমার প্রচারণা সভাগুলোতে আসলে দেখতে পাবেন সেখানে নারী পুরুষের সমান অংশগ্রহণ রয়েছে। কার পরিচয় কি সেটা বাদ দিন। তারা শুধুই এটাই শুনতে আসে, তাদের ভবিষ্যৎ প্রেসিডেন্ট দ্রব্যমূল্য কমাতে কী পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছেন।’
আর সিএনএনের টাউনহলে, কামালা দাবি করেন, এই মুহূর্তে যুক্তরাষ্ট্রে মানুষ ইহুদি বিদ্বেষ বাড়তে থাকায় জনগণ শঙ্কিত। কারও মাথা ব্যথার কারণ, বিত্তবানদের ওপর কর বাড়ালে তার প্রভাব কেমন হবে। কেউ কেউ প্রেসিডেন্ট প্রার্থীর দুর্বলতা নিয়েও জানতে চায়। কিন্তু দলমত নির্বিশেষে প্রত্যেকেই জীবনযাপনের ব্যয় নিয়ে উদ্বিগ্ন। এই ইস্যুতে কোনো রাজনৈতিক বিভাজন নেই।
মধ্যবিত্ত শ্রেণির উন্নয়ন আর বেকারত্ব নিরসনে কামালা হ্যারিস যখন একের পর এক প্রতিশ্রুতি দিয়ে যাচ্ছেন তখন যুক্তরাষ্ট্রের শিল্প কারখানা সংশ্লিষ্ট খাত নিয়ে মাথা ঘামাচ্ছেন রিপাবলিকান প্রার্থী ডনাল্ড ট্রাম্প। অর্থদাতা ও বিজনেস আইকনদের সাথে নিয়ে বন্ধ থাকা কোম্পানিগুলো আবারও চালু করতে চান এই রিপাবলিকান প্রার্থী। তাই দিন শেষে কার পরিকল্পনার ওপর আস্থা রাখতে যাচ্ছেন মার্কিন ভোটাররা, তা জানতে অপেক্ষা করতে হবে আগামী ৬ নভেম্বর পর্যন্ত। কেননা সেদিনই জানা যাবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের চূড়ান্ত ফলাফল।